Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Mahua Moitra

ক্ষমা চান মহুয়া, দাবি মিছিলের

ইতিমধ্যেই একাধিক টিভি চ্যানেল, একটি সংবাদপত্র এবং কয়েকটি নিউজ় পোর্টাল কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সংসদ মহুয়া মৈত্রকে ‘বয়কট’ করেছে।

সাংবাদিকদের প্রতিবাদ মিছিল। বুধবার, কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র

সাংবাদিকদের প্রতিবাদ মিছিল। বুধবার, কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২০ ০১:৫৬
Share: Save:

নদিয়া জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মহুয়া মৈত্রের ‘কুরুচিকর’ মন্তব্যের প্রতিবাদে কৃষ্ণনগরে মিছিল করলেন জেলার বিভিন্ন প্রান্তের সংবাদ কর্মীরা। দু’টি প্রেস ক্লাব এবং সংবাদ কর্মীদের দু’টি সংগঠন একযোগে এই মিছিলের ডাক দিয়েছিল। বিভিন্ন সংবাদপত্র, টিভি চ্যানেল, নিউজ় পোর্টালের কর্মীদের পাশাপাশি নদিয়া জেলা পত্রপত্রিকা পরিষদের সদস্যেরাও তাতে যোগ দেন।

ইতিমধ্যেই একাধিক টিভি চ্যানেল, একটি সংবাদপত্র এবং কয়েকটি নিউজ় পোর্টাল কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সংসদ মহুয়া মৈত্রকে ‘বয়কট’ করেছে। আরও কিছু সংবাদপত্র এবং চ্যানেলের কর্মীরা সে ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করছেন। মহুয়া যদি অবিলম্বে প্রকাশ্যে ক্ষমাপ্রার্থনা না করেন সে ক্ষেত্রে ইতিকর্তব্য স্থির করতে বুধবার মিছিলের পরেই ‘সমন্বয় কমিটি’ গঠন করেছেন প্রতিবাদে শামিল হওয়া সাংবাদিকেরা।

রবিবার গয়েশপুরে দলের কর্মিসভায় কর্মী-সমর্থকদের গোষ্ঠী বিক্ষোভের মুখে পড়ে মেজাজ হারান তৃণমূল সভানেত্রী। পরে কর্মিসভায় মাইকে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘কে এই দু’পয়সার প্রেসকে ভিতরে ডেকেছে?’ এই নিয়ে সমাজমাধ্যমে হইচই শুরু হলে সোমবারই প্রেস ক্লাব, কলকাতা মহুয়াকে ধিক্কার জানিয়ে অবিলম্বে মন্তব্য প্রত্যাহার করার আবেদন জানায়। মহুয়া টুইট করে জানান, এই ‘কু-কথা অথচ নির্ভুল কথা’ বলার জন্য তিনি ‘ক্ষমাপ্রার্থী’। সেই সঙ্গেই ২ পয়সার কয়েনের একটি ছবি দিয়ে তিনি জানিয়ে দেন, ‘মিম’(রঙ্গচিত্র/লেখা) সম্পাদনায় তাঁর ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে। এই তির্যক মন্তব্যে আগুনে ঘৃতাহুতি পড়ে।

মহুয়ার দাবি, তিনি আদৌ সংবাদমাধ্যমকে আক্রমণ করতে চাননি। বরং তাঁরই দলের যে সব ‘বদ লোকজন’ (ব্যাড এলিমেন্টস) গোষ্ঠী কোন্দলের সময়ে স্থানীয় কিছু ‘স্ট্রিঙ্গার’কে (‌কোনও সংবাদ প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করা অস্থায়ী কর্মী) সভাস্থলে ডেকেছিল, তাদের প্রতিই তিনি বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। তৃণমূলের অন্দরে এই সব ‘বদ’ লোক কারা এবং নেত্রীর বক্তব্য সম্পর্কে তাঁদের কী প্রতিক্রিয়া, তা এখনও জানা যায়নি। ঘটনাচক্রে, মহুয়া যখন ওই মন্তব্য করছেন তখন দু’টি প্রতিষ্ঠিত টিভি চ্যানেল এবং একটি সংবাদপত্রের কর্মীও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তবে প্রেস ক্লাব, কলকাতা তাঁর এই উক্তির নিন্দা করায় মহুয়া উল্টে তাদেরই সদস্যদের মানের অবনমনের ব্যাপারে সতর্ক হওয়ার উপদেশ দিয়েছেন।

এ দিন কৃষ্ণনগর ও কল্যাণী প্রেস ক্লাব, ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিয়ন অফ জার্নালিস্টস এবং ইন্ডিয়ান জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের ডাকে বেলা ১১টা নাগাদ কৃষ্ণনগর শহরের পোস্ট অফিস মোড় থেকে মিছিল শুরু হয়। সদর মোড় হয়ে মিছিল পৌঁছয় জেলাশাসকের দফতরের সামনে। সাংবাদিকদের প্রতিনিধিরা পেশাগত সম্মান ও নিরাপত্তার দাবিতে অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) শেখর সেনের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন। এর পরে বৈঠকে ‘সমন্বয় কমিটি’ গঠন করা হয়। সেই কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সুখেন্দু আচার্য বলেন, “আমাদের দাবি, কুরুচিকর মন্তব্যের জন্য সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা চান মহুয়া মৈত্র। তা না হলে আমরাও নিজেদের মতো করে পদক্ষেপ করব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mahua Moitra Media personnel protest rally
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE