তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় ‘প্রেমিকা’ ও তাঁর স্বামী-সহ চার জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

নদিয়ার কৃষ্ণনগরের ধুবুলিয়ার তৃণমূল নেতা বাবুসোনা ঘোষের হত্যা মামলায় মঙ্গলবার চার জন দোষীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল কৃষ্ণনগর জেলা আদালত। মঙ্গলবার জেলা ও দায়রা বিচারক দেবদীপ মান্না এই রায় ঘোষণা করেন।

নমিতা ঘোষ ও তাঁর স্বামী প্রহ্লাদ ঘোষ ছাড়াও দোষীদের তালিকায় নাম রয়েছে নমিতার দুই ভাই প্রসেনজিৎ ও শঙ্করের। প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

২০২২ সালের অগস্টে কৃষ্ণনগর শহরের কৃষ্ণগঞ্জের পীরপুর এলাকা থেকে বাবুসোনার মুণ্ড উদ্ধার হয়েছিল। প্রায় এক সপ্তাহ পরে ব্যারাকপুরের মঙ্গল পাণ্ডে ঘাট থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়েছিল।

পুলিশি তদন্তে জানা যায়, নমিতার সঙ্গে বাবুসোনার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই তৃণমূল নেতার এই নৃশংস পরিণতি। সেই সম্পর্ক মেনে নিতে না পেরে নমিতার স্বামী প্রহ্লাদ তাঁর দুই শ্যালককে সঙ্গে নিয়ে পরিকল্পিত ভাবে খুন করেন। সেই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন প্রহ্লাদের স্ত্রী তথা বাবুসোনার ‘প্রেমিকা’ নমিতাও। তদন্তে উঠে আসে, পীরপুরের এক কলাবাগানে ডেকে নিয়ে গিয়ে তৃণমূল নেতার গলা টিপে হত্যা করা হয়। পরে সেই দেহ কুপিয়ে মাথা আলাদা করে ফেলে দেওয়া হয়েছিল মাথাভাঙা নদীতে।

এ দিন রায় ঘোষণার পরে সরকারি কৌঁসুলি বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে আমরা প্রমাণ করেছি উদ্ধার হওয়া মাথা ও দেহ একই ব্যক্তির। মোবাইল ট্র্যাকিং ও বেশ কিছু ডিজিট্যাল প্রমাণের ফলে অপরাধের সঙ্গে আসামিদের সরাসরি যুক্ত থাকা প্রমাণিত হয়েছে।’’ তিনি জানান, মামলার তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন ধুবুলিয়া থানার পুলিশ আধিকারিক রূপেশ ঘোষ। সরকার পক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘‘দীর্ঘ তিন বছরের আইনি লড়াই শেষে এই রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আদালতের রায়ে সন্তুষ্ট মৃতের পরিবারও।’’