Advertisement
E-Paper

কৃষ্ণনগরে জোড়া খুনে নতুন মোড়

সস্ত্রীক পুলিশকর্মীর খুনের ঘটনায় কোনও পেশাদার খুনির হাত রয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। দু’জনকেই বুকে ধারাল কিছু দিয়ে একবার আঘাত করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে নিখুঁত ভাবে যে কায়দায় পায়ের শিরা কেটে দেওয়া হয়েছে তাতে এটা পাকা হাতের কাজ না হয়ে যায় না বলেই মনে করছেন সিআইডির অফিসারেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৫ ০০:৩৮

সস্ত্রীক পুলিশকর্মীর খুনের ঘটনায় কোনও পেশাদার খুনির হাত রয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। দু’জনকেই বুকে ধারাল কিছু দিয়ে একবার আঘাত করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে নিখুঁত ভাবে যে কায়দায় পায়ের শিরা কেটে দেওয়া হয়েছে তাতে এটা পাকা হাতের কাজ না হয়ে যায় না বলেই মনে করছেন সিআইডির অফিসারেরা। বিশেষ করে ধারাল অস্ত্র রমাপ্রসাদবাবুর পাকস্থলী ভেদ করে যে ভাবে গিয়েছে তা কোনও পাকা হাতের কাজ না হয়ে যায় না। তদন্তকারী এক সিআইডি অফিসারের কথায়, ‘‘একেবারে নিখুঁত কাজ। রমাপ্রসাদবাবুর পায়ের শিরা যে ভাবে কাটা হয়েছে তাতে আমরা এক প্রকার নিশ্চিত এ কাজ আনাড়িদের নয়।’’

গত ২৩ জুন মাঝরাতে নিজের বাড়িতেই খুন হয়েছিলেন রমাপ্রসাদ চন্দ (৫০)। তিনি পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ‘স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপ’-এ নদিয়ায় কর্মরত ছিলেন। পরে রমাপ্রসাদবাবুর স্ত্রী জয়ন্তীদেবী হাসপাতালে মারা যান। গোয়েন্দাদের দাবি, চন্দ দম্পতিকে খুন করতে পেশাদার দুষ্কৃতীদের কাজে লাগানো হয়েছিল। তবে একজন নাকি একাধিক ব্যক্তি তাদের কাজে লাগিয়েছিল তা এখনও পর্যন্ত পরিষ্কার নয়। আবার এই দুষ্কৃতীরা স্থানীয় না বাইরের তা নিয়েও সংশয়ে গোয়েন্দারা। কারণ, পালপাড়া, বেলেডাঙা-সহ আশেপাশের এলাকায় সমাজবিরোধীরা সবসময়ই সক্রিয়। এমন অবস্থায় রমাপ্রসাদবাবুর মতো এক পুলিশকর্মীকে স্থানীয় দুষ্কৃতীদের না জানিয়ে বাইরে থেকে এসে কেউ খুন করে দিয়ে গেল এটা মেনে নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে তদন্তকারীদের একাংশের কাছে। সেই মতো বুধবার রাতে পুলিশ স্থানীয় দুই দুষ্কৃতীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এর মধ্যে অবশ্য একজনকে ছেড়েও দেওয়া হয়।

সিআইডির এক কর্তার কথায়, ‘‘এত বড় একটা কাজ স্থানীয় দুষ্কৃতীদের অজান্তে হবে এটা ভাবা কঠিন। বিশেষ করে এই এলাকাটাই যখন কুখ্যাত দুষ্কৃতীদের আখড়া। আমরা তাই স্থানীয় দুষ্কৃতীদের গতিবিধির উপরে নজর রাখছি।’’ তবে আর এক পক্ষের মতে, এই ধরনের ‘অপারেশন’ করার মতো ক্ষমতা আছে যে দুষ্কৃতীদের তাদের বেশির ভাগই হয় জেলে না হয় এলাকা ছাড়া। বাকি যারা এখনও এলাকায় আছে তারা এই কাজে কতটা যোগ্য তা নিয়ে সন্দেহ আছে। তদন্তকারী এক গোয়েন্দার কথায়, ‘‘রানাঘাটে সন্ন্যাসিনীকে ধর্ষণের ঘটনায় স্থানীয় দুষ্কৃতীরা তো কিছুই জানত না। তাই এখনই এই বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না।’’

বুধবার দুপুরেই জেলা পুলিশের কর্তাদের পাশাপাশি ঘটনাস্থল ঘুরে গিয়েছেন রাজ্য পুলিশের মুর্শিদাবাদ রেঞ্জের ডিআইজি কল্লোল গনাই, আইজি (দক্ষিণবঙ্গ) ও আইজি (সিআইডি)। বুধবার রাতেই এই খুনের ঘটনার তদন্তভার তুলে দেওয়া হয় সিআইডির উপরে। কিন্তু তার পরেও এত দিনে অভিযুক্তদের গ্রেফতার তো দূরের কথা এখনও পর্যন্ত খুনের আসল কারণই জানতে পারল না গোয়েন্দারা। পুরো ঘটনাটাই তাদের কাছে এখনও পর্যন্ত ধোঁয়াশাই রয়ে গিয়েছে।

সিআইডির এক কর্তার কথায়, ‘‘এখনও পর্যন্ত তদন্তের তেমন অগ্রগতি না হওয়ার অন্যতম কারণ হল এই ঘটনায় এক সঙ্গে বেশ কয়েকটি ‘অ্যাঙ্গেল’ উঠে আসছে। ফলে আমাদের প্রাথমিক ভাবে সব কটি দিকই খতিয়ে দেখতে হচ্ছে। যার মধ্যে এমনও দিক আছে যেটা খুবই স্পর্শকাতর। ফলে খুবই সাবধানে এগোতে হচ্ছে।’’ বৃহস্পতিবার চন্দ দম্পতির ছেলে রুদ্রাশিসকে থানায় ডেকে দীর্ঘ সময় জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল পুলিশ। শুক্রবার রুদ্রাশিস ও জয়ন্তীদেবীর প্রথম পক্ষের দুই মেয়েকেও জি়জ্ঞাসাবাদ করেছে।

Investigation police murder case Krishnanagar CID IG
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy