Advertisement
E-Paper

‘কেউ ছুটবেন না’

 ২০১৬ সালের অগস্ট মাসে আগুন লেগেছিল। সেই আগুনে রোগী বা কারও কিছু না হলেও আতঙ্কের জেরে দোতলা থেকে নামতে গিয়ে হুড়োহুড়িতে সিঁড়িতে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল এক আয়া ও রোগীর এক আত্মীয়ের। সেই ঘটনায় ১৭ জন আহত হয়েছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৯ ০৫:০৭
আতঙ্ক কাটিয়ে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের ভিড়। নিজস্ব চিত্র

আতঙ্ক কাটিয়ে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের ভিড়। নিজস্ব চিত্র

গত ৬ বছরে অন্ততপক্ষে পাঁচবার আগুন লেগেছে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু সেই আগুনের থেকেও আগুনের আতঙ্কের জেরে ক্ষতি হয়েছে বেশি। পরিসখ্যান এমনটাই অন্তত এমনটাই বলছে।

২০১৬ সালের অগস্ট মাসে আগুন লেগেছিল। সেই আগুনে রোগী বা কারও কিছু না হলেও আতঙ্কের জেরে দোতলা থেকে নামতে গিয়ে হুড়োহুড়িতে সিঁড়িতে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল এক আয়া ও রোগীর এক আত্মীয়ের। সেই ঘটনায় ১৭ জন আহত হয়েছিলেন।

একই ভাবে ২০১৮ সালের ২০ এপেরিল মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের প্রসূতি বিভাগ ‘মাত্ৃমা’-তে এসি মেশিন পুড়ে গলগল করে কালো ধোঁয়া বের হতে থাকে। এবং সেই ধোঁয়া দোতলা হয়ে তিন তলার জালানা দিয়ে প্রসূতিদের ওয়ার্ডে ঢুকতে থাকে। তা নিয়ে রোগী ও রোগীর বাড়ির লোকজ-নের মধ্যে প্রবল আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল। সদ্যোজাতদের বুকে আঁকড়ে মায়েরা নামতে থাকেন নিচে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ফের গত বুধবার মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের দেওয়াল ফ্যানে আগুন লাগার জেরে একই ঘটনা ঘটে। সেদিনও আতঙ্কের জেরে হুড়োহুড়িতে সিঁড়িতে পড়ে গিয়ে পদপিস্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক মহিলার, আহত হন ৬৫ জন। যদিও আহতের কথা স্বীকার করলেও সেই ঘটনায় মৃত্যুর কথা এখনও স্বীকার করেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, আগুনের আতঙ্কের রোগীরা ছোটাছুটি করলেও তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করা হয়নি। কোন রাস্তা দিয়ে সহজে নামতে পারবে তাও জানানো হয়নি।

ঘটনার দিন ছেলেকে নিয়ে মনোস্তত্ব বিভাগে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন রানিতলার নতুনগ্রামের বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম। তাঁর দাবি, ‘‘কোন দিকে দ্রুত নিচে নামতে পারব তা জানানোর কেউ ছিল না। আয়া-নার্স সবাই তো প্রাণ ভয়ে দৌড়চ্ছে। ফলে সবাই যেদিকে ছুটছিলেন, সেদিকে আমরাও ছুটছিলাম।’’

যদিও হাসপাতাল সুপার (এমএসভিপি) দেবদাস সাহা বলেন, ‘‘সে দিন আগুন লাগেনি, ছোট স্ফুলিঙ্গ দেখা দিয়েছিল সে কথা রোগী ও তাঁদের পরিজনদের বোঝানো হয়েছিল, হুড়োহুড়ি করতে নিষেধ করা হয়েছিল। কিন্তু লোকজন সে কথা না শুনেই আতঙ্কে ছোটাছুটি করছিলেন।’’ তাঁর দাবি, আগুনের বিষয় লোকজন যাতে আতঙ্কিত না হন সে বিষয়ে আগামী দিনে পদক্ষেপ করা হবে। অন্য দিকে ঘটনার পর ওয়েস্টবেঙ্গল মেডিক্যাল সার্ভিস কর্পোরেশন লিমিটেডের পক্ষ থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সব সময়ের জন্য হাসপাতাল মাইকিং ব্যবস্থা করার জন্য বলা হয়েছে। আগুন লাগলে সাধারণ মানুষকে কি করবেন, হাসপাতাল কর্মীরা কি করবেন, সে বিষয়ে নিয়মিত মাইকিং করে সচেতন করার কথা বলা হয়েছে। জেলাশাসক পি উলাগানাথন বলেন, ‘‘আগুনের হাত থেকে রক্ষা পেতে লোকজনকে সচেতন করতে নিয়মিত মাইকিংসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’

২০১২ সালে মু্র্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা হয়েছে। গত ৬ বছরে অন্ততপক্ষে ৫ বার আগুন লেগেছে। ২০১৪ সালে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে থাকা বিদ্যুতের ট্রান্সফর্মারে আগুন লেগেছিল। সে বার অবশ্য বড় কিছু হয়নি।

Fire Murshidabad Medical College
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy