হাই: প্রশাসনিক বৈঠকে মুকুল রায়। কৃষ্ণনগরে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য
আশঙ্কা সত্যি হল।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে (সিএমওএইচ) কড়া ধমক দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ধমক খেলেন পুলিশ সুপারও।
শুক্রবার কৃষ্ণনগর রবীন্দ্রভবনে শুক্রবার দুপুর ২টোয় বৈঠক শুরুর কথা থাকলেও তা এগিয়ে আসে বেলা সাড়ে ১২টায়। প্রথমেই তোপের মুখে পড়েন সিএমওএইচ তাপস রায়।
সম্প্রতি রানাঘাটের ‘এভিনিউ’ নার্সিংহোমে দুই রোগীর মৃত্যুর কথা তুলে মমতা জানতে চান, “তদন্ত হবে বলেছিলেন। তার কী হল?” কর্তা বলেন, “টিম গিয়েছিল নার্সিংহোমে। প্রাথমিক রিপোর্ট পেয়েছি।”
মুখ্যমন্ত্রী: “কত দিন ধরে তদন্ত চলবে? কত দিন লাগে?” তার পরেই ফের প্রশ্ন, “চিকিৎসকদের গাফিলতি প্রমাণ হয়েছে কি হয়নি? কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?” তাপসবাবু ঠিক মতো উত্তর দিতে পারছেন না দেখে বিরক্ত মুখে মমতা বলেন, “আমতা আমতা করে বলতে হবে না। রিপোর্ট পড়ে আসতে হয়।” এর পরেই জেলাশাসক সুমিত গুপ্তর কাছে মমতা জানতে চান, “তদন্ত শেষ করে ব্যবস্থা নিতে কত দিন লাগবে?” উঠে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “এক সপ্তাহের মধ্যে ব্যবস্থা নিয়ে নেব ম্যাডাম!”
মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, “যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই নার্সিংহোমের কেউ এসেছেন? উঠে দাঁড়ান!” কেউ উঠে না দাঁড়ানোয় ফের তাপসবাবুকে প্রশ্ন, “ওদের আসতে বলেছিলেন?” তিনি বলেন, “বলেছিলাম। কিন্তু আসেনি।” মুখ্যমন্ত্রী: “কেন আসেনি? ওদের কত বেড?” তাপসবাবু: “৩০টি।” মমতা বলেন, “তদন্ত করে ব্যবস্থা নিন।”
জেলায় একের পর এক খুন হতে থাকায় মুখ্যমন্ত্রী চেপে ধরেন পুলিশ কর্তাদেরও। মমতা বলেন, “কয়েক দিনের মধ্যে পাঁচ-ছ’টা খুন হয়েছে। বগুলায় খুন হল আমাদের এক জন। সেই দিনই ছুটিতে গেলেন পুলিশ সুপার। সিকিউরিটি গার্ডও ছুটিতে ছিল। সে কি তা হলে জানত? রানাঘাটেও একটা ভাল ছেলে খুন হল। তেহট্ট থেকে হরিণঘাটা, একের পর এক খুন হচ্ছে। কোনও জেলায় এমন নেই। কেন এমন হল?”
যে সব থানা এলাকায় খুন হয়েছে সেগুলির ওসিদের দাঁড়াতে বলেন মমতা। হাঁসখালি, চাপড়া, রানাঘাট, নবদ্বীপ, তাহেরপুর— একে একে জানতে চান, কেন খুন হল? পুলিশ কী ব্যবস্থা নিয়েছে?
হাঁসখালিতে তৃণমূল নেতা দুলাল বিশ্বাসের খুনের কিনারা না হওয়ায় রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থকেও ধমক দেন মমতা। ডিজি বলেন, নদিয়ার সীমান্তে ন’টি থানায় ডাকাতি কমেছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কিন্তু খুন বেড়েছে। দু’শো টাকায় খুন করে চলে যাচ্ছে। পুলিশ জানে না, এটা হয় না।” সিআইডি যে তদন্ত করছে, তাদের কত দিন সময় লাগবে, তা-ও তিনি জানতে চান।
জেলাশাসককে তুলে মমতা প্রশ্ন করেন, কেন একশো দিনের কাজে গত বারের মতো অগ্রগতি হয়নি। জেলাশাসক জানান, টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। রানাঘাট-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মিতা পোদ্দার উঠে দাঁড়িয়ে বলেন, এই প্রকল্পের ব্যাপারে তাঁরা কিছুই জানতে পারেন না। মমতা বলেন, “পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকেও সবটা জানাতে হবে।”
নদিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি উজ্জ্বল বিশ্বাস আগামী ৮ মে মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে গিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy