Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

পাশ করে আবার জিএস বগুলায়

প্রায় তিন বছর ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) থাকার পরে ২০১৫ সালের অগস্টে পাস কোর্সে বিএ পাশ করেছিলেন রনি দত্ত। ২০১৬ সালের জুন-জলাই মাসে তিনি ফের ওই কলেজেই বিএ পাস কোর্সে প্রথম বর্ষে ভর্তি হন।

রনি দত্ত। নিজস্ব চিত্র

রনি দত্ত। নিজস্ব চিত্র

সুস্মিত হালদার
হাঁসখালি শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৭ ০১:৪৪
Share: Save:

ছাত্রনেতাদের কলেজে পড়ে থাকা চলবে না বলে বার্তা দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাতে যে কিছু যায়-আসে না, তার প্রমাণ নদিয়ার বগুলা শ্রীকৃষ্ণ কলেজ।

প্রায় তিন বছর ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) থাকার পরে ২০১৫ সালের অগস্টে পাস কোর্সে বিএ পাশ করেছিলেন রনি দত্ত। ২০১৬ সালের জুন-জলাই মাসে তিনি ফের ওই কলেজেই বিএ পাস কোর্সে প্রথম বর্ষে ভর্তি হন। দ্বিতীয় বারেও কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁর রেজিস্ট্রেশন হয়ে গিয়েছে। জানুয়ারিতে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পরে ফের তিনি জিএস হয়েছেন।

কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেবাংশু রায় বলেন, “যত দূর জানি, কোনও ছাত্র বা ছাত্রী একই কলেজ থেকে দু’বার বিএ পড়তে পারে না। দু’বার রেজিস্ট্রেশনও হতে পারে না।”

বুধবারই নদিয়ায় কর্মিসভা করতে এসেছিলেন পার্থবাবু বিষয়টি শুনে বলেন, “আমি তো বলেই দিয়েছি, কোথাও এ সব চলবে না। দু’বছরের বেশি কেউ জিএস থাকতে পারবে না। এই কলেজও তার ব্যতিক্রম নয়।” মন্ত্রী যখন এই কথা বলছেন, তখন রনি ফের কলেজে ঢুকে জিএস বনে গেলেন কী করে?

এক সময়ে বগুলার দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা দুলাল বিশ্বাস ঘনিষ্ঠ ছিলেন রনি। কেউ তাঁকে ঘাঁটাতে সাহস পেত না। দুলাল খুন হওয়ার পরে এখন তিনি রানাঘাট (উত্তর-পূর্ব) কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক সমীর পোদ্দারের কাছে ঘেঁষেছেন। এবং সমীরবাবুই বগুলা শ্রীকৃষ্ণ কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি। তবে শুধু তিনি নন, শিক্ষাকর্মীদের একাংশ রনির কলেজে ফেরার পিছনে রয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাদের সন্দেহ। এক কর্তার কথায়, “ও তো কোনও সাধারণ ছাত্র নয় যে দ্বিতীয় বার ফর্ম ফিলাপের সময় সকলের চোখ এড়িয়ে গিয়েছে!’’ রেজিস্ট্রার বলেন, “এটা কলেজ কর্তৃপক্ষের পক্ষে ধরা সহজ। দায়িত্বও তাঁদেরই।”

কেন? বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাখ্যা, রেজিস্ট্রেশন ফর্মে ছাত্রের ছবি থাকে। সই করতে হয় অধ্যক্ষকে। সে ক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষাকর্মী ও অধ্যক্ষ কেন ধরতে পারলেন না, তার গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা মিলছে না। অধ্যক্ষ সুখদেব ঘোষ সদুত্তর দিতে পারেননি। ফোনে তিনি শুধু বলেন, “ব্যক্তিগত কারণে চেন্নাইয়ে আছি। এখনই এ সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারব না।” রনি দাবি করছেন, “যা করেছি, তা আইন মেনেই করেছি।” বিধায়কও বলেন, “বললেই তো হবে না, প্রমাণ করতে হবে যে বেআইনি ভাবে ভর্তি হয়েছে রনি।” কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় ওই কলেজের কাছে গোটা বিষয়টি জানতে চেয়েছে। উপাচার্য শঙ্করকুমার ঘোষ বলেন, “কলেজ রিপোর্ট পাঠালেই আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE