Advertisement
E-Paper

চকোলেট বোম বিক্রি করে কর্মী থেকে কোটিপতি মহিলা! তার পর...

আলোর বাজির আড়ালে দেদার শব্দবাজির কারবার ছিল তাঁর। অভিযোগ, মূলত চকলেট বোম বিক্রি করেই ঘরে পয়সা আসছিল হুহু করে। কয়েক বছরের মধ্যে বাজি কারখানার সাধারণ কর্মী থেকে কোটিপতি ব্যবসায়ী হয়ে উঠেছিলেন মিঠু মণ্ডল। গাংনাপুর এলাকায় ‘বাজির রানি’ হিসাবে পরিচিতি ছিল তাঁর।

সৌমিত্র সিকদার

শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:১১
মিঠু মণ্ডলের বাড়ি। নিজস্ব চিত্র

মিঠু মণ্ডলের বাড়ি। নিজস্ব চিত্র

আলোর বাজির আড়ালে দেদার শব্দবাজির কারবার ছিল তাঁর। অভিযোগ, মূলত চকলেট বোম বিক্রি করেই ঘরে পয়সা আসছিল হুহু করে। কয়েক বছরের মধ্যে বাজি কারখানার সাধারণ কর্মী থেকে কোটিপতি ব্যবসায়ী হয়ে উঠেছিলেন মিঠু মণ্ডল। গাংনাপুর এলাকায় ‘বাজির রানি’ হিসাবে পরিচিতি ছিল তাঁর। সেই বাজি-ই তাঁর প্রাণ নিল। দিন কয়েক আগে গাংনাপুর বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে যে দু’জন মারা যান তাঁদের অন্যতম ছিলেন মিঠু মণ্ডল।

এলাকার সকলেই এক বাক্যে স্বীকার করছেন, বাজিকর্মী হিসেবে গাংনাপুরে কাজ অতীতে অনেকেই করেছেন, কিন্তু মিঠুর মতো উত্থান কারও দেখা যায়নি। গাংনাপুর বাজার থেকে থানার দিকে যাওয়ার পথে ডান দিকে রাস্তার ধারে বিশাল জমির উপর তাঁর দোতলা বাড়ি। নীচে দোকান ঘর। বাড়ি থেকে খানিক দূরে বড় বাজি কারখানা। গাড়ি, মোটরসাইকেল সবই রয়েছে। কিছু দিনের মধ্যে আরেকটি বাড়ি ও জমি কেনার কথা চলছিল। দুই ছেলেমেয়ে বাইরে থাকেন। স্বামী নরেন মণ্ডল মারা যাওয়ার পর কারখানা সামলাতেন নিজের হাতে। গত রবিবার আড়াইটে নাগাদ বিস্ফোরণের মিনিট দশেক আগে তিনি কারখানায় গিয়েছিলেন। সেখানে তুবড়ির মশলা তৈরি করছিলেন রঞ্জিত বিশ্বাস। পাশে চেয়ারে বসেছিলেন মিঠুদেবী। বোমা বিস্ফোরণে দু’জনেরই মৃত্যু হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় চল্লিশ বছর আগে গাংনাপুরে বাজির কারখানাগুলি তৈরি হওয়া শুরু হয়। সেই সময় বেলুড় থেকে কয়েক জন কারিগরকে নিয়ে এসেছিল কারখানা মালিকেরা। মৃত মিঠু মণ্ডলের স্বামী নরেন মণ্ডল ছিলেন তাঁদের এক জন। চকলেট বোমা তৈরিতে বিশেষ দক্ষতা ছিল তাঁর। মিঠুও সেই কারখানায় কাজ শুরু করেন। সেখানেই নরেনের সঙ্গে পরিচয় ও তার পর পরিণয়। নরেনই তাঁকে চকলেট বোমা তৈরির কৌশল শিখিয়ে দেন।

দু’জনেই বাজির ভাল কারিগর ছিলেন এবং দু’জনেরই ব্যবহার ভাল ছিল। যাঁরা কারখানায় আসতেন তাঁদের সঙ্গে নরেন ও মিঠুর সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। খদ্দের কোথা থেকে মিলবে, কোথায় বাজি বিক্রি করা যায়, মশলা কোথায় পাওয়া যাবে সবই তাঁরা জানতেন। ফলে তাঁরা আলাদা ব্যবসা শুরু করেন। প্রথমে বাইরের কারখানা থেকে মশলা এনে বাজি তৈরি করতেন। তার পর বাড়িতে কারখানা শুরু করেন। নিজেরাই মশলা তৈরি করে বাজি বানান। কারিগর ভাল হওয়ায় কিছু দিনের মধ্যেই তাঁদের তুবড়ি, রংমশাল ও চকলেট বোমের সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। দূর দূর থেকে লোক এসে সেই বাজি কিনে নিয়ে যেতেন। এই ভাবে অবস্থায় ফেরে নরেন-মিঠুর।

বিস্ফোরণের পরে এলাকার বিভিন্ন বাজির গুদাম এবং বিভিন্ন বাড়ি থেকে নিষিদ্ধ বাজি উদ্ধারের কাজে হাত দিয়েছে পুলিশ। মঙ্গলবার গ্রেফতার করা হয়েছে দীপনারায়ণ রায় এবং কৃষ্ণ মাঝি নামে দু’জনকে। বুধবার তাঁদের রানাঘাট আদালতে হাজির করা হয়েছিল। বিচারক দীপনারায়ণকে পাঁচ দিনের এবং কৃষ্ণকে তিন দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

Business Firecrackers Gangnapur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy