ধুবুলিয়ায় জনসভা। নিজস্ব চিত্র
মাত্র চব্বিশ ঘণ্টার নোটিশে শনিবার ধুবুলিয়ায় বিজেপি রাজ্য সভাপতির সভার আয়োজন! মুখে একে বিজেপি গণতন্ত্র বাঁচাও কর্মসূচি-র প্রচার ও প্রস্তুতি সভা বললেও রাজনৈতিক মহলে কানাঘুষো হল, পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের সাম্প্রতিক ভরাডুবির ধাক্কায় বিধ্বস্ত কর্মী-সমর্থকদের ‘ভোকাল টনিক’-এ চাঙ্গা করতে মরিয়া বিজেপি।
নদিয়ায় গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলে বিজেপির দাপট কপালে ভাঁজ ফেলেছিল তৃণমূল নেতৃত্বের। বিজেপির পায়ের নীচে জমি শক্ত হওয়ার আঁচ পেয়ে একাধিক বার নদিয়ায় ছুটে যেতে হয়েছে তৃণমূল মহাসচিব তথা নদিয়া জেলার পর্যবেক্ষক পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। দলের এই টালমাটাল সময়ে নদিয়ার সেই তৈরি জমি ধসে যাক, তা কোনওমতেই চাইছে না বিজেপি নেতৃত্ব। তার উপর তাঁদের চিন্তা দ্বিগুণ হয়েছে দলত্যাগের হিড়িকে। পঞ্চায়েতে জয়ী বিজেপি প্রার্থীদের অনেকেই পর পর দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। বিজেপি যে ফুরিয়ে যায়নি, এমন একটা আশ্বাস তাঁদের দিয়ে দলভাঙা ঠেকানোয় এখন বিজেপি নেতৃত্বের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।
তাই হয়তো এ দিন ধুবুলিয়ার সভা থেকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ দিলীপ দাবী করলেন, “ নদিয়াতে তিন জন বিজেপি থেকে তৃণমূলে গিয়েছেন বলে কেউ কেউ বলছেন। তাঁরা জেনে রাখুন, উল্টো দিক থেকে সাতাশ জন আমাদের দলে এসেছেন তৃণমূল থেকে। আরও আসবে। এখন তৃণমূলে যাওয়ার দিন শেষ, আসার দিন শুরু হয়েছে। অনেক নেতা-মন্ত্রী যোগাযোগ রাখছেন। দু’মাস দেখুন। যাত্রাটা ঠিকঠাক শেষ করি, পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির চেহারাটা পাল্টে যাবে।”
যা শুনে তৃণমূলের নদিয়া জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত বলেছেন, “সাতাশ দরকার নেই, উনি শুধু এক জনের নাম বলুন যিনি পঞ্চায়েত ভোটে জেতার পর বিজেপিতে এসেছেন তৃণমূল ছেড়ে।” বিজেপির এ দিনের সভাকে কোন গুরুত্বই দিতে চাননি গৌরীবাবু। বলেছেন, “ দিলীপ ঘোষকে নিয়ে ভাবার সময় নেই।”
ধুবুলিয়ার দেশবন্ধু পার্কে সভা করতে চেয়েও অনুমতি না-পাওয়ার বিষয়টি তুলে এ দিন বক্তৃতার প্রথম থেকেই আক্রমণ শুরু করেন দিলীপ বাবু। ঘোষণা করেন, এ বার থেকে বিনা অনুমতিতেই রাজ্যের সর্বত্র বিজেপি সভা করবে। এবং সে কাজ নদিয়া থেকেই শুরু হবে। এর পরেই শুরু হয় কর্মী-সমর্থকদের উজ্জীবিত করার পালা। পাঁচ রাজ্যের ফলে উদ্বিগ্ন হওয়ার যে কিছু নেই, সেই কথাই ঘুরেফিরে আসতে থাকে দিলীপ ঘোষের বক্তৃতায়। বলেন, ‘‘এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উল্লসিত হওয়ার কোন কারন নেই। কারণ, প্রকৃত গণতন্ত্র ওই সব রাজ্যে আছে বলেই বিনা রক্তপাতে ভোট হয়েছে, মানুষের রায় মাথা পেতে নিয়েছি আমরা। কিন্তু বিজেপি কর্মীরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এই রাজ্যে স্বৈরতন্ত্রী তৃণমূলকে পরাস্ত করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে। তাই গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রার আয়োজন।’’ বিজেপির নদিয়া উত্তর জেলা সভাপতি মহাদেব ঘোষও এ দিন দাবি করেন, “গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রার গুরুত্ব বোঝাতে এবং প্রতি বুথ থেকে ওই যাত্রায় যাতে কর্মীরা অংশ নেন সে কথা বলতে এসেছিলেন রাজ্য সভাপতি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy