Advertisement
E-Paper

ঘরে পেকে ‘গাছপাকা’ রানিপসন্দ

ভরা গরমের ইফতার মাতাবে হিমসাগর, বোম্বাই, গোলাপখাস, মিঠুয়া, মধুকুলকুলি, সহিদুল, রানিপসন্দ, গোলাপখাসের মতো  কুলীন আম, এটাই দস্তুর। ঝুড়ি ভর্তি গাছপাকা আম বাজার আলো করে থাকবে। গাছ থেকে সদ্য ছিঁড়ে আনা সে সব আমের গা বেয়ে তখনও আঠা গড়াবে। গন্ধে ম ম চারদিক।  

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৮ ০০:৪৩

কুপিলা, ডোমকল, জলঙ্গি। একের পর এক বাজারে ঢুঁ মারছেন আর হতাশ হয়ে ফিরছেন জাকির হোসেন। কোথাও মিলছে না মনপসন্দ আম। এ দিকে সময় কমে আসছে। দু’দিন পরেই ইফতার। কুপিলা দক্ষিণ বিশ্বাসপাড়ায় ইফতারের উদ্যোক্তাদের অন্যতম জাকির হোসেন তাই বেরিয়েছেন ভালো আমের সন্ধানে।

ভরা গরমের ইফতার মাতাবে হিমসাগর, বোম্বাই, গোলাপখাস, মিঠুয়া, মধুকুলকুলি, সহিদুল, রানিপসন্দ, গোলাপখাসের মতো কুলীন আম, এটাই দস্তুর। ঝুড়ি ভর্তি গাছপাকা আম বাজার আলো করে থাকবে। গাছ থেকে সদ্য ছিঁড়ে আনা সে সব আমের গা বেয়ে তখনও আঠা গড়াবে। গন্ধে ম ম চারদিক।

কিন্তু কোথায় কি? শেষ জ্যৈষ্ঠেও এ বার গাছপাকা আম বাজারে সেভাবে আসেনি। যদিও বাজারের আমের যোগানে কমতি নেই। কিন্তু সে আমের বেশির ভাগই গাছপাকা নয়। কারবাইডে পাকানো সে আমের চেহারা দেখলেই চিনতে পারেন আমবাঙালি। একটু শুকনো চেহারা। খোসার উপরে কারবাইডের হাল্কা সাদাটে ছোপ। তবে ইদানীং বাজারে প্রায় ‘গাছপাকা’ চেহারা নিয়েই হাজির হচ্ছে ইথিলিনে পাকানো আম। তাতে আসল নকল একাকার। কিন্তু জিভে ঠেকালেই মুখটা কেমন বিস্বাদ হয়ে উঠছে। ফলে ইফতারে আম খাইয়ে বা খেয়ে সুখ নেই এ বার। আক্ষেপ করছিলেন জাকির হোসেন। “গাছপাকা আম খাওয়া যাঁদের অভ্যাস তাঁদের পাতে ওইসব কৃত্রিম ভাবে পাকানো আম দিতে ইচ্ছে করে না। কিন্তু কি করব বাজারে এখনও গাছপাকা আম আসেনি।”

তবে তুলনায় কিছুটা ভাগ্যবান নদিয়ার স্বরূপগঞ্জের সিরাজুল শেখ। দিনকয়েক আগে স্থানীয় সংখ্যালঘু সেলের ব্যবস্থাপনায় কয়েক শো লোকের ইফতারের আয়োজন হয়েছিল তাঁর তত্ত্বাবধানে। সে দিনের ইফাতারের শুরুতে ছিল খেজুর, চিঁড়ে, মুড়কি, চিনি। ফলের মধ্যে আপেল, আঙুর, আম, বেদানা, তরমুজ, কলা, শসা এবং অবশ্যই আম। সরবত, দই, রকমারি মিষ্টি। শেষে মুড়ি চপ আর ভেজানো ছোলা।

স্থানীয় পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান সিরাজুল শেখ জানান, “বাজারে এখনও পাকা আম না এলেও আমরা এলাকার বাগান মালিকদের সঙ্গে আগে থেকে কথা বলে রেখেছিলাম। ফলে একেবারে গাছ থেকে পেড়ে টাটকা পাকা আম দিতে পেরেছি রোজাদারদের পাতে।”

ইদের ঠিক পরেই জামাইষষ্ঠী। জামাই বাবাজীবনেরাও কি কার্বাইড আমেই সন্তুষ্ট থাকবেন? উত্তরে আমচাষিরা চওড়া হেসে আশ্বাস দিচ্ছেন, আর বড়জোর সপ্তাহখানেক। তারপরই বাজার ভরে যাবে গাছপাকা আমে। মুর্শিদাবাদ জেলার বড় আম ব্যবসায়ী ফরাক্কা ঘোলাকান্দির সোলেমান শেখ যেমন বলেন, “এত দিন পর এবার গাছে আম তৈরি হয়ে গিয়েছে। দিন সাতেকের মধ্যে সব বাজারেই মিলবে গাছপাকা আম। ইতিমধ্যেই বাজারে ঢুকতে শুরু করেছে গাছপাকা ভালো আম।”

বহরমপুরের কান্দি বাসস্ট্যান্ড বাজারের বিক্রেতা প্রশান্ত দাস বলেন, “পাকা আম ২৫-৩০ টাকায় বিকোচ্ছে। গাছপাকা ৪০-৪৫ টাকায়। জামাইদের কোনও অসুবিধা হবে না।”

নদিয়ার আম ব্যবসায়ী দুর্গাপ্রসাদ তেওয়ারি বলেন “আম পাকার গরম তো পড়ল এই কয়েক দিন। আমের জন্য যে গরম আবহাওয়া লাগে সেটা এত দিনে ঠিকঠাক পাওয়া যাচ্ছে।”

Mango
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy