Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Dense Forest in Border Areas

পশ্চিমবাংলার তিন জেলার বাংলাদেশ সীমান্তে এত ঘন জঙ্গল গজাল কী ভাবে? মহা ফাঁপরে বিএসএফ কর্তারা

মুর্শিদাবাদের সীমান্তে কাঁটাতার ঘেঁষা জঙ্গলের পরিমাণ তুলনামূলক ভাবে কম হলেও কাঁটাতারবিহীন অঞ্চলে জঙ্গল থাকায় তা পাচারকারীদের ‘স্বর্গরাজ্যে’ পরিণত হয়েছে।

Representative Image

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

প্রণয় ঘোষ
করিমপুর শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৪ ১২:৪২
Share: Save:

সীমান্ত এলাকা থেকে প্রায় প্রতি দিনই উদ্ধার হচ্ছে কাঁচা সোনা, গাঁজা, কখনও আবার নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ বা অস্ত্র! বিপুল পরিমাণে পাচার সামগ্রী উদ্ধারের পর অনেক সময়েই দেখা যাচ্ছে, পালিয়ে যেতে সক্ষম হচ্ছেন পাচারকারীরা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাঁরা পালাচ্ছেন কাঁটাতারের গা ঘেঁষা ঘন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে। চিরুনি তল্লাশি চালিয়েও তাঁদের আর খোঁজ মিলছে না। আবার বাঁশঝাড়ের জঙ্গলেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা আত্মগোপন করে থেকে সুযোগ বুঝে সীমান্ত পারাপারের ঘটনাও নিত্য ঘটে চলায় ফাঁপরে পড়েছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।

সীমান্তের কাঁটাতার ঘেঁষা এলাকায় ঝোপঝাড় গজিয়ে উঠলে তা দ্রুত সাফ করে ফেলাই দস্তুর। যাতে নজরদারিতে অসুবিধা না হয় বিএসএফের। এমনকি, কোনও গাছ বেড়ে উঠলে তা কেটেই ফেলা হয়। তা সত্ত্বেও বাহিনীর অলক্ষ্যে কী ভাবে সীমান্ত ঘেঁষা মাইলের পর মাইল এলাকা জুড়ে বাঁশঝাড় গজিয়ে উঠল, তা নিয়ে বিএসএফের অন্দরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বাহিনী সূত্রের বক্তব্য, এমন ঘটনা মোটেই কাম্য নয়। দক্ষিণবঙ্গের তিন জেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের ও পারে জ়িরো লাইনের বড় এলাকা জুড়ে গজিয়ে উঠেছে ঘন ঝোপঝাড়। নদিয়ার করিমপুর থেকে শিকারপুর, রাউতবাটি, টেইপুর, রংপুর, লালবাজার, চাপড়া কৃষ্ণগঞ্জ সীমান্তে কাঁটাতার সংলগ্ন ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রায় ১৩ থেকে ১৪ কিলোমিটার জায়গা ঘন জঙ্গলে ঢেকে রয়েছে। মুর্শিদাবাদের সীমান্তে কাঁটাতার ঘেঁষা জঙ্গলের পরিমাণ তুলনামূলক ভাবে কম হলেও কাঁটাতারবিহীন অঞ্চলে জঙ্গল থাকায় তা পাচারকারীদের ‘স্বর্গরাজ্যে’ পরিণত হয়েছে। একই অবস্থা উত্তর ২৪ পরগনার সীমান্ত এলাকাতেও।

ঘন বাঁশঝাড়ে ঢেকেছে সীমানা।

ঘন বাঁশঝাড়ে ঢেকেছে সীমানা। —নিজস্ব চিত্র।

শুধু তা-ই নয়, বিএসএফ সূত্রে দাবি, ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’-এর জমিতেও চাষাবাস হয়ে থাকে। কলার চাষ হয় সেখানে। অনেক জায়গায় বর্ষাকালে পাটচাষও হয়। ক্ষেতের ভিতর দিয়েই অধিকাংশ সময়ে কাঁটাতারের কাছাকাছি পৌঁছে যাচ্ছেন পাচারকারীরা। এই পরিস্থিতিতে জওয়ানদের আরও সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’-এর জমিতেও যাতে বেশি উচ্চতার ফসল চাষ না করা হয়, তার জন্যও প্রচার চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি, সীমান্তের কোন এলাকাগুলিতে ঘন ঝোপঝাড় গজিয়ে উঠেছে, সেগুলিকেও চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের মুখপাত্র ডিআইজি এ কে আর্য বলেন, ‘‘সীমান্তের কাঁটাতার ঘেঁষে অনেক জায়গায় বাঁশবন গজিয়ে উঠেছিল। অনেক জায়গায় বেশি উচ্চতাযুক্ত ফসলের চাষও হত। সেই সব বন্ধ করা গিয়েছে। কিছু জায়গা এখনও বাকি রয়েছে। সেখানেও একই ভাবে দ্রত পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BSF India Bangladesh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE