ক’দিন ধরেই গ্রামের কয়েক জন কিশোরের মতিগতি দেখে সন্দেহ হয়েছিল পুলিশের। খোঁজ নিয়ে তারা জানতে পারে, গ্রামে মাদক ঢুকছে। আর সেই মাদকেই আসক্ত হয়ে পড়ছে কেউ কেউ। গ্রামেরই এক যুবকের উপর নজরদারি শুরু করে পুলিশের একটি দল।
রবিবার সন্ধ্যায় সাগরদিঘির রতনপুর ও দোহালের মাঝে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে এক কালভার্টের কাছ থেকে বমাল ধরা পড়ল বোখারার নোকিম শেখ ওরফে কালু। পুলিশ জানিয়েছে, তার হাতে থাকা ব্যাগ থেকে মিলেছে ৫০০ গ্রাম হেরোইন। যার বাজার দর প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ টাকা।
গত বছর আগ্নেয়াস্ত্র-সহ নবগ্রাম পুলিশের হাতে ধরা পড়ে নোকিম জেলও খেটেছে বহু দিন। জেরায় পুলিশ জানতে পেরেছে, বছর তিনেক থেকে মাদকের কারবার চালাচ্ছিল। মালদহের কালিয়াচক থেকে মাদক এনে এলাকার ছেলেদের কাছে বিক্রির পাশাপাশি বীরভূম ও আশপাশেও মাদক বিক্রি করত সে। কিন্তু এত দিন তার নাগাল পায়নি পুলিশ।
মুর্শিদাবাদে মাদক ও আগ্নেয়াস্ত্র আসে মূলত মালদহের কালিয়াচক থেকে। এক সময় মাদকের রমরমা কারবার ছিল লালগোলায়। গত বছর দেড়েকে লালগোলার সে কারবারে অনেকটাই ভাটা পড়েছে। কারবারিরাও কেউ জেলে, কেউ পলাতক। পুলিশের সন্দেহ, লালগোলার পলাতক কারবারিরাই ফের কালিয়াচক থেকে সেই মাদকের ব্যবসা চালাতে হাত মিলিয়েছে কালিয়াচকের দুষ্কৃতীদের সঙ্গে।
পুলিশ জানায়, নোকিম এ দিন হেরোইন নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। কোনও নির্দিষ্ট বাসস্ট্যান্ডে সে দাঁড়ায়নি। বাড়ির কাছেই মোরগ্রাম সেতুর বাসস্ট্যান্ড। একটু দূরে দোহাল, অন্য পাশে রতনপুর। কিন্তু বাসস্ট্যান্ডে লোকজনের ভিড় এড়াতে সে নির্জন এক কালভার্টের কাছে অপেক্ষা করছিল। সেখানে বাস দাঁড়ায় না। কিন্তু নোকিম বুঝতে পারেনি, পুলিশ তার পিছু নিয়েছে।
এ দিন কথা ছিল, বহরমপুর থেকে এই হেরোইন নিতে আসবে দু’জন ক্রেতা। কিন্তু তারা সময়ে আসেনি। পুলিশের ছক ছিল, সেই ক্রেতারা এলে তাদেরও ধরা হবে। কিন্তু তারা আসতে দেরি করছিল। পুলিশও তাই আর সময় নষ্ট না করে নোকিমকেই হাতেনাতে ধরে ফেলে।
জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ধৃত মাদক কারবারিকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। যাদের নাম পাওয়া গিয়েছে তাদেরও অবিলম্বে গ্রেফতার করা হবে।”