Advertisement
১৭ জুন ২০২৪
TMC

TMC: তৃণমূলে কাজিয়া, নেতাদের সামনেই চেয়ার ছোড়াছুড়ি

সম্প্রতি কৃষ্ণনগর শহর সভাপতির পদ থেকে শিশির কর্মকারকে সরিয়ে প্রদীপ ওরফে মলয় দত্তকে সেই পদে বসিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব।

হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লেন কর্মীদের একটা অংশ।

হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লেন কর্মীদের একটা অংশ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২২ ০৭:৩০
Share: Save:

সভাপতি পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কৃষ্ণনগর শহর তৃণমূলের অন্দরের বিরোধ আবার নতুন করে সামনে চলে এল। মঙ্গলবার কৃষ্ণনগর পুরসভার দ্বিজেন্দ্রলাল সভাকক্ষে বৈঠক শুরুর আগেই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লেন কর্মীদের একটা অংশ। মঞ্চে বসে থাকা জেলা নেতৃত্বের সামনেই তাঁরা পরস্পরের দিকে চেয়ার ছুড়ে মারলেন। নেতারা কোনও মতে পরিস্থিতি সামাল দিলেন। এ দিনের ঘটনা দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসা গোষ্ঠী কোন্দলের রেষ বলেই রাজনৈতিক মহলের ধারণা। অনেকে মনে করছেন, নতুন শহর সভাপতিকে হেনস্থা করতেই পরিকল্পিত ভাবে এমনটা ঘটানো হয়েছে।

সম্প্রতি কৃষ্ণনগর শহর সভাপতির পদ থেকে শিশির কর্মকারকে সরিয়ে প্রদীপ ওরফে মলয় দত্তকে সেই পদে বসিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব। পুরভোটের আগে এই মলয়ই ছিলেন শিশির কর্মকার ও প্রাক্তন পুরপ্রধান আসীম সাহাদের বিরোধী গোষ্ঠীর অন্যতম মুখ। তৃণমূল সূত্রের খবর, শিশির কর্মকারের নেতৃত্ব পুরসভা দখল করলেও তাঁকে সরিয়ে মলয়কে সভাপতি করা অনেকেই মেনে নিতে পারেননি। অসীম সাহার সঙ্গেও মলয় দত্তের বিবাদ দীর্ঘ দিনের।

সভাপতি হওয়ার পর মলয় দত্ত এ দিনই প্রথম বৈঠক ডাকেন। শহর তৃণমূলের পক্ষ থেকে দল ও শাখা সংগঠনের জেলা নেতৃত্বকে আমন্ত্রণ জানানা হয়েছিল। কৃষ্ণনগর পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলরদের পাশাপাশি ওয়ার্ড ও বুথ সভাপতিদেরও উপস্থিত থাকতে বলা হয়। সব পক্ষেরই প্রায় সকলেই সভায় উপস্থিত হন। তাঁদের সঙ্গে আসেন প্রচুর কর্মী-সমর্থক।

দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু কর্মী দাবি করতে থাকেন যে এমন কিছু লোক এই সভায় আছেন যাঁরা পুরভোটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে কাজ করেছিলেন। তাঁদের সভা থেকে বার করে দেওয়ার দাবি জানাতে থাকেন ওই কর্মীরা। উভয় পক্ষের মধ্যে বচসা, তার পর হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। উভয় পক্ষ পরস্পরের দিকে চেয়ার ছুড়ে মারতে থাকে।

সকলের উপস্থিতি এমনটা ঘটে যাওয়ায় নেতারা বিব্রত হয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত তাঁদেরই হস্তক্ষেপে অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আসে। বৈঠক শুরু হয়। কিন্তু প্রথমেই অশান্তি হওয়ার বৈঠকের তাল কেটে যায়। বক্তারা ঘটনার নিন্দা করে সকলে একসঙ্গে লড়াই করার আহ্বান জানান। তাতে পরিস্থিতি সাময়িক ভাবে শান্ত হলেও ভিতরে ভিতরে উত্তেজনা থেকেই গেল বলে মনে করছেন অনেকেই। তবে শহর সভাপতি মলয় দত্তের দাবি, “১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কিছু কর্মীর মধ্যে সামান্য ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। পরে সেটা মিটেও গিয়েছে।” দলের অন্দরে অবশ্য শোনা যাচ্ছে অন্য কথা। অনেকেই মনে করছেন, গোটা বিষয়টাই পরিকল্পিত ভাবে করা হয়েছে। সদ্য-প্রাক্তন শহর সভাপতি শিশির কর্মকারের দাবি, “আজকের সভায় এমন অনেকেই ছিলেন যাঁরা পুরভোটে তৃণমূল প্রার্থীকে হারানোর জন্য প্রকাশ্যে কাজ করেছেন। তাঁদের সভায় দেখে তৃণমূলের প্রকৃত সাধারণ কর্মীরা খেপে গিয়েছিলেন। তবে এমনটা হওয়া উচিত হয়নি।” আর প্রাক্তন পুরপ্রধান অসীম সাহার বক্তব্য, “এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠ কারও যুক্ত থাকার প্রশ্নই ওঠে না। যারা কাণ্ডটা ঘটিয়েছে, তারা সকলেই পরিচিত। অত্যন্ত নিন্দনীয় কাজ। দলের কাছে আবেদন করব, তাদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষপ করতে।”

তৃণমূলের নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি কল্লোল খাঁ বলেন, “ঘটনার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। পরে গিয়ে জানতে পারি।” তাঁ মতে, “এই ধরনের ঘটনা একেবারেই শোভন নয়। যেখানে যা ভুল বোঝাবুঝি আছে, তা আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে ফেলতে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Clash Krishnanagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE