Advertisement
E-Paper

জমিতে হোঁচট খেয়ে নষ্ট সময়, কেউ কথা রাখবে?

বেশি আগের কথা নয়। কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি যেতে বাস থামত কৃষ্ণনগরে পথের পাশে সরভাজার দোকানে। যাত্রীরা আড়মোড়া ভেঙে নেমে চাখতেন, প্যাকেট করে নিয়েও যেতেন। এখন অধিকাংশ বেসরকারি বাস বা গাড়ি ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক এড়িয়ে যায়। তার একটা কারণ যদি রাস্তার সম্প্রসারণ না হওয়া হয়, বড় কারণ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবও। ভাঙা রাস্তায় ধোঁকে ট্র্যাফিক। দায় কার? খোঁজ নিচ্ছে আনন্দবাজার।জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের ভবিষ্যৎ কী? নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও কেন এত দেরি হচ্ছে?

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৮ ০২:২৫
এখন অধিকাংশ বেসরকারি বাস বা গাড়ি ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক এড়িয়ে যায়।

এখন অধিকাংশ বেসরকারি বাস বা গাড়ি ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক এড়িয়ে যায়।

জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের ভবিষ্যৎ কী? নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও কেন এত দেরি হচ্ছে?

জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ও নির্মাণ সংস্থার দাবি, জমি অধিগ্রহণে দেরি হওয়াতেই বিপত্তি। বারাসত থেকে কৃষ্ণনগর পর্যন্ত ‘প্যাকেজ ১’-এর দায়িত্বে থাকা নির্মাণ সংস্থা ‘মধুকন প্রজেক্ট লিমিটেড’ তো জমি পেতে দেরি হওয়ায় নির্মাণব্যয় বেড়ে গিয়েছে জানিয়েই মাঝপথে কাজ ছেড়েছিল। দেরি হওয়ায় মালপত্রের দামও বেড়ে তাদের বাজেট ছাপিয়ে গিয়েছিল।

জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরে তৎকালীন বিরোধী দল, বর্তমানে ক্ষমতাসীন তৃণমূল স্থানীয় জমিদাতাদের ‘ন্যায্য’ ক্ষতিপূরণের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিল। জমির দাম বাড়ানোর জন্য শুনানি হয়, মামলা গড়ায় আদালতে। অধিগৃহীত জমি দখল নিতে গিয়েও জমিদাতাদের বাধায় ফিরে আসতে হয় প্রশাসনকে। তাতে যে দেরি হয়েছে, তারই মাসুল গুনতে হয়েছে পরবর্তী পর্যায়ে।

এর মধ্যে রাস্তা সংস্কার হয়েছে একাধিক বার। কিন্তু সেই কাজ স্থায়ী হয়নি। এ বারও একাধিক পরিকল্পনা হয়েছে। কিন্তু বর্ষা না যাওয়া পর্যন্ত কাজ করা যাচ্ছে না। পূর্ত দফতরের (রাষ্ট্রীয় বিভাগ) জানিয়েছে, তারা দূর্গাপুজোর আগে রাস্তা সারাবে।

জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর, গোবিন্দপুরে সাতশো মিটার কংক্রিটের নর্দমার পাশাপাশি রাস্তাও দু’ফুট উঁচু করে ‘ম্যাসটিক বিটুমিনাস’ করার (কুচো পাথর বসানো রাস্তা) কাজ শুরু হবে। তাতে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে। সেই সঙ্গে কল্যাণী মোড় থেকে শিমুরালি পর্যন্ত এবং ভাতজাংলা থেকে বাহাদুরপুর পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের জন্য ছ’কোটি ৮০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এ ছাড়া রাজবেড়িয়া থেকে বাহাদুরপুর পর্যন্ত ৬৬ কিলোমিটার রাস্তায় গর্ত বোজাতে রাজ্য সরকার ১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা দিয়েছে।

কিন্তু এসব তো সাময়িক। স্থায়ী সমাধান করে বাহাদুরপুর থেকে রাজবেড়িয়া পর্যন্ত ফোরলেনের কাজ কবে থেকে শুরু হবে সেটাই জানতে চায় জেলার মানুষ। জেলা শাসক সুমিত গুপ্ত বলছেন, “জাতীয় সড়কের অবস্থা সত্যিই খুব বেহাল। এখনই সংস্কার করা প্রয়োজন। আমরা সমস্ত সংস্কারের বিষয় থেকে শুরু করে ফোরলেনের কাজ শুরু সংক্রান্ত প্রতিটি বিষয় নিয়ে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বারবার কথা বলছি। আশা করছি শিঘ্রই কাজটা শুরু হয়ে যাবে।”

জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, ৬৬ কিলোমিটার রাস্তা ফোর লেন করার জন্য ১৫১০ কোটি টাকার প্রকল্প করে কেন্দ্রের কাছে পাঠানো হয়েছে। ফেব্রুয়ারি থেকে তা দিল্লিতে তাদের প্রধান দফতরেই পড়ে আছে বলে জেলা প্রশাসনের দাবি। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের ‘কৃষ্ণনগর প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টেশন ইউনিট’-এর প্রকল্প অধিকর্তা সুগত সাহা বলেন, “আমরা প্রতিনিয়ত নয়াদিল্লিতে যোগাযোগ করছি। আশা করছি, কিছু দিনের মধ্যেই টাকার অনুমোদন পেয়ে যাব।”

কত বছর কেটে গেল, কেউ কি কথা রাখবে? শেষ পর্যন্ত?

34 NH National Highway জাতীয় সড়ক
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy