বাবা নেই। মা মুক ও বধির। তিনি স্বামীর সঙ্গে থাকেন না। বিড়ি বেঁধে একমাত্র মেয়ে ও নিজের পেটের ভাতের ব্যবস্থা করেন ওই মহিলা। এত কষ্টের মধ্যেও মহিলা তাঁর মেয়েকে স্কুলে পাঠাতে কসুর করেননি। মেয়ে সায়ন্তনী ভৌমিক লালগোলা এমএন অ্যাকাডেমির দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। অর্থাভাবে সায়ন্তনীর বই কেনা হয়নি। চাতক পাখির মতো সে তাকিয়ে রয়েছে কবে কন্যাশ্রীর টাকা মিলবে সে দিকে। দিন সাতেক আগে অন্য সহপাঠীরা কন্যাশ্রী প্রকল্পে ৭৫০ টাকা পেয়েছে। কিন্তু অভাবী সায়ন্তনীর কপালে কোনও কানাকড়ি জোটেনি। শুধু সায়ন্তনীই নয়, লালগোলা এমএন অ্যাকাডেমির দ্বাদশ শ্রেণির আরও ১৬ ছাত্রী কন্যাশ্রীর টাকা পায়নি। এ বছর টাকা না মেলায় ওই পড়ুয়ারা আদৌ কন্যাশ্রীর পুরো সুবিধা ভবিষ্যতে পাবেন কিনা, সে বিষয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। অর্থাৎ ১৮ বছরের পর ওই ছাত্রীদের ২৫ হাজার টাকা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই ছাত্রীদের কন্যাশ্রীর ফর্ম পূরণ ব্লক কার্যালয়ে পাঠাননি। আর তাতেই এই কাণ্ড ঘটেছে। ব্লক কার্যালয়ের এক আধিকারিকের দাবি, কেবল ওই ১৬ জনই নয়, লালগোলা ব্লকের নানা কারণে লালগোলা ব্লকের আরও অন্তত ১১টি স্কুলের শ’চারেক ছাত্রী কন্যাশ্রীর পুরো সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে চলেছে।
এমএন অ্যাকাডেমির প্রধান শিক্ষক সুব্রত চক্রবর্তী অবশ্য জানান, দিন চারেক আগে ওই ছাত্রীদের কন্যাশ্রীর ফর্ম ব্লক কার্যালয়ে জমা দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট আধিকারিক তাঁকে সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। লালগোলা ব্লক কার্যালয়ে কন্যাশ্রী প্রকল্পের দায়িত্বে রয়েছেন হাবিব শেখ। তিনি বলেন, ‘‘নানা ক্রুটির জন্য অনেক পড়ুয়া টাকা পায়নি। সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান-শিক্ষকদের বিষয়টি জানিয়েছি। অনেকেরই সমস্যা মিটেছে।’’ অবশ্য জেলা স্তরের এক আধিকারিকের সন্দেহ, ‘‘ওই পড়ুয়ারা টাকা নাও পেতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy