বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
ছাত্র আন্দোলনের ধাক্কায় অসুস্থ হয়ে পড়লেন বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিসিকেভি) উপাচার্য গৌতম সাহা। শুক্রবার রাতে তাঁকে কল্যাণীর একটি নার্সিংহোমে ভর্তি
করা হয়েছে।
বিসিকেভি সূত্রের খবর, এ দিন দুপুর থেকেই উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার-সহ একাধিক আধিকারিককে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন টিএমসিপি সমর্থক ছাত্রেরা। চিৎকার-চেঁচামেচি করা ছাড়াও উপাচার্যের নাম ধরে ‘আপত্তিকর’ শব্দ ব্যবহারও করা হয় বলে অভিযোগ। এ ভাবে বেশ কিছু চলার পরে উপাচার্য জানান, তিনি অসুস্থ বোধ করছেন। কিন্তু তাঁর অসুস্থতার কথা বিক্ষোভকারী ছাত্রেরা মানতে চায়নি। শেষ পর্যন্ত তাদের দাবি মতো এক চিকিৎসককে ডেকে পাঠানো হয়। তিনি এসে পরীক্ষা করে জানান, উপাচার্য সত্যিই গুরুতর অসুস্থ। আন্দোলনকারীরা সে কথাও মানতে রাজি হননি। তখন তাঁদের সামনেই উপাচার্যের রক্তচাপ মাপা হয়। দেখা যায়, তাঁর রক্তচাপ বেড়ে বিপজ্জনক পর্যায়ে চলে গিয়েছে। এর পরেও অনেকের বিশ্বাস না হওয়ায় একাধিক বার রক্তচাপ মাপতে হয়।
অবশেষে টিএমসিপি সমর্থক ছাত্রেরা বুঝতে পারেন, উপাচার্যের শারীরিক অবস্থা ক্রমশ বিপজ্জনক হয়ে যাচ্ছে। অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে তাঁকে নার্সিং হোমে পাঠানোর ব্যবস্থা হয়। কিন্তু উপাচার্য বাদে আর কাউকে বাইরে বেরোতে বাধা দেওয়া হয়। রেজিস্ট্রার অ্যাম্বুল্যান্স পর্যন্ত উপাচার্যকে পৌঁছে দিতে যেতে চাইলে কয়েক জন ছাত্র তাঁর সামনে মেঝেতে শুয়ে পড়ে পথ আটকায়। সেই সময় ধাক্কাধাক্কিতে এক ছাত্রের গায়ে রেজিস্ট্রারের পা লাগলে পরিস্থিতি ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। আন্দোলনকারীরা দাবি করতে থাকেন, রেজিস্ট্রার ইচ্ছা করেই ওই ছাত্রের গায়ে পা দিয়েছেন। রীতিমতো হুমকি দিয়ে তাঁকে আটকে রাখা হয়।
বিসিকেভি চত্বর থেকে উপাচার্যকে সরাসরি নার্সংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। আন্দোলনকারীরা ছাত্রেরা দাবি করেন, উপাচার্য সুস্থ হয়ে তাদের দাবি না মানা পর্যন্ত রেজিস্ট্রার-সহ বাকি আধিকারিকদের আটকে রাখা হবে। যদিও টিএমসিপির বিসিকেভি ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক অনির্বাণ দাসের দাবি, “আমরা কারও সঙ্গে দুর্ব্যবহার করিনি। তবে দাবি না মেটা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।” কোন ছাত্রাবাসে কোন বর্ষের ছাত্রেরা থাকবে সে সম্পর্কে অ্যান্টি
র্যাগিং কমিটির নির্দেশ মানতে না চেয়ে গত ২৩ অগাস্ট থেকে কার্যত অচলাবস্থার সৃষ্টি করেছেন এই ছাত্রেরা। এঁদের পিছনে তৃণমূলের এক বহিরাগত নেতা আছেন বলে অভিযোগ।
রাতে নার্সিং হোমে শুয়ে উপাচার্য গৌতম সাহা বলেন, ‘‘শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী এবং অধিকাংশ পড়ুয়া গুটিকয়েক ছাত্রের অনৈতিক দাবিতে হতবাক। তাঁদের সামনে রেখে পিছনে অন্য কারও অভিসন্ধি কাজ করছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy