Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
dead bodies

Crematorium: কে কাকে পোড়ায়, কেউ এসে দেখে না

এই শ্মশানে কোনও কর্মী নেই। যাঁরা মৃতদেহ নিয়ে আসেন, তাঁরাই পোড়ানোর ব্যবস্থা করেন। কে, কখন, কাকে, কী ভাবে পুড়িয়ে দিচ্ছে কেউ জানতে চান না।

সেই শ্মশানঘাট। শনিবার।

সেই শ্মশানঘাট। শনিবার। নিজস্ব চিত্র।

অমিত মণ্ডল
হরিণঘাটা শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২২ ০৭:৪৮
Share: Save:

বিরহী ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর রাজাপুর গ্রাম। গ্রামের পাশ দিয়েই চলে গিয়েছে যমুনা খাল। খালের গা ঘেঁষেই পূর্ব পাড়ে ছোট্ট শ্মশান। শ্মশানের জায়গাটা একটু নিচু। ওই পাড়ে অপেক্ষাকৃত উঁচু জায়গায় রয়েছে খালপাড়া বসতি। এই শ্মশানে কোনও কর্মী নেই। যাঁরা মৃতদেহ নিয়ে আসেন, তাঁরাই পোড়ানোর ব্যবস্থা করেন। কে, কখন, কাকে, কী ভাবে পুড়িয়ে দিচ্ছে কেউ জানতে চান না। কোনও কাগজপত্রও দেখানোর তো প্রশ্নই নেই। যদি কেউ কাউকে খুন করে গোপনে, চুপিসারে পোড়াতে আসে তা হলে নির্ভয়ে, নিশ্চিন্তে তা করতে পারে বলে জানায় এলাকার বাসিন্দারাই।

স্থানীয় কিছু যুবক বলেন, ‘‘গ্রামেরই কয়েক জনের একটা শ্মশান কমিটি রয়েছে নাম কা ওয়াস্তে। আসলে যাঁদের মড়া তাঁদের সব ব্যবস্থা করতে হয়। কমিটি থেকে শুধু চিতায় আগুন লাগানোর ব্যবস্থা হয়।’’ পোড়ানোর পর কোনও কাগজ বা রসিদ দেয়? উত্তর এল, ‘‘ও সব এখানে পাওয়া যায় না। পোড়াতে কোনও কাগজ দেখাতে হয় না। পঞ্চায়েতকে বললেই সব ব্যবস্থা করে দেয়। যাঁদের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ তাঁরাই এখানে বেশি আসেন।’’

স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, শ্মশানে ডেথ সার্টিফিকেট দেখার বা রসিদ দেওয়ার কোনও ব্যবস্থা বা পরিকাঠামো নেই। স্থানীয় পঞ্চায়েতের সদস্যা যমুনা ঘোষ বলেন, “এখানে আমরা বার্নিং সার্টিফিকেট এখনও দিতে পারছি না। অনুমোদন পাইনি। যাঁরা দাহ করাতে চান তাঁরা একটা দরখস্ত করেন। সেখানে কোন তারিখে মারা গিয়েছে, কারা-কারা উপস্থিত ছিলেন, এবং ডাক্তারের সার্টিফিকেট থাকে। পঞ্চায়েতে সেটা জমা দেয়।” ওই শ্মশানে কে, কখন, কাকে পুড়িয়ে যাচ্ছে, তার নজরদারি কে রাখছে, তার কোনও সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি। শুধু বলেন, “আমি শুধু মেম্বার হিসাবে একটা কাগজ দিতে পারি। আমাদের গ্রামের কমিটিই সব দেখাশোনা করে।”

বিরহী ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অনীতা টিকাদার বলেন, “ওই শ্মশানে দাহ করা হয়, এটাই আমি সঠিক জানি না। ওই শ্মশান চালু আছে এ রকম খবর তো আমাদের কাছে নেই!” পরে তিনি বলেন, “আমি আজকে খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম, বাইরে থেকে কোনও মৃতদেহ ওই শ্মশানে আসে না। গ্রামের গরিব লোকেরা ওখানে দাহ করেন।” তিনি আরও বলেন, “ওদের গ্রামের কমিটির ৮-১০ জন সই করে হেলথ সেন্টারে দাহ করার কথা জানান। হেলথ সেন্টারের রিপোর্ট ২১ দিনের মধ্যে আমাদের কাছে আসে। সেই সঙ্গে রেশন কার্ড-সহ অন্য কাগজ সারেন্ডার করে। তার পর মৃত্যু শংসাপত্র দেওয়া হয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

dead bodies Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE