মান্নান হোসেন ও সৌমিক হোসেন
টান টান পিচ রাস্তার এ মুড়ো-ও মুড়ো সমানে বেজে চলেছে দু’টো মাইক। শেষ বিকেলের প্রচারে তৃণমূলের ডাকসাইটে দুই নেতা এ ওর কথা যেন একেবারে গিলে খাচ্ছে।
নির্বাচনী প্রচার ইস্তক এমন হাঁকডাকে অবশ্য অভ্যস্থ হয়ে গিয়েছে ডোমকল। দলনেত্রী তাঁর প্রশাসনিক বৈঠকটা ডোমকলে টেনে আনার পরে হই চইটা একেবারে আসমান ছুঁয়েছে। দলের মহাসচিব থেকে তাবড় সাংসদ, মেজ মন্ত্রী থেকে দোর্দন্ডপ্রতাপ সংগঠক— ডোমকল না ছুঁয়ে আচমন সারেননি। কিন্তু সেই তালিকায় তিনি কোথায়?
বিরোধীরা মুচকি হাসছেন, উড়ে আসছে টিপ্পনী— ‘হ্যাঁ গা, তুমার বাবা কোথায়?’ গো-বলয়ের পিতা-পুত্রের মান-অভিমান পালাটা মনে করিয়ে দিচ্ছেন তাঁরা, ‘বাবার গোঁসা হয়েছে!’
পাঁচ বছর আগে, উত্তর প্রদেশ নির্বাচন, সব ফেলে, ছেলে অখিলেশের কেন্দ্রেই অষ্টপ্রহর পড়ে ছিলেন মুলায়ম সিংহ যাদব। ছবিটা অবিকল মিলে গিয়েছিল গত বছর। কংগ্রেসের এক জেলা নেতা ধরিয়ে দিচ্ছেন— ‘‘মনে নেই, গত বিধানসভা নির্বাচনে ডোমকল ছেড়ে নড়তেই চাইছিলেন না তিনি। দলে তা নিয়ে ক্ষোভ কম হয়নি।’’ সে বার বহরমপুরের ঠিকানা ভুলে সপরিবার ডোমকলেই পড়ে ছিলেন তিনি। সময়ে অসময়ে দলীয় প্রার্থী, পুত্র সৌমিক হোসেনকে ডেকে ছোট-মেজ পরামর্শও দিয়ে গিয়েছেন অনর্গল। ‘পিতাশ্রীর’ এমন পুত্র স্নেহ ভোটের পর পর্যালোচনা সভায় কম সমালোচনার মুখে পড়েনি। সে সভায় হরিহরপাড়ার দলীয় বিধায়ক নিয়ামত শেখকে সরাসরি বলতেও শোনা গিয়েছিল— ‘‘জেলা সভপতি তো শুধু একটি কেন্দ্রই চিনেছিলেন, ডোমকল। ছেলেই সব, বাকিরা কেউ নয়!’’ আর, এ বার?
সৌমিক বলছেন, ‘‘জানি, সবাই এসেছেন, বাবাই আসতে পারেননি। কিন্তু বাবা আসবে কী করে, গুরুতর অসুস্থ। বহরমপুরের বাড়িতেই শয্যাশায়ী যে।’’
আর, ডোমকলের ‘মুলায়ম সিংহ যাদব’, মান্নান হোসেন, ধরা গলায় বলছেন, ‘‘নিজের ছেলের জন্য প্রচারে যাব না এটা হয়, অর্শের ব্যথায় নড়তে চড়তে পারছি না যে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy