পরিকাঠামোর খামতি চাপা দিতেই তাঁদের বলির পাঁঠা করা হচ্ছে বলে মনে করছেন ডাক্তারদের একাংশ।
মুর্শিদাবাদে হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে বুধ ও বৃহস্পতিবার মিলিয়ে দশ জন চিকিৎসককে শো-কজ করেছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব। বৃহস্পতিবারই নদিয়ায় স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ সমিতির বর্ধিত সভায় চিকিৎসকদের কাঠগড়ায় তোলেন বিধায়কেরা। কিন্তু আসল সমস্যার সমাধান না করে এ ভাবে তাঁদের দায়ী করে কোনও লাভ নেই বলে মনে করছেন ডাক্তারেরা।
মুর্শিদাবাদে এক ধাক্কায় দশ জন চিকিৎসককে শো-কজ করার নির্দেশে স্তম্ভিত চিকিৎসক মহল। যদিও কোপ পড়ার আশঙ্কায় প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলছেন না। তাঁদের বক্তব্য, পর্যাপ্ত পরিমাণে চিকিৎসক-নার্স-গ্রুপ ডি কর্মী নেই। যক্ষা রোগ নির্মূল কর্মসূচি থেকে টিকাকরণ প্রকল্প তাঁদের পালন করতে হয়। প্রসূতি ও শিশুমৃত্যুর হার কমানতে চিকিৎসা পরিকাঠামোতেও ঘাটতি রয়েছে। তা আড়াল করতেই এই ‘লোক দেখানো’ শো-কজ।
এক ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের আক্ষেপ, ‘‘ডাক্তারের অভাবে আমায় প্রশাসনের পাশাপাশি রোগী দেখতে হচ্ছে। ভুল-ত্রুটি হলে শো-কজ। চিকিৎসক নিয়োগ না করে ডাক্তারদের দিয়ে বেশি কাজ করিয়ে নেওয়ার প্রবণতা কাজ করছে স্বাস্থ্যকর্তাদের মধ্যে।’’ তিন বছরের চুক্তি শেষ হলেই তিনি যেখানে সুযোগ পাবেন চলে যাবেন বলে হুমকি দিয়েছেন তিনি।
মুর্শিদাবাদের মহকুমা হাসপাতালে ৮৭ জন এবং প্রাথমিক, ব্লক প্রাথমিক, গ্রামীণ হাসপাতালে ৫৫ জন মিলিয়ে ১৪২ জন চিকিৎসকের ঘাটতি আছে। ফলে যে চিকিৎসকেরা আছেন, তাঁদের উপরে চাপ পড়ছে। কর্তাদের মতে, এর মধ্যে বেশ কিছু ডাক্তার নিয়ম মেনে ডিউটি করছেন না। ফলে পরিস্থিতি ঘোরালো হচ্ছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিরুপম বিশ্বাস বলেন, ‘‘কাজের জন্য চাপ দেওয়ায় এক শ্রেণির চিকিৎসকের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। কম কাজ করে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছেন ওঁরা। এখন বেশি কাজ করতে বললে অসন্তুষ্ট তো হবেনই।’’
নদিয়াতেও কিন্তু চিকিৎসকেরা বলছেন, পরিষেবা দেওয়ার উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই। শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের এক চিকিৎসকের মতে, ‘‘পরিকাঠামোর ঘাটতি থেকে দৃষ্টি ঘোরাতেই চিকিৎসকদের দায়ী করা হচ্ছে। এক শ্রেণির চিকিৎসকের ত্রুটি রয়েছে। তেমনই কিছু চিকিৎসক প্রাণপাত করছেন। সমালোচনার সময় সবাইকে এক জায়গায় দাঁড় করানো হচ্ছে। জেলায় দেড়শো চিকিৎসকের ঘাটতি রয়েছে। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় বলেন, ‘‘যা হাতে আছে তা নিয়েই সুষ্ঠু পরিষেবা দিতে সব রকম চেষ্টা হচ্ছে।’’
যাঁরা অসন্তোষ প্রকাশ করছেন, তাঁদের হুঁশিয়ারও করা হচ্ছে। মুর্শিদাবাদের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘১০ শতাংশ চিকিৎসক চলে গেলে কিছু এসে-যাবে না। পরিকাঠামোর ঘাটতি আগেও ছিল, পরেও থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy