Advertisement
E-Paper

ফরাক্কায় ফের ডেঙ্গির ভ্রুকুটি

শমসেরগঞ্জে অবশ্য আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র চার, যা গতবছর ছিল ২৪৩।  জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলছেন, ‘‘মুর্শিদাবাদ জেলায় এ পর্যন্ত ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩৯। ফরাক্কায় এলাকাতেও অনেকের রক্তে ডেঙ্গির ভাইরাস মিলেছে। তিনি জানান, গতবছর আগাম প্রস্তুতি না থাকায় জেলায় ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল প্রায় ১২০০। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল শমসেরগঞ্জে। এ বার তা হলে সেই প্রস্তুতি নেওয়া গেল না কেন?

বিমান হাজরা

শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৮ ০১:৪৯
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

গত বছর কপালে ভাঁজ ফেলছিল শমসেরগঞ্জ, এ বার ফরাক্কা।

বছরের শুরুতেই ফরাক্কার অর্জুনপুর পঞ্চায়েতে ২৩ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের হদিশ মিলল। গত বছর ফরাক্কায় ৪৯ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েছিল। তার মধ্যে শিবনগরেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১৮ জন, কুলিগ্রামে ১২ জন। এ বার আক্রান্তদের বেশির ভাগই সেই কুলিগ্রামের বাসিন্দা।

শমসেরগঞ্জে অবশ্য আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র চার, যা গতবছর ছিল ২৪৩। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলছেন, ‘‘মুর্শিদাবাদ জেলায় এ পর্যন্ত ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩৯। ফরাক্কায় এলাকাতেও অনেকের রক্তে ডেঙ্গির ভাইরাস মিলেছে। তিনি জানান, গতবছর আগাম প্রস্তুতি না থাকায় জেলায় ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল প্রায় ১২০০। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল শমসেরগঞ্জে। এ বার তা হলে সেই প্রস্তুতি নেওয়া গেল না কেন?

প্রশান্তবাবু বলছেন, ‘‘গত বছর আমি দায়িত্বে ছিলাম না। এ বার প্রথম থেকেই সতর্ক ছিল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। হয়ত তাই গতবারহ যে সংখ্যক মানুষ ডেঙ্গিতে কাবু হয়েছিলেন এ বার এখন পর্যন্ত তার দুই তৃতীয়াংশও হননি।’’

তবে এ ব্যাপারে স্বস্তি পাওয়ার কিছু নেই বলেই মনে করছেন প্রশান্তবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘এতে স্বস্তি পাওয়ার কিছু নেই। আগামী দু’মাস যথেষ্ট সতর্ক থাকা দরকার। কারণ এই সময়টাতেই ডেঙ্গির সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে সবচেয়ে বেশি।’’

তিনি জানান, ডেঙ্গি নিয়ে এ বারে আগে থেকে ব্যাপক সতর্কতা নেওয়া হয়েছে গোটা জেলা জুড়েই। সকলকেই সরকারি পরীক্ষাগারে রক্ত পরীক্ষা করতে বলা হয়েছে। দু’দিন আগেই ফরাক্কার ওই সব এলাকা ঘুরে এসেছেন স্বাস্থ্য দফতরের শীর্য কর্তারা। বেলডাঙ্গা সহ জেলার অন্যান্য এলাকায় এখনও পর্যন্ত ২-৪ জনের ডেঙ্গির খবর মিলেছে।

গত বছরও ফরাক্কার শিবনগর ও কুলিগ্রামে জ্বরের প্রকোপ ছিল খুব বেশি। অনেকের রক্তেই ধরা পড়ে ডেঙ্গি। অজানা জ্বরে দু’জনের মৃত্যুও হয়েছিল। ফলে আতঙ্ক দেখা দিলে ভয় কাটাতে স্বাস্থ্য দফতরের লোকজনকে গ্রামে নিয়ে গিয়ে বাড়ি বাড়ি রক্ত সংগ্রহ করে প্রচারে নামতে হয় ব্লকের বিডিও এবং পুলিশকেও। এমনকি নর্দমার জমে থাকা আবর্জনার পাঁক সাফাইয়ে নিজেই নেমে পড়তে হয়েছিল ফরাক্কার বিডিও কেশাঙ ধেনডুপ ভুটিয়াকে।

বিডিওকে নর্দমা সাফাই করতে দেখে লজ্জায় পড়ে এগিয়ে এসেছিলেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা। সেই শিবনগরে অবশ্য একটিও ডেঙ্গি ধরা পড়েনি এখনও। ধুলিয়ান শহরেও জ্বরের প্রকোপ মহামারী আকার নিয়েছিল। ডেঙ্গির আতঙ্ক কাটাতে পথে নামে কন্যাশ্রীরাও। শুরু হয় মসজিদগুলিতে মাইকে ইমামদের এলাকা পরিস্কার রাখার প্রচার।

ফরাক্কার কিছু এলাকা যে ডেঙ্গি প্রবণ, তা মানছেন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সজল পন্ডিত। তিনি জানান, অনুপনগর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে একটি সরকারি পরীক্ষাগারে প্লেটলেট পরীক্ষার পরই ২৩ জনের রক্তে ডেঙ্গি মিলেছে। তবে আপাতত তারা ভাল আছেন। প্রতিটি পঞ্চায়েতে ১০ জন করে কর্মী বাড়ি বাড়ি ঘুরে জ্বরের তথ্য নিচ্ছেন। এ ছাড়াও ভেকটর টিম বা পতঙ্গবিদেরাও ঘুরছেন এলাকায়। তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জ্বর থাকলেই রোগীর রক্ত পরীক্ষা করার ব্যবস্থা নিতে হবে শমসেরগঞ্জের সরকারি ল্যাবে।

শমসেরগঞ্জের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক গোলাব হোসেন বলেন, “জ্বরের প্রকোপ এবার অনেকটাই কম। এ পর্যন্ত ৪ জনের রক্তে ডেঙ্গি পাওয়া গিয়েছে। জ্বরে আক্রান্তদের বলা হচ্ছে সরকারি ল্যাবে এসেই বিনা পয়সায় রক্ত পরীক্ষা করাতে। সেরকম বুঝলে স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকেই বহরমপুরে মেডিক্যাল কলেজে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।”

Dengue Patient Farakka
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy