দাবি: জিটিএস বাতিলের দাবি এআইডিওয়াইও-র। নিজস্ব চিত্র
বাইক থেকে নেমে সটান ছোটনের চায়ের দোকানের সামনে চলে আসেন বছর তিরিশের এক যুবক। বোঝাই যায় দীর্ঘদিনের খরিদ্দার। একটু মজা করেই বলেন, “জিএসটি চালু হয়েছে। অচ্ছে দিন আরও এক পা এগিয়ে এল। চায়ের দাম কিন্তু এক টাকা কম আজ থেকে!” হেসে ওঠেন বাকিরা।
কৃষ্ণনগরের পাত্রবাজারে ফুটপাথ থেকে পটল কিনতে-কিনতে এক সরকারি কর্মীও বলে বসেন, “হ্যাঁ রে, জিএসটি চালু হয়েছে বলে যেন দাম বেশি নিস না!” মজাটা ঠিক ধরতে না পেরে দোকানি বলেন, “তা কী করে নেব! জিএসটি কী, সেটাই তো বুঝে উঠলাম না এখনও।”
গত ক’দিন ধরে পণ্য পরিষেবা কর বা জিএসটি-ই চর্চার কেন্দ্রে। শুক্রবার মাঝরাতে চালু হয়ে গিয়েছে সেই কর। কিন্তু এখনও ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মানুষ, কেউই স্পষ্ট করে ব্যাপারটা বুঝে উঠতে পারেননি। মূলত বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তালিকা দেখেই যে যার মতো করে বোঝার চেষ্টা করছেন, লাভ না ক্ষতি। চায়ের দোকান থেকে পাড়ার রক, সর্বত্র চলছে তর্ক। জিটিএ করে কাদের লাভ, সাধারণ মানুষের জীবনে কী ভাবে প্রভাব পড়বে তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। চলছে মশকরাও।
বহরমপুরের গোরাবাজারে একটি মুদিখানার দোকানি একরামুল করিম বলেন, ‘‘জিএসটি চালু হওয়ার পরে সরকারি তরফ থেকে এখনও কোনও নতুন নির্দেশ আসেনি। ফলে পুরনো পদ্ধতিতেই বেচাকেনা করছি।’’ প্রতি মাসেই পয়লা তারিখে মাসিক মুদির বাজার করেন লালবাগের নিরুপা রায়। এ দিনও তিনি থলে হাতে বেরিয়েছিলেন। দাম কেউ বেশি চায়নি তাঁর কাছে। কিন্তু মালমশলা যা খুঁজছিলেন, সব এক দোকানে পাননি। ব্যাজার মুখে তিনি বলেন, ‘‘ক’টা জিনিস কিনতে এ দোকান ও দোকান ঘুরতে হল। সবাই বলছে, জিএসটি চালু হওয়ায় সাপ্লাই নেই। ডিলারেরা মাল পাঠাচ্ছে না।’’
মুদির জিনিস যা-ও বা পেয়েছেন, ওষুধ পাননি ব্লাড সুগারের রোগী নিরুপা। রোজ তাঁকে যে ওষুধ কেতে হয়, লালবাগ শহরের তিনটি ওষুধের দোকান খুঁজেও তা নিতিন জোগাড় করতে পারেননি। বহরমপুর শহরের বড় ওষুধ ব্যবসায়ীদের অনেকেই দোকান বন্ধ রেখেছেন। বা, বাড়তি করের ভয়ে কোম্পানির ঘর থেকে ওষুধ আনেননি। স্কুল শিক্ষক অরুপ সরকার বলেন, ‘‘সবটা বোঝা না গেলেও একটা ব্যাপার পরিষ্কার যে ওষুধের দাম বাড়ছে। সেটা সাধারণ মানুষের জন্য সুখবর নয়।’’মুর্শিদাবাদে বড় ওষুধ ব্যবসায়ীদের এক সংগঠনের অন্যতম কর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘‘বেশ কিছু ওষুধ কোম্পানি জিএসটি চালু হওয়ার পরে বাড়তি করের টাকা ব্যবসায়ীদের মিটিয়ে দেবে বলে জানিয়েছে। তার পরেও এ সব করা মানে কালোবাজারি ডেকে আনা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy