Advertisement
E-Paper

‘ডিজি’ পরিচয় দিয়ে প্রতারণা

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পলাশ মণ্ডল নামে ওই ব্যক্তি কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা। অভিযোগ, এর আগেও ওই ব্যক্তি একাধিক বার এ ভাবে প্রতারণা করেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২০ ০৫:০৫
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

ফায়ার ব্রিগেডের ডিজি পরিচয় দিয়ে কৃষ্ণনগরের ফায়ার স্টেশনের আধিকারিকদের থেকে দু’লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পলাশ মণ্ডল নামে ওই ব্যক্তি কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা। অভিযোগ, এর আগেও ওই ব্যক্তি একাধিক বার এ ভাবে প্রতারণা করেছে। জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, “এই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিক বার বড় কোনও আমলা বা মন্ত্রীর নাম করে ফোন করে একাধিক জেলার আধিকারিকদের কাছ থেকে প্রতারণা করে টাকা হাতানোর অভিযোগ আছে ওই যুবকের বিরুদ্ধে। একাধিক বার তাকে বিভিন্ন জেলার পুলিশ গ্রেফতারও করেছে।”

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মোটামুটি ২০০৭-’০৮ সাল থেকে এ ভাবে আমলা, মন্ত্রী সেজে ফোন করে টাকা হাতানো শুরু করে পলাশ। এখনও পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে রাজ্যে ২৬টির মতো মামলা দায়ের হয়েছে। আগেও সে গ্রেফতার হয়েছে বেশ কয়েকবার। প্রতি বারই সে একই কারণে গ্রেফতার হয়, আর জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর আবারও একই কাজ করে। শেষবার তাঁকে গ্রেফতার করেছিল বারাসত থানার পুলিশ। মাস তিনেক আগে সে জেল থেকে ছাড়াও পায়। তারপর আবার সে প্রতারণা করে টাকা হাতানো শুরু করে।

পলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৩ জুলাই সকালে পলাশ প্রথমে দমকলের ব্যারাকপুর ডিভিশনাল কন্ট্রোল রুমে ডিজি পরিচয় দিয়ে ফোন করে কৃষ্ণনগর ফায়ার স্টেশনের ওসির খোঁজ করে। কন্ট্রোল রুম থেকে কৃষ্ণনগর ফায়ার স্টেশনের ওসি শক্তিরঞ্জন দে’কে ফোন করে জানানো হয় যে ‘ডিজি’ তাঁর খোঁজ করছেন। পলাশের দেওয়া নম্বরে ফোন করতে বলা হয় তাঁকে।

শক্তিরঞ্জন বলেন, “প্রথমে আমার ও স্টেশনের বিস্তারিত খোঁজ নেয়। কাজ করতে গিয়ে কি কি পরাকাঠামোগত সমস্যা হচ্ছে জানতে চায়। আমি সবটাই বলি।” তিনি বলেন, “আমার বিষয়ে খুঁটিনাটি সব খবরই রাখে। আমি যে একটা রক্তদান শিবিরের প্রধান অতিথি ছিলাম সেটার কথা বলে আমার অনেক প্রশংসা করে। বলে যে জেলাশাসক নাকি তাকে এটা জানিয়েছেন। এমন ভাবে কথা বলছিল, একটুও সন্দেহ হওয়ার কথা না।”

ওসি সেই সময় বারাসতে যাচ্ছিলেন। সেটা শুনে ফোনের ও’প্রান্ত থেকে তাঁকে বলা হয় যে স্টেশনের চার্জ যাকে দিয়ে যাচ্ছেন তিনি যেন ফোন করে কথা বলেন। সেই মতো দায়িত্বে থাকা সাব-অফিসার বিশ্বজিৎ মণ্ডল ফোন করলে তাঁকে বলা হয় যে, ‘ডিজি’র বন্ধুর এক আত্মীয় কৃষ্ণনগরে থাকেন। তাঁর বাবা ক্যানসারে মারা গিয়েছেন। শ্রাদ্ধের জন্য দু’লক্ষ টাকা সেই বন্ধুর হয়ে দিতে হবে ‘ডিজি’কে। তাঁরা যেন আপাতত সেই দু’লক্ষ টাকা দিয়ে দেন। আর ডিজি-র হয়ে দিতে হবে দু’হাজার টাকা।

পাশাপাশি ফোনে জানানো হয়, ১৫ জুলাই ‘ডিজি’ কৃষ্ণনগরে যাবেন এসপি-র সঙ্গে বৈঠক করতে, তখন টাকাটা ফিরিয়ে দেবেন। পলাশ মণ্ডল নামে এক ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে সেখানে টাকা ফেলতে বলা হয়। দমকল বাহিনীর কর্মীদের সমবায় থেকে টাকা তুলে সেই টাকা অ্যাকাউন্টে দিয়েও দেওয়া হয়। কিন্তু ওসির মনে সন্দেহ উঁকি মেরেছিল। তাই পরদিন তিনি ভাল করে খোঁজ নিতে ব্যাঙ্কে যান।

ব্যাঙ্কে গিয়ে জানতে পারেন যে, পলাশের বাড়ি কৃষ্ণনগরের নির্মলনগর এলাকায়। সেখানে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন যে ওই ব্যক্তি অনেক দিন আগে এলাকা ছাড়া এবং সে প্রতারক। পাশাপাশি তিনি দফতরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন যে ১৫ জুলাই কৃষ্ণনগরে আসার কোনও কর্মসূচি নেই ডিজির। এরপরই গোটা বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায় সকলের কাছে। কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। শক্তিরঞ্জন বলেন, “অনেক শিক্ষা হল। আসলে এমনটা যে হতে পারে আমরা সেটা কল্পনাই করতে পারিনি।”

Cheating Fire Brigade
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy