বছর কয়েক আগে, কারাগারের দম চাপা পাঁচিল টপকে প্রথমবার নাটক করেছিল ওরা।
বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের বাইরে সেই প্রথম পা পড়েছিল আবাসিকদের। বহরমপুর রেপার্টরি থিয়েটারের উদ্যোগে সেই বেরিয়ে পড়া। দিল্লি, কলকাতা— পুলিশের প্রহরায়, দূরের সব শহরে রবীন্দ্রনাথের নাটক মেলে ধরে ছিলেন তাঁরা। এ বার কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের সেই আবাসিকদের নিয়ে স্টাডি সেন্টার খুলছে ইগনু (ইন্দিরা গাঁধী জাতীয় মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়)। ইগনুর রঘুনাথগঞ্জ আঞ্চলিক শাখার উদ্যোগেই সেই বেরিয়ে পড়া।
বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, মালদহ জেলা নিয়ে গঠিত ওই আঞ্চলিক শাখা। বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের ভিতরেই তৈরি হবে ওই স্টাডি সেন্টার। আপাতত, পড়ুয়া হিসেবে ১৬০ জন আবাসিকের নাম নথিবদ্ধ করা হয়েছে। ইগনু জানাচ্ছে, সংশোধনাগারের ভিতরে এমন স্টাডি সেন্টার রাজ্যে এই প্রথম।
ইগনু-র রঘুনাথগঞ্জ অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তা শান্তনু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মনে রাখবেন, ওই ১৬০ জনের মধ্যে একশো জন পড়বেন স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের ক্লাসে। বাকি ষাট জনকে প্রথম ছ-মাস বিপিপি (ব্যাচেলর অব প্রিপেটরি প্রোগ্রাম) পড়ানো হবে।’’ বিপিপি-র ছাত্ররা মাধ্যমিক উত্তীর্ণ, কিন্তু উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ নয়। ফলে তাঁদের স্নাতক স্তরে ভর্তির উপযোগী করে গড়ে তুলতে বিপিপি কোর্স।
সাজাপ্রাপ্ত আবাসিকদের পাশাপাশি বিচারাধীন আবাসিকদেরও সংশোধনাগারের স্টাডি সেন্টারে পড়ানো হবে বলে জানান জানাচ্ছে ইগনু।
বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের সুপার টি আর ভুটিয়া বলেন, ‘‘কারা দফতর থেকে অনুমোদন পাওয়া গিয়েছে। তার পরেই ইগনুর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম আমরা। ওঁরা রাজি হতেই তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়।’’ সপ্তাহে দু’দিন— শনিবার ও রবিবার ক্লাস হবে। সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৬টা পর্যন্ত মোট ৩টি ‘সিফট’-এ ২ ঘণ্টা করে মোট ৬ ঘণ্টা পাড়ানো হবে।
অলস মস্তিক শয়তানের বাসা। তাই আঁকা, অভিনয়— নানা বিনোদন ও শিক্ষামূলক কর্মকাণ্ডে সংশোধনাগারে হয়। সেই তালিকায় এ বার উঠে এল পড়াশোনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy