Advertisement
E-Paper

মুর্শিদাবাদে তৃণমূল জেলা পরিষদকে ‘চোর’ আখ্যা দিয়ে পদ ছাড়লেন হুমায়ুন কবীর-ঘনিষ্ঠ নেত্রী! এ বার নতুন দলে যোগ? জল্পনা শুরু

প্রথমে কংগ্রেসি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন শাহনাজ। পরে তৃণমূলে যোগ দেন। হুমায়ুন কবীরের বাবরি মসজিদ তৈরির উদ্যোগকে তিনি সমর্থন করেন। বৃহস্পতিবার জেলা পরিষদের সদস্যপদ ছাড়লেন।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৬:৫৭
(বাঁ দিকে) ভরতপুরের বিধায়ক তথা সাসপেন্ড হওয়া তৃণমূল নেতা হুমায়ুন কবীর। মুর্শিদাবাদের জেলা পরিষদের সদস্য শাহনাজ বেগম (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) ভরতপুরের বিধায়ক তথা সাসপেন্ড হওয়া তৃণমূল নেতা হুমায়ুন কবীর। মুর্শিদাবাদের জেলা পরিষদের সদস্য শাহনাজ বেগম (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

তৃণমূলের জেলা পরিষদকে ‘চোর’ আখ্যা দিয়ে পদ ছাড়লেন স্থানীয় নেত্রী শাহনাজ বেগম। মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সদস্য ছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার পদ ছাড়ার কথা সমাজমাধ্যমে ঘোষণা করেছেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, শাহনাজ ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের ঘনিষ্ঠ। হুমায়ুন যে নতুন দল গঠনের কথা জানিয়েছেন, সেই দলে তিনিও যোগ দিতে পারেন। তবে আনুষ্ঠানিক ভাবে সে সব কিছু জানাননি শাহনাজ। তিনি কেবল দুর্নীতির অভিযোগ তুলে জেলা পরিষদের সদস্যপদ ছেড়েছেন।

শাহনাজ লেখেন, ‘‘চোর জেলা পরিষদের অংশীদার হয়ে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই আমি ১৭ ডিসেম্বর সম্মানীয় ডিভিশনাল কমিশনার সাহেবের কাছে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সদস্যপদ থেকে আমার ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছি।’’ জেলার মানুষের উদ্দেশে শাহনাজের বক্তব্য, ‘‘সোমপাড়া-১, সোমপাড়া-২, রামপাড়া-১ এবং রামনগর বাছড়ার মানুষ ২০১৩ সাল থেকে একই আসনে পরপর তিন বার আমাকে নির্বাচিত করেছেন। এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে দলমত, জাতি-বর্ণ-ধর্ম নির্বিশেষে অভিভাবক হয়ে আমাকে আশীর্বাদ করেছেন। আপনাদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা, ভালবাসা ও শ্রদ্ধা চিরদিন থাকবে। কিন্তু আপনাদের দেওয়া পদের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই আমি পদত্যাগ করতে বাধ্য হলাম।’’

২০২৩ সালে জেলার মহিলা সভানেত্রীর পদ থেকেও ইস্তফা দিয়েছিলেন শাহনাজ। দাবি, অন্যায়ের সঙ্গে আপস করবেন না বলেই এই ইস্তফা। এর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুর্শিদাবাদ সফরের সময় সমাজমাধ্যমে তিনি মুখ খুলেছিলেন। জানিয়েছিলেন, জেলা পরিষদের অনিয়ম, বেনিয়ম নিয়ে একাধিক বার তিনি দল এবং প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর দফতরেও চিঠি লিখেছেন। কিন্তু কাজ হয়নি। আশঙ্কা, তাঁর চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছোয়নি।

শাহনাজ এক সময় কংগ্রেসি রাজনীতি করতেন। ২০১৬ সালের আগে মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের তেমন দাপট ছিল না। সে সময় কংগ্রেসের জেলা পরিষদের সদস্য ছিলেন এই শাহনাজ। তাঁর নেতৃত্বেই তৃণমূল দল ভাঙিয়ে জেলা পরিষদটি কংগ্রেসের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল। তার পর দীর্ঘ দিন তৃণমূলে থেকে কাজ করেছেন শাহনাজ। কিন্তু ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর তাঁকে বাদ দিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি করা হয় রুবিয়া সুলতানাকে। স্থানীয় সূত্রে দাবি, তার পর থেকেই নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন শাহনাজ। বরাবর তিনি হুমায়ুনের ঘনিষ্ঠ। হুমায়ুন বেলডাঙায় যে বাবরি মসজিদ তৈরির ঘোষণা করেছেন, প্রথম থেকেই শাহনাজ তার পক্ষে।

তবে কি পদ ছা়ড়ার পর এ বার তৃণমূলের হাতও ছাড়বেন নেত্রী? যোগ দেবেন হুমায়ুনের নতুন দলে? শাহনাজ নিজে সরাসরি তা মানতে চাননি। আবার জল্পনা উড়িয়েও দেননি। বলেছেন, ‘‘হুমায়ুন যখন লোকসভা ভোটের আগে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন, তখন কেন তাঁকে সাম্প্রদায়িক বলা হয়নি? বাবরি মসজিদ স্থাপনের কথাও তো তিনি নতুন বলছেন না। এই মসজিদের সঙ্গে সংখ্যালঘু মানুষদের আবেগ জড়িয়ে আছে। যাঁরা এর বিরোধিতা করছেন, তাঁদের মানুষ কী চোখে দেখছে, আগামী দিনে বুঝতে পারবেন। আমি রাজনীতি করা মানুষ, নিশ্চয়ই কোনও রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মে থাকব। সংখ্যালঘুদের অধিকারের জন্য লড়ব। কারও তাঁবেদারি করতে পারব না।’’

Murshidabad TMC Humayun Kabir zilla parishad
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy