Advertisement
E-Paper

আর কবে ফিরবে হুঁশ!

পুলিশ সুপার মুকেশ কুমারকে এ দিনও একাধিক বার ফোন করা হয়েছিল। তিনি ফোন ধরেননি। উত্তর দেননি এসএমএস ও হোয়াটসঅ্যাপেও

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৫২
বেলডাঙায়। নিজস্ব চিত্র।

বেলডাঙায়। নিজস্ব চিত্র।

নিয়ম ভাঙার নিয়মটা আর কবে বদলাবে? আতসবাজি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরেও বাস্তবে যা দেখা গেল, তার পরে প্রশ্নটা উঠছে প্রত্যাশিত ভাবেই!

সময়ের তোয়াক্কা না করে জেলার গাঁ-গঞ্জ-শহর জুড়েই দেদার পুড়ল আতসবাজি। নাগাড়ে দাপিয়ে বেড়াল শব্দবাজি। অভিযোগ, কোথাও পুলিশকে অভিযোগ জানিয়েও ফল হল না। কোথাও অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েও পুলিশ কিছুই খুঁজে পেল না। নিট ফল, উৎসবের আনন্দ ম্লান হয়ে গেল বেদম ধোঁয়া, তুমুল শ্বাসকষ্ট আর কান ঝালাপালা করা বিকট আওয়াজে।

বুধবার রাত ৮টা। ভগবানগোলার দয়ানগরে দোতলার ঘরে এক বছরের শিশুসন্তানকে নিয়ে বসেছিলেন অঙ্কিতা পোদ্দার। আচমকা শুরু হল শব্দবাজি ফাটানো। অঙ্কিতা বলছেন, ‘‘একটা করে শব্দবাজি ফাটছে আর ছেলেটা চমকে চমকে উঠেছে। কাঁদতে কাঁদতে ছেলেটা হাঁফিয়ে উঠেছে। অন্যকে কষ্ট দিয়ে কি আনন্দ হয়, বলুন তো? এই শব্দদূষণ বন্ধে সবাইকেই এ বার এগিয়ে আসা দরকার।’’

রাত সাড়ে ১১টা। বহরমপুরের খাটিকতলায় বাড়ির বারান্দায় দিব্যি খেলছিল বাড়ির পোষা কুকুর ডিউক। শব্দবাজি ফাটানো শুরু হতেই ঘরের ভেতরে ছুটে গিয়ে সে খাটের তলায় আশ্রয় নেয়। বাড়ির মালিক সুস্মিতা ভাদুড়ি দে বলছেন, ‘‘আনন্দের মানে যদি অন্যের ক্ষতি হয়, তবে সেটা বন্ধ হওয়া উচিত।’’ পুলিশকে জানালেন না কেন? সুস্মিতা বলছেন, ‘‘সব কিছু পুলিশ-প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এ ব্যাপারে সবার আগে আমাদের সচেতন হতে হবে। নইলে সামনে কিন্তু ভারী বিপদ!’’

পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের বহরমপুরের সভানেত্রী শিল্পী সেন বলছেন, ‘‘এ তো শুধু কালীপুজোর ব্যাপার নয়। পুজো, বিসর্জন, বিয়ে, নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে বাজি, উচ্চস্বরে বাজনা, মাইক, ডিজে— অত্যাচারের অন্ত নেই। এত প্রচার, সচেতনতা, নিষেধের পরে আর কবে লোকজনের যে হুঁশ ফিরবে, কে জানে!’’ তাঁর দাবি, ‘‘এ বারে বাজি পোড়ানোর বিষয়ে দেশের উচ্চ আদালতের রায়ে আশার আলো দেখেছিলাম। কিন্তু দেখলাম, সে সব কিছুই মানা হল না। ফলে এ বারেও পরিবেশ দূষিত হল। আগের মতোই।’’

পুলিশ সুপার মুকেশ কুমারকে এ দিনও একাধিক বার ফোন করা হয়েছিল। তিনি ফোন ধরেননি। উত্তর দেননি এসএমএস ও হোয়াটসঅ্যাপেও। তবে জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, নিষিদ্ধ শব্দবাজি রুখতে পুলিশ প্রথম থেকে তৎপর ছিল। জেলা জুড়ে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ শব্দবাজি বিক্রির অভিযোগে ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে দেড় লক্ষেরও বেশি শব্দবাজি। নিষিদ্ধ শব্দবাজি বিক্রির অভিযোগে বুধবার রাতে বহরমপুরের পুরনো হাসপাতাল এলাকা থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে দু’কুইন্টাল নিষিদ্ধ শব্দবাজি আটক করা হয়েছে। ধৃতদের বৃহস্পতিবার বহরমপুরে সিজেএমের এজলাসে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।

Environment Pollution Fire Crackers Sound Pollution
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy