Advertisement
০২ মে ২০২৪

ফুটবলের আবেগে ভেসে পাঁচশোও সচল অরঙ্গাবাদে

বড় নোটের কারবারে নিষেধাজ্ঞার দরুণ মার খাচ্ছে ব্যবসা-বানিজ্য। লোকজনের হয়রানির শেষ নেই। কিন্তু এই ডামাডোলের বাজারেও উতরে গেল অরঙ্গাবাদের ফুটবল। রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী জাকির হোসেনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ওই খেলার ফাইনাল ছিল রবিবার।

মাঠে দর্শকের ভিড়।—ফাইল চিত্র

মাঠে দর্শকের ভিড়।—ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
অরঙ্গাবাদ শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৬ ০০:৫৯
Share: Save:

বড় নোটের কারবারে নিষেধাজ্ঞার দরুণ মার খাচ্ছে ব্যবসা-বানিজ্য। লোকজনের হয়রানির শেষ নেই। কিন্তু এই ডামাডোলের বাজারেও উতরে গেল অরঙ্গাবাদের ফুটবল। রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী জাকির হোসেনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ওই খেলার ফাইনাল ছিল রবিবার। মাঠের প্রবেশমূল্য ধার্য ছিল ৫০ টাকা। অনেকেই ভেবেছিলেন খুচরোর গেরোয় হয়ত মাঠের এককোনাও ভরবে‌ না। কিন্তু শেষমেশ দেখা গেল মাঠে তিল ধারণের জায়গা নেই। সৌজন্যে, পুরনো ৫০০ টাকা নেওয়ার নীতি।

ফাইনাল দেখতে পুরনো নোটেই টিকিট কাটল বিড়ি শিল্প শহরের হাজার হাজার ফুটবল পাগল দর্শক। আয়োজক ক্লাবের সম্পাদক মাসুদাল হক জানান, বাতিল নোট নেওয়া হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় ছিল। সমস্যা ছিল বড় নোট ভাঙিয়ে দেওয়া নিয়েও। কিন্তু পুরনো ৫০০ টাকা না নিলে অনেকেই টিকিট কাটতে পারবেন না। তাই জাকিরদার নির্দেশেই পুরনো নোটেই টিকিট কাটার সুযোগ দেওয়া হয় দর্শকদের।

জাকিরও বলছেন, “লোকের হাতে নতুন টাকা ও পর্যাপ্ত পরিমাণে খুচরো কোথায়? যাঁদের জন্য খেলার আয়োজন তাঁরাই যদি মাঠে ঢুকতে না পারেন, তবে আনন্দটাই তো মাঠে মারা যাবে। তাই এই ব্যবস্থা।”

এতেও খুচরোর কমতি পড়ে। ফলে কিছু দর্শককে বিনা টিকিটকেই মাঠে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়। হাজার পঁচিশ দর্শক ভরিয়ে দেন অরঙ্গাবাদ কলেজ মাঠ। ভিড় সামলাতে রীতিমতো হিমসিম খেতে হয় শতাধিক পুলিশকে।

জনসংযোগ বাড়াতে নিজের খাস তালুক বিড়ি শিল্প শহর অরঙ্গাবাদে ফুটবল খেলার আয়োজন করেছিলেন জাকির। ৩০ অক্টোবর ওই খেলা শুরু হয়। আট দলীয় ওই টুর্নামেন্টের সাতটি দলই ভিন জেলার, কলকাতার। তবে‌ বিদেশি ভরা বাইরের দলকে হারিয়ে শেষ হাসি হাসল জাকিরের দলই।

ফাইনালে অবশ্য দুই দলেই কলকাতার নামি ফুটবলারের ছড়াছড়ি ছিল। রহিম নবির পান্ডুয়ার দলের কেউ এরিয়ানে, কেউ পিয়ারলেস, কেউ বা কেএফসি সহ বিভিন্ন বড় দলের নিয়মিত খেলোয়াড়। জাকিরের দলের ৫ জন স্থানীয় ছাড়া গোলরক্ষক সংগ্রাম মুখোপাধ্যায়-সহ ৬ জনই ছিলেন কলকাতার। ছিলেন দুই নাইজেরিয়ান আবিদে ও মোনাদে, যারা কেএফসি তথা কলকাতার নামে‌ ক্লাবে খেলেন। দুই দলের খেলা দেখে খুশি মনেই মাঠ ছেড়েছেন দর্শকেরা।

রহিম নবি দাবি করছেন, ‘‘কলকাতা মাঠের ফুটবলার ‘সাপ্লায়ার’ পান্ডুয়ার এই অ্যাকাডেমি।’’

তা সত্ত্বেও এ দিন অরঙ্গাবাদের মাঠে জাকিরের স্থানীয় দলের কাছে এই হার কেন? পান্ডুয়া অ্যাকাডেমির এক বলেন, “একাধিক সুযোগ নষ্ট হয়েছে। জাকিরের গোল আগলেছেন ভারত খ্যাত গোলরক্ষক সংগ্রাম মুখোপাধ্যায়। তাই গোল দেওয়া যায়নি।”এ দিন মাঠে হাজির ছিলেন জাকির ছাড়াও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী লক্ষীরতন শুক্ল, বিধায়ক ও ফুটবলার দীপ্তেন্দু বিশ্বাস। মাঠে বিপুল দর্শক দেখে দু’জনেই কিছুটা হতবাক। তাঁদের কথায়, “অরঙ্গাবাদে ফুটবলের ভবিষ্যত উজ্জ্বল।”

প্রতিযোগিতার উদ্যোক্তা কমিটির সম্পাদক মাসুদাল হক বলেন, “মফঃস্বলে রহিম নবি, সংগ্রাম মুখোপাধ্যায়ের খেলা তো বড় একটা দেখা যায় না। তাঁদের দেখতেই মাঠে ভিড় করেছেন দর্শকেরা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Football Currency note
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE