Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
EID 2020

লকডাউনে ধাক্কার ইশারা ইদ-বাজারে

রবিবার রাতে জেলায় স্থানীয় ভাবে সম্পূর্ণ বাজার-দোকান বন্ধ রাখার প্রস্তাব নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন পুলিশ কর্তারা।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা 
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২০ ০৪:৫৬
Share: Save:

ইদের মুখে দোকান-বাজার বন্ধ রাখার প্রস্তাব নিয়ে জেলার ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন মুর্শিদাবাদের পুলিশ কর্তারা। আগামী মাসের গোড়ায়, ইদের পরে তা কার্যকর করতে রাজিও ছিলেন ব্যবসায়ীরা। তবে, সোমবার নবান্নে স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এ ব্যাপারে স্পষ্ট করে দিলেন— জেলায় যে সব জায়গায় কনটেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করা হয়েছিল, ৩১ জুলাই পর্যন্ত তা বলবৎ রাখার পাশাপাশি এখন থেকে রাজ্য জুড়ে প্রতি সপ্তাহে দু’দিন করে সম্পূর্ণ লকডাউন করা হবে। এ সপ্তাহে তা বৃহস্পতি এবং শনিবার। পরের সপ্তাহে প্রাথমিক ভাবে বুধবার লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।

রবিবার রাতে জেলায় স্থানীয় ভাবে সম্পূর্ণ বাজার-দোকান বন্ধ রাখার প্রস্তাব নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন পুলিশ কর্তারা। ইদুজ্জোহার পরে সেই বন্ধের পক্ষে মত-ও দিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। তার মধ্যেই সোমবার দুপুরের ওই ঘোষণা। মুর্শিদাবাদের মতো সংখ্যালঘু প্রভাবিত জেলায় যা ব্যবসায়ীদের কপালে যে কিঞ্চিৎ চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে, বলাই বাহুল্য। ব্যবসায়ীদের দাবি, আগামী ১ অগস্ট ইদুজ্জোহা। দীর্ঘ লকডাউনের পরে এই সময় ব্যবসায় কিছুটা হলেও আশার আলো পড়েছিল। কিন্তু তার আগেই, সপ্তাহে অন্তত দু’দিন লকডাউন ঘোষণা করায় সেই আশা ফের ধাক্কা খেতে বাধ্য।

মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অব কমার্সের যুগ্ম সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘লকডাউনের জেরে তিন মাস ধরে ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। তাই আমরা ইদুজ্জোহার পরে আংশিক দোকান বন্ধের প্রস্তাবে সায় দিয়েছিলাম।’’

তিনি বলেন, ‘‘কিন্তু ইদের আগে লকডাউন শুরু হওয়ায় ব্যবসা ফের মার খাবে। তবে বৃহত্তর স্বার্থে সরকারে এ ছাড়া কোনও উপায় নেই, আমরা তা মেনেও নেব।’’

মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার বলেন, ‘‘আপাতত এ সপ্তাহ বৃস্পতিবার ও শনিবার এবং পরের সপ্তাহে বুধবার সম্পূর্ণ লকডাউনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশ অমান্য করলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’

স্বাস্থ্যভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের বেশ কিছু জায়গায় গোষ্ঠী সংক্রমণের ছায়া ফেলছে কোভিড। এ দিন স্বরাষ্ট্র সচিবের কথাতেও তার ইশারা মিলেছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হু-এর পরামর্শ মেনেই আপাতত সপ্তাহে দু’দিনের এই লকডাউন।

গোষ্ঠী সংক্রমণের ধাবাহিকতা ক্ষুন্ন করতে একটা নির্দিষ্ট সময়ে পরে পারস্পারিক নৈকট্য বন্ধ রাখতে অর্থাৎ মানুষের পারস্পারিক মেলামেশার জায়গাগুলি বন্ধ রাখা প্রয়োজন। সে কারণেই বাজার-দোকান, গণপরিবহণ, জনসমাবেশ বন্ধ রেখে মেলামেশার সুযোগ ছিন্ন করতে হয় বলে নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে। সেই সূত্রেই সপ্তাহে দু’দিনের পূর্ণ লকডাউনের সিদ্ধান্ত। স্বাস্থ্য দফতরের আশা, এর ফলে গোষ্ঠী সংক্রমণকে ঠেকানো সম্ভব।

জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, অন্য জেলার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মুর্শিদাবাদে গত কয়েক দিন ধরে করোনার প্রকোপ বাড়ছে। সতর্কবিধির ফাঁক গলে প্রতি দিন বহু লোক নিজের নিয়মে চলছেন। ফলে পুলিশ থেকে স্বাস্থ্যকর্মী— করোনা আক্রান্তের বিরাম নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

EID 2020 Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE