Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

যুব তৃণমূল নেতা খুনে দু’হাতে পিস্তল চালাতে দক্ষ দুষ্কৃতীকে খুঁজছে পুলিশ

সোমবার বহরমপুরের নিয়াল্লিশপাড়া যুব তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনার বিষয়ে বহরমপুর থানার পুলিশকে এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। দুষ্কৃতীরা হেলমেট পরে থাকায় স্থানীয়েরা তাদের চিনতে পারেনি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৫৪
Share: Save:

যুব তৃণমূল নেতা নাজিবুল শেখকে খুনের জন্য গলিপথকেই বেছে নিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। একেবারে সিনেমার কায়দায় দু’হাতে গুলি চালাতে পারদর্শী এক দুষ্কৃতী গলির মুখে অপেক্ষা করছিল। সেখান থেকে কিছুটা দূরে মোটরবাইক নিয়ে দাঁড়িয়েছিল তার এক সঙ্গী। নাজিবুল কাছাকাছি আসতেই দুই হাতে দু’টি পিস্তল নিয়ে এগিয়ে যায় এক দুষ্কৃতী। পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি চালাতে থাকে। গুলি লাগে ডান দিকের বুকে, পেটে ও হাতে।

ঘটনাস্থলে স্কুটি নিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়েন নাজিবুল। এর পরে সেখান থেকে ছুটে গিয়ে সঙ্গীর মোটরবাইকে উঠে চম্পট দেয় তারা। সোমবার বহরমপুরের নিয়াল্লিশপাড়া যুব তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনার বিষয়ে বহরমপুর থানার পুলিশকে এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। দুষ্কৃতীরা হেলমেট পরে থাকায় স্থানীয়েরা তাদের চিনতে পারেনি।

খুনের ঘটনার পরে মৃতের পরিবার জেলা পরিষদের পূর্ত দফতরের কর্মাধ্যক্ষ রাজীব হোসেনের দিকে আঙুল তুললেও সে দিন রাতে বহরমপুর থানায় লিখিত যে অভিযোগ হয়েছে, তাতে তাঁর নাম নেই। পুলিশ সূত্রে খবর মৃতের প্রথম পক্ষের স্ত্রী তথা গোয়ালজান-নিয়াল্লিশপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য গোলচেহারা বিবি সাত জনের নাম দিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

এ দিন গোলচেহারা বিবি বলেন, ‘‘পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছি, যা বলার পুলিশকে জানিয়েছি। পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।’’ সোমবার রাজীব হোসেনের নাম নিলেও এ দিন তিনি বলছেন, ‘‘মানসিক অবস্থা ভাল না থাকায় কী বলেছি মনে নেই। কারা কি কারণে আমার স্বামীকে খুন করেছে তা পুলিশকে জানিয়েছি।’’

নিহত ওই নেতার বাবা আমির আলি বলেন, ‘‘আমি লেখাপড়া জানি না। অভিযোগে কাদের নাম রয়েছে জানি না। তবে এলাকার সব কিছু রাজীব হোসেনের নখদর্পনে। তাঁর কাছ থেকে সরে আমার ছেলে সৌমিকের দিকে যেতেই খুন হল।’’

রাজীব হোসেন সোমবার তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ঘটনার দায় বিজেপির উপর চাপিয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী বলেন ‘‘তৃণমূলের কর্মী কেন প্রকাশ্যে খুন হল এটা দেখার দায়িত্ব পুলিশের। কিন্তু এফআইআর না হওয়ায় আমার আশঙ্কা অধীর চৌধুরীকে হারানোর জন্য মিথ্যা মামলায় কংগ্রেস কর্মীদের গ্রেফতারের আদেশ চলে এসেছে।’’ তাঁর দাবি, তৃণমূল কর্মী কেন খুন হল তা জানতে আগামী দিনে কংগ্রেস রাস্তায় নামবে। তদন্তের নামে মিথ্যা জুলুমবাজি বরদাস্ত করা হবে না।

জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র অশোক দাস বলেন, ‘‘অধীর চৌধুরীর পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছে। নির্বাচনের আগে সন্ত্রাস তৈরি করে তিনি আবার ফিরে আসার স্বপ্ন দেখছেন। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। খুনের ঘটনায় অধীরের হাত আছে। পুলিশ তদন্ত করলেই সব বেরিয়ে আসবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Berhampore TMC Pistol Murder Investigation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE