বেলডাঙা পুরসভা এলাকার দুটো বিদ্যালয়। একটি উচ্চমাধ্যমিক অন্যটি প্রাথমিক। একটি স্কুলের দাবি, অন্য স্কুল নিয়ম না মেনে তাদের জায়গায় মিড ডে মিল খাওয়ানোর জায়গা ও রান্না ঘর করেছে। অভিযোগ মানতে নারাজ প্রাথমিক বিদ্যালয়।
তবে এই বিবাদের মাঝে পড়াশুনো বিঘ্ন ঘটছে বলে দাবি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। বেলডাঙা পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে গা লাগানো দুটো বিদ্যালয়। বেলডাঙা হরিমতি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ও হরিমতি বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়।
অভিযোগ প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নিয়ম না মেনে তাদের মিড ডে মিল খাওয়ানো ও রান্না ঘরের কাঠামো তৈরি করেছে দাবি পাশের বিদ্যালয়ের। এই নিয়ে পুলিশের কাছে লিখিত অবেদনও জানিয়েছে উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়। কিন্তু সেই বিবাদ না মেটার আগেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা দাবি করছেন উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের ছাত্রীরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যেখানে ক্লাস হচ্ছে সেখানে এসে তারা কখনও স্কুলের ড্রাম বাজাচ্ছে, কখনও শরীর শিক্ষার ক্লাস করছে ছাত্রীরা। এতে বিঘ্ন ঘটছে ছোট ছোট ছাত্রীদের পড়াশোনায়।
হরিমতি বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় হালদার বলেন, “আমরা আমাদের কাছে থাকা রেজলিউশন মেনে নির্মাণ কাজ করেছি। আমাদের পর্যাপ্ত ক্লাস করার জায়গা নেই। সেখানে ছাত্রীদের ক্লাসও হয়। সেটা প্রশাসনকে জানিয়েছি। আমাদের স্কুল ফান্ডে প্রায় তিন লক্ষ টাকার কিছু কম টাকা ছিল। সেই টাকার সঙ্গে অতিরিক্ত কিছু টাকা ব্যয় করে ওই কাজ হয়েছে। শিশুরা খোলা জায়গায় মিড ডে মিল খাচ্ছিল। সে ভাল লাগছিল না। আবার সেখানে ক্লাসও হচ্ছে। ” তাঁর দাবি, “তবে সম্প্রতি আমাদের ওই ক্লাসের পাশে এসে পাশের স্কুলের ছাত্রীরা খেলাধুলো, শরীর চর্চার মতো ক্লাস করছে। ডাম্বেল ব্যবহার করছে। সেখানে অনেক শব্দ হচ্ছে। আমাদের স্কুলের ছোট ছাত্রীরা মনসংযোগ রাখতে পারছে না। তারা ২৬ জানুয়ারির আগে এই জায়গায় ড্রাম বাজিয়েছে।”
এর উত্তরে বেলডাঙা হরিমতি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা নমিতারানি দাস সেন বলেন, “প্রাথমিক বিদ্যালয় আমাদের স্কুলের জায়গায় বেআইনি ভাবে নির্মাণ করেছে। সেটা পুলিশ প্রশাসনকে জানান হয়েছে। আমাদের স্কুল থেকে আমাদের ওই জায়গায় গত ২০১৪ সালের আগে নির্মাণ করতে যাওয়া হয়েছিল। ওদের স্কুল থেকে বাধা আসে। নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে এসেও আমরা সেই কাজ করতে পারিনি। সেখানে প্রাথমিক বিদ্যালয় জোর করে সেই কাজ করল।” প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়াশুনোর বিঘ্ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমাদের স্কুলের জায়গায় ক্লাস হচ্ছে। আমাদের স্কুলে অনেক ছাত্রী। সেখানে ক্লাস করানোর জন্য ওখানে নিয়ে যাওয়া হয়। এতে তো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।”
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘সত্যিই পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটছে কি না, সেটা দেখতে হবে। প্রয়োজনে দুটো স্কুলকে মুখোমুখি বসিয়ে আলোচনা করাতে হবে।"
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)