কোলের শিশু চুরি হয়ে গিয়েছে বাড়ি থেকে! ওই দাবি করে হঠাৎ চিৎকার-চেঁচামেচি করে বাড়ি মাথায় তোলেন মা। বাড়ির লোকজন থেকে প্রতিবেশীরা শুরু করেন ছ’মাসের শিশু খোঁজ। কিন্তু কোথাও পাওয়া যায়নি বাচ্চাটিকে। অগত্যা পুলিশের দ্বারস্থ হয় পরিবার। পুলিশের জেরায় কয়েক ঘণ্টা পরে মা স্বীকার করলেন, তিনি খুন করেছেন ছেলেকে। মেরে সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলে দিয়েছেন! শুক্রবার রাত থেকে এই ঘটনায় শোরগোল নদিয়ার কল্যাণী থানা এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, অভিযুক্ত মহিলার নাম রূপা ঘোষ। কল্যাণী থানার সগুনায় তাঁর শ্বশুরবাড়ি। এটি রূপার দ্বিতীয় বিয়ে। দ্বিতীয় পক্ষের সন্তানের বয়স মাত্র ছ’মাস। শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই দুধের শিশুকে রূপা গলা টিপে খুন করেন বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, শিশুর দেহ বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলে দিয়ে চুরির গল্প ফেঁদেছিলেন মহিলা।
জানা যাচ্ছে, শুক্রবার সন্ধ্যার পর ছেলে চুরি হয়ে গিয়েছে বলে কান্না জোড়েন রূপা। প্রতিবেশীদের মধ্যে কানাকানি হতে সকলেই খোঁজাখুঁজি করছিলেন। শেষমেশ অভিযোগ জানানো হয় পুলিশের কাছে। রাতে পুলিশ এসে পরিবারের সকলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। রূপার সঙ্গেও কথা বলেন। কিন্তু শিশুর মায়ের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে খটকা লাগে পুলিশের। তাঁর একাধিক কথায় অসঙ্গতি মেলে।
শুরু হয় দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ। একটা সময়ে রূপা স্বীকার করেন তিনিই ছেলেকে খুন করেছেন। বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে শিশুটির দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাক্রমে কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে ময়নাতদন্তে জন্য দেহ পাঠানো হয়। গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত মাকে।
আরও পড়ুন:
রূপার স্বামীর সোমনাথ ঘোষ বাড়িতেই থাকেন। তবে ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘কেন এমন করল, বুঝতে পারছিনা। তবে ছেলে হওয়ার পর থেকে ও বড্ড খিটখিটে হয়ে গিয়েছিল।’’ প্রতিবেশীরা অবশ্য বলছেন, স্বামী-স্ত্রীর বনিবনার অভাব ছিল। প্রায়শই অশান্তি হত বাড়িতে। কিন্তু সেখান থেকে ছ’মাসের শিশুকে কেন খুন করলেন মা, তা নিয়ে প্রশ্ন সকলেরই। জবাব খুঁজছে পুলিশও।