Advertisement
E-Paper

শীতের আশা বাড়াল বর্ষণ

এ যেন অনেকটা ‘উল্টো বুঝলি রাম’ হল! হাপিত্যেশ ছিল একটু শীতের জন্য। শেষ পৌষেও তাপমাত্রা ওঠানামা করছিল ১৬ বা ১৭ ডিগ্রির আশপাশে। বেলার দিকে রোদে হাঁটলে বিনবিনে ঘামে ভিজে যাচ্ছিল গায়ের জামা।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:৫৫

এ যেন অনেকটা ‘উল্টো বুঝলি রাম’ হল!

হাপিত্যেশ ছিল একটু শীতের জন্য। শেষ পৌষেও তাপমাত্রা ওঠানামা করছিল ১৬ বা ১৭ ডিগ্রির আশপাশে। বেলার দিকে রোদে হাঁটলে বিনবিনে ঘামে ভিজে যাচ্ছিল গায়ের জামা। লোকজন যখন বলতে শুরু করেছিলেন, ‘‘এ বারে কি পাখা চালিয়ে পিঠেপুলি খেতে হবে?’’

ঠিক তখনই দেখা মিলল তার। সোমবার থেকেই মুখভার আকাশের। সকাল থেকে গাঢ় কুয়াশায় ঢাকা চারপাশ। বেলার দিকে রোদের দেখা মিললেও সে রোদ যেন জুড়িয়ে যাওয়া চায়ের মতো। রাত বাড়তেই যোগ হল কনকনে উত্তুরে হাওয়া। এক ধাক্কায় পারদপতন তিন থেকে চার ডিগ্রি। সেই সঙ্গে মাঝরাত থেকে শুরু ঝিরঝিরে বৃষ্টি।

ঠান্ডা নিয়ে আক্ষেপ না হয় মিটল। কিন্তু মিঠে রোদে পিঠ দিয়ে বনভোজন কিংবা কাছেপিঠে বেড়ানো ভেস্তে গেল বেমালুম। যাঁরা বেরিয়েছিলেন তাঁরাও এই শীত-বৃষ্টিতে বিপাকে পড়েছেন। নবদ্বীপ-মায়াপুরের নাটমন্দির থেকে লালবাগ-হাজারদুয়ারির নবাবি অলিন্দে অন্য দিনের তুলনায় এ দিন ভিড়ও ছিল কম। যাঁরা পিকনিকে এসেছিলেন তাঁরাও কোনও রকমে ত্রিপল টাঙিয়ে অবস্থা সামাল দেন। যাত্রী কম ছিল বিভিন্ন রুটের বাসেও। নদিয়া জেলা বাস মালিক সমিতির তরফে অসীম দত্ত বলেন, ‘‘অন্য দিনের তুলনায় এ দিন ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ কম যাত্রী ছিল।’’

সোমবার মধ্যরাত থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত বিরামহীন বৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার ছিল বহরমপুর এবং নবদ্বীপ শহরের সাপ্তাহিক বাজার বন্ধের দিন। ফলে দুই শহর এমনিতেই সুনসান ছিল। স্কুল কলেজেও হাজিরা ছিল কম। তবে এই বৃষ্টিতে চাষির কপালে ভাঁজ। বিশেষ করে আলু এবং রবিশস্যের জন্য এই বৃষ্টি ভাল নয় বলে জানাচ্ছেন কৃষি বিশেষজ্ঞেরা। কান্দিতে জেলার মধ্যে সব থেকে বেশি আলু চাষ হয়। এ বার কান্দিতে প্রায় সাড়ে সাত হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। তারমধ্যে শুধুমাত্র বড়ঞা ব্লকেই আলু চাষ হয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে।

মুর্শিদাবাদের কৃষি দফতরের উপ-অধিকর্তা দীনেশকুমার পাল বলেন, ‘‘বৃষ্টির সঙ্গে মেঘলা আবহাওয়া। নাবি-ধসা রোগে আলুচাষ আক্রান্ত হওয়ার আদর্শ আবহাওয়া। রোগ প্রতিরোধের জন্য দ্রুত রাসায়নিক ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে।’’ ফুলকপি, বাঁধাকপি, লঙ্কা, পালং শাক, বেগুন, করলা, টম্যাটো-সহ বিভিন্ন শাক-সব্জিও এই আবহাওয়ার ফলে ছত্রাক রোগে আক্রান্ত হবে। জেলা উদ্যান পালন বিভাগের সহ-অধিকর্তা শুভদীপ নাথ বলেন, ‘‘রোগ প্রতিরোধ করতে খুব দ্রুত ছত্রাকনাশক রাসায়নিক স্প্রে করতে হবে। তারপর প্রয়োজন পড়লে ৫-৭ দিন পর আরও একবার স্প্রে করতে হবে।’’

এমনিতেই এ বার আলুর দাম পাননি চাষিরা। বড়ঞার সাটিতারা গ্রামের চাষি রূপেন্দু রজকের কথায়, “আলু চাষে বিঘা প্রতি ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা খরচ হলেও বিক্রি করে ঘরে আসছে মাত্র সাড়ে তেরো হাজার টাকা। এর মধ্যে আূবার এই অকালবৃষ্টি। খুব বিপদে পড়তে হবে।” সোমবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রায় পাঁচ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। পরিমাণে খুব বেশি না হলেও বৃষ্টির জল যদি আলু বা শীতকালীন সব্জি খেতে জমে থাকে তাহলে ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। বড়ঞা ব্লক কৃষি আধিকারিক সন্তু নন্দী বলেন, “এই ধরনের আবহাওয়ায় আলু খেতে যাতে জল না জমে সেই দিকে নজর দেওয়া জরুরি।”

Winter rainfall
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy