একের পর এক টেলিফোন এক্সচেঞ্জ থেকে লুঠ হয়ে যাচ্ছে ব্যাটারি, মালপত্র থেকে শুরু করে নানা জিনিস। কিন্তু, কোনওটিরই কিনারা করতে পারছে না জেলা পুলিশ! রঘুনাথগঞ্জের বাড়ালা টেলিফোন এক্সচেঞ্জে লুঠের পর ৪৮ ঘণ্টা কেটে গেলেও যথারীতি আতান্তরে পুলিশ। মোহনার কান্দি থেকে শুরু করে নবগ্রামের চাণক কোনও ঘটনাতেই কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে বাড়ছে ক্ষোভ।
প্রতিটি ঘটনাতেই অবশ্য নিয়ম মেনে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে বাড়ালা এক্সচেঞ্জের লুঠ ছাড়াও গত এক মাসে মোহনা কান্দি, নবগ্রামের চাণক ও লালগোলার বাখরপুরেও একই কায়দায় দুষ্কৃতীরা লুঠপাঠ চালায় টেলিফোন এক্সচেঞ্জগুলিতে। মাস ছয় আগেও সামশেরগঞ্জের বাসুদেবপুরের এক্সচেঞ্জটি নৈশ প্রহরীর মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে লুঠ করা হয়। কেন কোনও ঘটনারই কিনারা করা যাচ্ছে না? মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার সি সুধাকর শুধু বলেন, “এ ব্যাপারে খোঁজ খবর চলছে। ঘটনায় জড়িত সকলেই বহিরাগত দুষ্কৃতী বলে মনে করা হচ্ছে।” পুলিশের ব্যর্থতার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।
তবে উদ্বেগ গোপন করছেন না টেলিকম দফতরের কর্তারা। কারণ, এর জেরে দফতরের আর্থিক ক্ষতির চেয়েও সমস্যা হচ্ছে এলাকায় অচল হয়ে পড়া টেলি-সংযোগ ব্যবস্থা চালু করার ক্ষেত্রে। মুর্শিদাবাদ টেলিকম ডিভিসনের সহকারি জেনারেল ম্যানেজার সাধনকুমার মণ্ডল বলেন, “এখনও পর্যন্ত লুঠ হওয়া চারটি এক্সচেঞ্জের কোনওটিই চালু করা যায়নি। কেননা টেলিকম দফতরে ব্যাটারি সরবরাহ এখনও বন্ধ রয়েছে। তবে মোবাইল পরিষেবা চালু করে দেওয়া হয়েছে।” দফতরের এক কর্তা আবার মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ছোট বড় কোনও এক্সচেঞ্জেই সিসিটিভি ক্যামেরা নেই। তিনি বলেন, “তা থাকলে এ সবে ক্ষেত্রে দুষ্কৃতীদের সহজেই চিহ্নিত করা যেত।’’
তবে গ্রামীণ এক্সচেঞ্জগুলিতে দুষ্কৃতী হানার ফলে শহরাঞ্চলের বড় এক্সচেঞ্জগুলিতে পাহারাদারের সংখ্যা বাড়িয়ে তিন করা হয়েছে। রক্ষীদের বলা হয়েছে, রাতের বেলায় এক জায়গায় না থেকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে। রঘুনাথগঞ্জ থানার বাড়ালায় এক্সচেঞ্জটি রয়েছে ঘন বসতি এলাকায়। সেখানে গাড়ি ভিড়িয়ে, পিস্তল উঁচিয়ে প্রায় ১০ ফুটের প্রাচীর টপকে যে ভাবে এক্সচেঞ্জের ভিতরে ঢুকেছে জনা আটেক সশস্ত্র দুষ্কৃতী, তাতে ত্রস্ত এলাকাবাসী। এক্সচেঞ্জ থেকে ব্যাটারি, মালপত্র লুঠ করেছে দুষ্কৃতীরা। স্থানীয় বাসিন্দা কৃষ্ণপদ ঘোষ বলেন, ‘‘লুঠের ঘটনার সময়ও দীর্ঘক্ষণ এলাকায় বিদ্যুত্ ছিল না। চিত্কার-চেঁচামেচি শুনে আমরা যখন বেরিয়ে আসি, ততক্ষণে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে গিয়েছে।” এলাকার বাসিন্দা তারাসাধন মুখোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, সংলগ্ন ওই এলাকায় সারা রাত গাড়ি, লোকজন চলাচল করে। পুলিশের টহলদারি গাড়িও যাতায়াত করে। তাঁর প্রশ্ন, “পুলিশি নজর এড়িয়ে গাড়ি নিয়ে দুষ্কৃতীরা চম্পট দিল কোন পথে?” কবে দুষ্কৃতীরা গ্রেফতার হয়, সেই অপেক্ষাতেই রয়েছেন বাসিন্দারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy