Advertisement
E-Paper

নিঃশব্দে উতরে গেল পুলিশ

জেলায় শব্দবাজির মূল আঁতুড় বলে পরিচিত গাংনাপুর প্রায় বাজিশূন্য হয়ে যেতেই পাল্টে গিয়েছে ছবিটা। তবে তার সঙ্গে ক্রমশ পাল্টাতে থাকা মানসিকতার কথাও ধরতে হবে। কেননা ঠারেঠোরে শব্দবাজি বিক্রেতারাও জানিয়েছেন, চকলেট  বোমা কেনার মত খরিদ্দারও বেশি পাননি।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৮ ০৭:০০

পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি ঠিকই। কিন্তু তবুও দীপাবলিতে শব্দবাজির দাপাদাপি এ বার অনেকটাই থমকে গেল নদিয়ায়।

তার একটা কারণ যদি হয় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ও পুলিশের সক্রিয়তা, আর একটা বড় কারণ পুজোর মুখেই গাংনাপুরে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ ও তার পরে অবৈধ বাজি ধরতে নানা কারখানায় খানাতল্লাশ। এই জেলায় শব্দবাজির মূল আঁতুড় বলে পরিচিত গাংনাপুর প্রায় বাজিশূন্য হয়ে যেতেই পাল্টে গিয়েছে ছবিটা। তবে তার সঙ্গে ক্রমশ পাল্টাতে থাকা মানসিকতার কথাও ধরতে হবে। কেননা ঠারেঠোরে শব্দবাজি বিক্রেতারাও জানিয়েছেন, চকলেট বোমা কেনার মত খরিদ্দারও বেশি পাননি।

তবে অন্য বারের তুলনায় কম হলেও কিছু এলাকায় রাত বাড়তেই বোমের উৎপাত শুরু হয়েছে। সেই তালিকায় আছে রানাঘাট, ধানতলা, চাকদহ ও গাংনাপুর। রাত ৮টার পরে কৃষ্ণনগর শহরেও মাঝে-মধ্যে বোম ফাটার শব্দ শোনা গিয়েছে। তবে শহরের মানুষই বলছেন, সেটা অন্য বারের তুলনায় প্রায় কিছুই নয়।

কয়েক বছর ধরেই শব্দবাজির উপরে নিয়ন্ত্রণ আনতে সক্রিয় হতে শুরু করেছিল জেলা পুলিশ-প্রশাসন। ধরপাকড়ও চলছিল। তার মধ্যেই গাংনাপুরে বাজি কারখানায় তুবড়ি তৈরির সময়ে বিস্ফোরণে দু’জনের মৃত্যু ঘটে। তল্লাশি ও ধরপাকড়ের ভয়ে পালিয়ে যান বাকি বেশির ভাগ কারখানার মালিক। সে সব কারখানা এখনও ঝাঁপ-বন্ধ। তাতে পুলিশের কাজটা সহজ হয়ে গিয়েছে।

তবে শব্দে লাগাম পরানো গেলেও জেলা জুড়ে দূষণ হল বিস্তর। সেই দূষণ কমানো তো পরের কথা, কতটা দূষণ হল তা মাপার পরিকাঠামো পর্যন্ত জেলায় নেই। বেশির ভাগ জায়গাতেই সন্ধ্যে নামার পরেই তুবরি, রংমশাল, রকেট জ্বলতে শুরু করে। শব্দবাজির তুলনায় এই সব আলোর বাজি থেকে ধোঁয়া বেরোয় ঢের বেশি। ফলে দূষণের মাত্রাও ঢের বেশি বেড়ে গিয়েছে। এবং এ ক্ষেত্রে পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা কার্যত ঠুঁটো জগন্নাথের।

আদালতের নির্দেশ ছিল, বাজি পোড়াতে হবে রাত ৮ থেকে ১০টার মধ্যে। তার আগে বা পরে পোড়ানো যাবে না। সেই নির্দেশকে কিন্তু আমল দেননি অনেকেই। সন্ধে থেকেই বাজি পোড়ানো শুরু হয়েছে, চলেছে অনেক রাত পর্যন্ত। প্রায় সর্বত্রই পুলিশের গাড়ি টহল দিয়েছে ঠিকই। বিভিন্ন এলাকায় সিভিক ভল্যান্টিয়ারদেরও মোটরবাইক নিয়ে চক্কর দিতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পুলিশের গাড়ি চলে যেতেই ফের শুরু হয়েছে বাজি পোড়ানো। রাত ১০টার পরে শেল ও শব্দবাজির উৎপাত বরং বেড়েছে। বিশেষত জেলার দক্ষিণে— রানাঘাটে, ধানতলায়, চাকদহে।

কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নিষেধ সত্ত্বেও কী ভাবে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে শব্দবাজি ফাটানো সম্ভব হল? জেলার পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার বলেন, “শব্দবাজি তো পুরোপুরি নিষিদ্ধ নয়। ৯০ ডেসিবেলের নীচে হলে ফাটানো যেতেই পারে।” তবে তাঁর মতে, “মানুষ সচেতন না হলে এ সব পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয়। আমরা চেষ্টা করেছিলাম, শব্দবাজির উৎসমুখ বন্ধ করে দিতে। তার জন্য প্রচুর ধরপাকড় হয়েছে।”

প্রতি বছরই কালীপুজোর রাতে মদ খাওয়া থেকে শুরু করে বাজি পোড়ানো নিয়ে নানা রকম গোলমাল হয়। এ বছর সেই তুলনায় শান্তই ছিল জেলা। পুলিশ জানায়, নানা কারণে গোটা জেলায় ৮৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার মধ্যে ‘প্রিভেনটিভ অ্যারেস্ট’ অর্থাৎ গোলমাল করতে পারে এই সন্দেহে আগাম গ্রেফতারও আছে। পুলিশ জানায়, কালীপুজোর রাতে জেলার কোথাও বড় কোনও গন্ডগোলের খবর নেই।

এ বারের মতো ফাঁড়া কেটেছে ভালয়-ভালয়।

Environment Pollution Fire Crackers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy