E-Paper

মুকুলে যথেচ্ছ কীটনাশকে মরছে মৌমাছি, ক্ষতি আমেই

আমের মুকুলে পরাগমিলন ব্যাহত হবে। এর ফলে, আখেরে আমের ফলন কমতে পারে বলে মত পরিবেশ কর্মীদের। একই দাবি উদ্যানপালন বিশেষজ্ঞদেরও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২৫ ০৭:৫৬
মুকুলে ভরেছে আম গাছ। বহরমপুর।

মুকুলে ভরেছে আম গাছ। বহরমপুর। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।

মুকুলে ছেয়েছে আম গাছ। আমের মুকুলে রোগ, পোকার আক্রমণ ঠেকাতে গাছে, মুকুলে রাসায়নিক কীটনাশক, ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করছেন বাগান মালিক, আমচাষিরা। পরিবেশ কর্মীদের একাংশের দাবি, আমের গাছে বা আমের মুকুলে যথেচ্ছ ভাবে এই রাসায়নিক কীটনাশক প্রয়োগ করার ফলে মারা যাচ্ছে ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি।

পরিবশ কর্মীদের দাবি, এর ফলে এক দিকে যেমন পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে, মৌপালকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তেমনই উল্টো দিকে নিজেদের অজান্তেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বাগান মালিক বা আম চাষিরা। পরিবেশ কর্মীদের একাংশের দাবি, আমের মুকুলে কীটনাশক প্রয়োগের ফলে মৌমাছি-সহ অন্য উপকারী পোকামাকড় মারা যেতে পারে। ফলে আমের মুকুলে পরাগমিলন ব্যাহত হবে। এর ফলে, আখেরে আমের ফলন কমতে পারে বলে মত পরিবেশ কর্মীদের। একই দাবি উদ্যানপালন বিশেষজ্ঞদেরও।

পরিবেশ কর্মী অর্ধেন্দু বিশ্বাস বলেন, ‘‘মৌমাছি আদতে পরাগ সংযোগকারী। আমের মুকুলে বা আম গাছে রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার করলে মৌমাছি মারা যাওয়ার ফলে আমের মুকুলের পরাগায়ন ব্যাহত হবে। বিভিন্ন জায়গায় নির্বিচারে কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে। এর ফলে মৌমাছি মারা যাওয়ায় মৌপালকেরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। নির্বিচারে রাসায়নিক কীটনাশক প্রয়োগের ফলে পক্ষান্তরে আম-সহ অন্য ফসলের ফলন কমতে পারে। এ বিষয়ে বাগান মালিক বা চাষিদের সচেতন হওয়াটা জরুরি।’’

প্রতি বছর শীতের মাঝামাঝি সময়ে খেতে সর্ষে ফুল ফুটলে দুই ২৪ পরগনা সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে হাজির হন মৌপালকেরা। এমনই এক জন মৌপালক রাকেশ শরিফ বলেন, ‘‘এখন ফুল বলতে মূলত আমের ফুল। অন্য বেশ কিছু প্রাকৃতিক ফুল রয়েছে। কিন্তু আমের মুকুলে কীটনাশক প্রয়োগের ফলে মৌমাছি মারা যাচ্ছে। তাতে আমাদের ক্ষতি হচ্ছে।"

বিশেষজ্ঞদের মতে, মৌমাছি সাধারণত মধু সংগ্রহের জন্য বের হয় সকাল আটটার পর। ফলে গাছে কীটনাশক প্রয়োগ করলে তা সকালে সাতটার আগে বা বিকেল চারটের পরে প্রয়োগ করার পরামর্শ দিচ্ছেন উদ্যানপালন বিশেষজ্ঞরা। সারগাছি ধান্যগঙ্গা কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের উদ্যানপালন দফতরের বিষয়বস্তু বিশেষজ্ঞ চন্দা সাহা পারিয়া বলেন, ‘‘আম গাছ কীটনাশক প্রয়োগ করলে মৌমাছি বা অন্য উপকারী পোকা মারা গিয়ে পরাগায়ন ব্যাহত হতে পারে। আমের মুকুলের গুটি মুসুর দানার মতো না হওয়ার আগে পর্যন্ত কীটনাশক প্রয়োগ করতে আমরা নিষেধ করি। তা ছাড়া, খুব সকালের দিকে অথবা বিকেলের পরে চাষিরা প্রয়োজনে কীটনাশক প্রয়োগ করতে পারেন। চাষিদের আমরা সচেতন করছি।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Berhampore

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy