Advertisement
E-Paper

শাসকের হয়ে পুলিশি তাণ্ডব, নালিশ বামের

পুলিশের বিরুদ্ধে দলীয় নেতাকর্মীদের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ আনল সিপিএম এবং কংগ্রেস। শনিবার এসডিপিও (জঙ্গিপুর)-এর কাছে এই অভিযোগ জানিয়েছে সিপিএম।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৬ ০১:৩৩

পুলিশের বিরুদ্ধে দলীয় নেতাকর্মীদের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ আনল সিপিএম এবং কংগ্রেস। শনিবার এসডিপিও (জঙ্গিপুর)-এর কাছে এই অভিযোগ জানিয়েছে সিপিএম।

অভিযোগ, তৃণমূলে যোগ দিয়েও ফিরে আসা সিপিএম কর্মীরা সুতি ১ ব্লকের বংশবাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার তোড়জোড় শুরু করেছিলেন। সেই আক্রোশেই সিপিএম সদস্যদের বাড়িতে চড়াও হয়ে মারধর ও ভাঙচুর করা হয়।

বংশবাটি গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট ১৪ জন সদস্য রয়েছেন। তার মধ্যে সিপিএমের ৫ জন, আরএসপির ২ জন, কংগ্রেসের ৩ জন, তৃণমূলের ৩ জন এবং বিজেপির ১ জন ছিলেন। পঞ্চায়েত প্রধান হন সিপিএমের খুকি রাজবংশী। গত ২৯ মে প্রধান-সহ বাম ও কংগ্রেসের মোট ৮ জন সদস্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। শুক্রবার সিপিএম, আরএসপি ও কংগ্রেসের কয়েক জন সদস্য দলে ফিরে আসেন। ন’জন সদস্য মিলে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে চেয়ে সইপত্র ১ ব্লক অফিসে জমা দিতে যান তাঁরা।

সিপিএমের অভিযোগ, তৃণমূলের সমর্থকেরা বাধা দিলে তাঁরা ফিরে যান। বিকেলে প্রধান খুশি রাজবংশী সুতির আহিরণ ফাঁড়িতে পুলিশের কাছে সিপিএমের সদস্য ও নেতাদের বিরুদ্ধে তৃণমূলে যোগ দেওয়া চার সদস্যকে অপহরণের অভিযোগ আনেন। তৃণমূল প্রধানের অভিযোগ পেয়েই তৎপর হয়ে ওঠে পুলিশ। তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে নিয়ে তারা শুক্রবার রাতে কায়েদুল ইসলাম নামে এক এক সিপিএম সদস্যের বাড়িতে চড়াও হয়। ভাঙচুর চালায়। সিপিএম সদস্যকে না পেয়ে তাঁর এক ভাই করিমুল ইসলাম ও তার স্ত্রী সাবেকা বিবিকে মারধর করে। তাঁরা দু’জনেই জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হন। তৃণমূলে যোগ দেওয়া অপহৃত ৪ সদস্যকে লুকিয়ে রাখা হয়েছে সন্দেহে আপেল শেখ নামে গ্রামের আর এক সিপিএম নেতার বাড়িতেও পুলিশ রাতে চড়াও হয়। সেখানেও ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ। শনিবার সকাল হতেই সিপিএমের নেতারা জঙ্গিপুরের এসডিপিও পিনাকী দত্তের কাছে অভিযোগ জানান।

সিপিএমের আহিরণ লোকাল কমিটির সম্পাদক অসিত দাস বলেন, ‘‘রাতের অন্ধকারে তৃণমূলে যোগ দেওয়া সদস্যদের পুলিশি পাহারায় তৃণমূল শিবিরে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। আর বিরোধী দলের সদস্যেরা যখন তৃণমূল থেকে বেরিয়ে এসে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে চাইছেন তখন তাঁদের বাড়িতে গিয়ে পুলিশ ভাঙচুর করছে। এমনকী আমাদের সদস্যেরা অনাস্থা প্রস্তাবের নোটিস নিয়ে ব্লক অফিসে ঢুকতে গেলেও তাদের হুমকি দেওয়া হয়েছে। ফলে শুক্রবার নোটিস জমা দিতে পারেননি তাঁরা।’’

ব্লক কংগ্রেস সভাপতি রজত দাসের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল পুলিশ দিয়ে জোর করে পঞ্চায়েতগুলি দখল করতে চাইছে। বংশবাটিতেও তা-ই ঘটেছে। যাঁরা তৃণমূলে গিয়েছিলেন, তাঁদের মোহভঙ্গ হয়েছে। তাঁরা ফের পুরোনো দলে ফিরে যেতেই শুরু হয়েছে পুলিশ ও তৃণমূল কর্মীদের যৌথ অত্যাচার।’’

সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া খুকি রাজবংশী অবশ্য বলছেন, ‘‘ইচ্ছের বিরুদ্ধে ওই চার সদস্যকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাই পুলিশের কাছে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেছি। তাঁদের জোর করে সই করিয়ে নিয়ে আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার চেষ্টা করছে সিপিএম ও কংগ্রেস।’’

যাঁদের অপহরণ করা হয়েছে বলে বলা হচ্ছে তাঁদের দু’জন উত্তরা মাঝি ও রমজান শেখ অবশ্য জানান, তাঁরা স্বেচ্ছায় অনাস্থা প্রস্তাবে সই করেছেন। এটা অপহরণের কোনও ঘটনাই নয়। যদি তা ঘটত তবে তাঁদের পরিবারের লোকজন অভিযোগ দায়ের করতেন। তাঁরা সকলেই একসঙ্গে রয়েছেন এবং ভাল রয়েছেন। পরিবারের সঙ্গেও তাঁদের যোগাযোগ রয়েছে।

এসডিপিও (জঙ্গিপুর) পিনাকী দত্ত অবশ্য সিপিএম কর্মীদের বাড়িতে ঢুকে পুলিশের ভাঙচুর-মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘বংশবাটি পঞ্চায়েতের প্রধান পুলিশের কাছে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেছেন। সিপিএম নেতারা পাল্টা অভিযোগ জানিয়েছেন। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

LF tmc
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy