Advertisement
E-Paper

ডিজে-র আওয়াজ কমাতে বলায় জুটল মার

ওই পুজো কমিটি পাল্টা অভিযোগ জানিয়ে বলেছেন, সোমবার রাতে পরিবেশকর্মীরা তাদের বক্স ভাঙচুর না করলে বিষয়টি এত বাড়ত না। তার আগেই মিটমাট করা যেত। তাদের আরও অভিযোগ, শুধু বক্স ভাঙা নয়, ওই পরিবেশকর্মীরা পুজো কমিটির কয়েক জনকে মারেন। তাতেই পরিস্থিতি তেতে ওঠে। 

সম্রাট চন্দ

শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:৫৬
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে প্রহৃত পরিবেশ কর্মী সঞ্জিত কাষ্ঠ। মঙ্গলবার। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে প্রহৃত পরিবেশ কর্মী সঞ্জিত কাষ্ঠ। মঙ্গলবার। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য

কার্তিক পুজোর শোভাযাত্রায় তারস্বরে বাজতে থাকা ডিজে বক্স নিয়ে হুলস্থুল। কান ফাটানো সেই আওয়াজ কমাতে বলায় রাস্তায় ফেলে এক পরিবেশকর্মীকে বেধড়ক মারের অভিযো‌গ উঠেছে এক পুজো কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে। সঞ্জিত কাষ্ঠ নামে ওই পরিবেশকর্মীকে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর সঙ্গী আরও দুই পরিবেশকর্মী প্রদ্যুৎ মহলদার, অনুপম সাহাও আহত হয়েছেন।

যদিও ওই পুজো কমিটি পাল্টা অভিযোগ জানিয়ে বলেছেন, সোমবার রাতে পরিবেশকর্মীরা তাদের বক্স ভাঙচুর না করলে বিষয়টি এত বাড়ত না। তার আগেই মিটমাট করা যেত। তাদের আরও অভিযোগ, শুধু বক্স ভাঙা নয়, ওই পরিবেশকর্মীরা পুজো কমিটির কয়েক জনকে মারেন। তাতেই পরিস্থিতি তেতে ওঠে।

অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পরিবেশকর্মীরা। তাঁরা শান্তিপুর থানায় ওই পুজো কমিটির বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করেছেন, তবে এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। যে পুজো কমিটি পরিবেশকর্মীদের বিরুদ্ধে মারের অভিযোগ আনছে তারা কিন্তু মৌখিক দোষারোপেই সীমাবদ্ধ থেকেছে। তাদের তরফে কেউ এখনও পুলিশে অভিযোগ করেনি।

হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে আহত পরিবেশকর্মী সঞ্জিত কাষ্ঠ বলেন, “ওদের শোভাযাত্রায় উচ্চস্বরে ডিজে বক্স বাজছিল। কান ফেটে যাচ্ছিল। আমরা তাঁদের বলি, টেস্ট পরীক্ষা চলছে। এত আওয়াজে সকলেরই সমস্যা হবে। ওরা প্রথমে শব্দ কমালেও ফের বাড়িয়ে দেয়। বারণ করলে মারতে শুরু করে আমাদের।” পরিবেশকর্মীরা আরও জানিয়েছেন, দ্বিতীয়বার ডিজে-র শব্দ কমাতে অনুরোধ করা হলেই শোভাযাত্রায় থাকা পুরুষ মহিলাদের একাংশ তাঁদের উপরে চড়াও হয়ে কিল, চড়, লাথি, ঘুসি মারতে থাকে। এমনকি মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার ভিএসআর অনন্তনাগ বলেন, “শব্দ দূষণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া আছে। আইন মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” শান্তিপুরের পুরপ্রধান অজয় দে-র কথায়, “শব্দ দূষণের বিরুদ্ধে পুরসভা থেকে আমরা আগেও প্রচার করেছি। মানুষকেও যেমন সচেতন হতে হবে তেমনই পুলিশকেও সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে।”

শান্তিপুরের পরিবেশ কর্মীরা অনেক দিন ঘরেই শোভাযাত্রায় উচ্চগ্রামে ডিজে বক্স বাজানোর বিরুদ্ধে লড়ছিলেন। প্রশাসনের কাছে একাধিক স্মারকলিপিও জমা দিয়েছেন, থানার সামনে অবস্থানে বসেছেন, শান্তিপুর থেকে রানাঘাট পর্যন্ত পদযাত্রাও হয়েছে। কিন্তু অবস্থার পরিবর্তন হয়নি বলে অভিযোগ। বিভিন্ন পুজো মণ্ডপে এবং পুজোর শোভাযাত্রায় শব্দ তাণ্ডব অব্যাহত থেকেছে।

সোমবারের ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকেলে শান্তিপুরের ডাকঘর বাসস্ট্যাণ্ডে প্রতিবাদ সভা করেন পরিবেশকর্মীরা। ছিলেন সাধারণ মানুষ, সাংস্কৃতিক কর্মীরাও। সেখানে অভিযোগ উঠেছে, শব্দ দূষণ বন্ধ করতে প্রশাসনের তরফে কোনও সক্রিয়তা নেই। শান্তিপুরের বাসিন্দা নাট্যকর্মী কৌশিক চট্টোপাধ্যায় যেমন বলেন, “শব্দদানবের এই তাণ্ডব কখনও কাম্য নয়। কিন্তু কিছু মানুষ বুঝছেন না। সবাইকেই সচেতন হতে হবে। পুলিশকেও উদ্যোগী হতে হবে। তাঁরা গা করছেন না।’’ পুলিশ সুপার ভিএসআর অনন্তনাগ অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘আমাদের কাছে অভিযোগ এলেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’

Santipur DJ Environmentalist
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy