বাড়ি থেকে খবর এসেছিল, তার ফুফু মারা গিয়েছে। পরীক্ষা শেষ হতেই সে আর দেরি করেনি। মঙ্গলবার দুপুরে সুতির শেখপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে তড়িঘড়ি বেরিয়ে পড়ে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী চাঁদনি খাতুন।
অভিযোগ, স্কুলের বাইরে বেরোতেই দুই যুবক তাকে মোটরবাইকে তুলে পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। এলাকার লোকজন একজনকে ধরে পুলিশের হাতে ধুলে দেয়।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত বছর পঁচিশের ওই যুবকের নাম তহিরুদ্দিন শেখ। বাড়ি ঝাড়খণ্ডে। তার সঙ্গীর খোঁজে তল্লাশি চলছে। বাইকটি আটক করা হয়েছে। জেরায় ধৃত ওই যুবক জানিয়েছে, ছাত্রীর কানে সোনার দুল দু’টো হাতিয়ে নিতেই তারা এই কাণ্ড করেছে। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন বলছেন, “এর আগে রঘুনাথগঞ্জের মির্জাপুরে এমন ঘটনা ঘটেছিল। কিন্তু সুতিতে এই প্রথম। বিষয়টি নিয়ে সকলকেই সচেতন হতে হবে।’’
জেলা জুড়েই প্রাথমিক স্কুলগুলিতে এখন প্রথম পর্বের মূল্যায়ন চলছে। সুতি চক্রের দারিয়াপুর গ্রামের ৩৫ নম্বর শেখপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়েও এ দিন ইংরেজি পরীক্ষা ছিল। স্কুলে ৪৬১ জন পড়ুয়া রয়েছে।
প্রধান শিক্ষক মহম্মদ হাসানুজ্জামান জানান, দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত পরীক্ষা চললেও মিড ডে মিলের জন্য পড়ুয়াদের ২টো পর্যন্ত স্কুলে থাকতে হয়। কিন্তু এ দিন স্কুলে খবর আসে চাঁদনির ফুফু জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে মারা গিয়েছেন। সেই কারণে পরীক্ষার পরেই তাঁকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।
চাঁদনির কথায়, ‘‘স্কুলের বাইরে দু’জন বাইক নিয়ে দাঁড়িয়েছিল। আমি ওদের চিনি না। তারা নাম-ঠিকানা জানতে চায়। আমি বলি, ফুফু মারা গিয়েছে জঙ্গিপুর হাসপাতালে। আমি তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে চাই। তারা হাসপাতালে পৌঁছে দেবে বলে বাইকে উঠতে বলে। ভেবেছিলাম, বাবা বোধহয় পাঠিয়েছে। পরে ভুল ভাঙে।”
স্কুলের সামনে তখন দাঁড়িয়ে ছিলেন পাড়ার কয়েক জন মহিলা। ওই দুই যুবককে দেখে তাঁদের সন্দেহ হয়। তাঁরা যুবকদের বাড়ি কোথায় জানতে চাইলে আচমকা চাঁদনিকে বাইকে তুলে তারা পালানোর চেষ্টা করে। তখনই ওই মহিলা ও চাঁদনির চিৎকারে লোকজন ছুটে আসে। বাইক থেকে নেমে মাঠ দিয়ে পালাতে গিয়ে ধরা পড়ে তহিরুদ্দিন। তাঁকে মারধরও করে লোকজন। পরে স্কুলের শিক্ষকেরা তাকে উদ্ধার করে পঞ্চায়েত সদস্য সাজ্জাদ হোসেনের বাড়িতে নিয়ে যান। পুলিশ গিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy