Advertisement
১৯ মে ২০২৪

‘বেহিসাবি’ দেখলেই আটক টাকা

এ পর্যন্ত প্রায় ১ লক্ষ চার হাজার টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলায়।

সামসুদ্দিন বিশ্বাস
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৯ ০২:৩০
Share: Save:

ভোটের ঢাকে কাঠি পড়তে উদ্ধার হতে শুরু করল টাকা। কিসের টাকা? যে টাকার কোনও হিসেব নেই। প্রয়োজনীয় নথিপত্র ছাড়া এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা নিয়ে যাওয়ার সময় সে টাকা আটক করেছে নির্বাচন কমিশনের কাজে যুক্ত থাকা ফ্লাইং স্কোয়াডের সদস্যরা।

নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশের পর থেকে এ পর্যন্ত ১৭ লক্ষ ৭৪ হাজার টাকা উদ্ধার হয়েছে। প্রয়োজনীয় বৈধ নথিপত্র দেখাতে না পারায় ওই টাকা উদ্ধার করা হয়েছে বলে কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, গত বিধানসভা নির্বাচনে এই ধরনের হিসেব বহির্ভূত ২৭ লক্ষ ১০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছিল। এ বারে ভোট ঘোষণা হতেই জেলা প্রশাসনের নজরদারি শুরু হয়েছে। অন্য দিকে ভোট ঘোষণা থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১ লক্ষ চার হাজার টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলায়।

শুধু হিসেব বহির্ভূত টাকা বা জাল নোট নয়, এই ক’দিনে জুয়ার আসর থেকে ৫৬ হাজার ৩৭৫ টাকা উদ্ধার হয়েছে। ৩৮৫ কেজি গাঁজা, ১৯ কেজি আফিমও উদ্ধার করা হয়েছে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক পি উালাগানাথন বলেন, ‘‘জেলা জুড়ে ফ্লাইং স্কোয়াডের দল ঘুরে বেড়াচ্ছে। ইতিমধ্যে তারা প্রায় ১৭ লক্ষ ৭৪ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে। টাকা নিয়ে যাওয়ার সময় প্রয়োজনীয় নথি দেখাতে না পারায় তা বিভিন্ন জনের কাছে উদ্ধার করা হচ্ছে।’’

নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশের সময় নির্বাচন কমিশন হিসাব বহির্ভূত বা বেআইনি লেনদেনর উপর কড়া নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছে। বৈধ নথিপত্র ছাড়া টাকা নিয়ে বেরলে তা আটক করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া কারও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১০ লক্ষ টাকার বেশি লেনদেন হলে তার উপর নজরদারি চালানোর পাশাপাশি সেই অর্থের উৎস সম্পর্কে খোঁজ নিতে বলা হয়েছে। সেই টাকার উৎস্য দেখাতে না পারলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলায় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এখনও পর্যন্ত পর্যাপ্ত নথি ছাড়া এই ধরণের বড় অর্থ লেনদেনের বিষয় নজরে না এলেও ফ্লাইং স্কোয়াড জেলাজুড়ে নগদ টাকা উদ্ধার করেছে। কান্দি, খড়গ্রাম, ডোমকল-সহ জেলা জুড়ে অভিযান চালিয়ে ওই টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশের পর থেকে এ পর্যন্ত মুর্শিদাবাদ লোকসভা এলাকা থেকে ৪ লক্ষ ১২ হাজার, বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্র এলাকা থেকে ৭ লক্ষ ২৫ হাজার এবং জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্র এলাকা থেকে ৭ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। সেই টাকা ধরা পড়ার পর পর্যাপ্ত বৈধ নথিপত্র দেখাতে না পারায় আটক করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর নগদ ৫০ হাজারের উপরে টাকা নিয়ে গেলে নজরদারীর আওতায় চলে আসছে। প্যান কার্ড, ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলার প্রয়োজনীয় নথি দেখতে চাওয়া হচ্ছে। নথি দেখাতে না পারলে সেই অর্থ বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, অনেক সময় হিসেব বহির্ভূত টাকা ভোটের কাজে লাগানো হয়। ব্যাঙ্কের মাধ্যমে সেই টাকা পাঠালে সহজেই ধরা পড়ে যাওয়ার ভয় থাকে। তাই নগদ টাকা পাঠানো হয়। ভোটের সময় সেই নগদ টাকাই রাজনীতির কারবারিরা কাজে লাগান বলে অভিযোগ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE