অধীর চৌধুরী। —ফাইল চিত্র।
পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনের ফলাফলে শুধু তেলঙ্গনা এসেছে কংগ্রেসের ঝুলিতে। বিজেপির এই জয়ের প্রভাব কি সামনের লোকসভা ভোটে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর ‘গড়’ বলে কথিত বহরমপুর আসনেও পড়তে পারে? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিজেপি বলছে, খাস বহরমপুর বিধানসভাই গেরুয়া শিবিরের হাতে, এ বার সংসদীয় আসনটিও তারাই পাবে। তবে কংগ্রেসের দাবি, বহরমপুর আসনে অধীর নিরাপদ। তিনি বহরমপুর সহ মুর্শিদাবাদে মাটি কামড়ে পড়ে রয়েছেন।
এ কথা ঠিক যে, এত দিন পর্যন্ত এ রাজ্যে অধীরের রাজনৈতিক কর্মসূচির সিংহভাগ বহরমপুর কেন্দ্রীক। ভারত জোড়ো যাত্রা ছাড়া জেলার বাইরে তাঁর তেমন ধারাবাহিক বড় কর্মসূচি চোখে পড়েনি। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনেও অধীর প্রধানত মুর্শিদাবাদেই ঘাঁটি গেড়ে পড়ে ছিলেন। এমনকি পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলীয় ইস্তেহার কলকাতার বদলে বহরমপুরে জেলা কংগ্রেস কার্যালয় থেকে তাঁকে প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে। এ ছাড়া দিল্লি থেকে এ রাজ্যে ফিরলেই নিজের সংসদীয় এলাকায় তাঁকে নানা জনসংযোগমূলক কর্মসূচি নিতে দেখা যায়। তা দেখে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, নিজের গড় সামাল দিতে অধীর দাঁত কামড়ে পড়ে রয়েছেন মুর্শিদাবাদে।
প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘আগামী লোকসভায় বহরমপুরে কী বিজেপির প্রার্থী অমিত শাহ না জেপি নড্ডা? যিনি বলছেন অধীর হারবেন, তাঁকে একটা কথা বলি, বড় হাতির সামনে ইঁদুরও জুডোর অনুশীলন করে বলে যে হাতির দেহে বড় আঘাত হানলাম। কিন্তু নেঙটি, নেঙটিই থাকে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘মুর্শিদাবাদ জেলায় অধীর চৌধুরী এক দিকে সাংসদ, অন্য দিকে জননেতা। মানুষের হৃদয়ের এত গভীরে তাঁর শিকড় যে তা উপড়ে ফেলা এখানকার কোনও দলের পক্ষে সম্ভব নয়।’’
বিজেপির বহরমপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শাখারভ সরকারের দাবি, ‘‘অধীরবাবুর প্রভাব কমছে। তাঁর গড় বহরমপুর বিধানসভাই দখল করেছি। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনেও তাঁর লোকসভা এলাকায় কংগ্রেসের থেকে আমাদের ফল ভাল হয়েছে। এ বার লোকসভা নির্বাচনে তাঁকে প্রাক্তন করেই ছাড়ব।’’
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এক সময়ের সতীর্থ তৃণমূলের অপূর্ব সরকারকে ৮০ হাজার ৬৯৬ ভোটে পরাজিত করেন অধীর। তবে অনেকেই বলছেন, সর্বভারতীয় স্তরে হওয়া বিজেপি বিরোধী ইন্ডিয়া জোট কী করবে সেটাও এই নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। অপূর্ব বলেন, ‘‘গত লোকসভা নির্বাচনে অধীর চৌধুরীর দেহ তুলে ধরেছিল বিজেপি আর সিপিএম। তাদের সঙ্গে অধীরবাবুর সম্পর্ক ভাল। ওই তিন দল ঠিক করুক, এ বার কে কার দেহ তুলে ধরবে। তবে এ বার বহরমপুর থেকে তৃণমূলের প্রার্থী জয়ী হবেন।’’ তিনি বলেন, ‘‘তবে জোট নিয়ে কথা বলা আমার অধিকারে পড়ে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy