প্রতীকী ছবি।
মতি ছাড়া গতি নাই! ভগবানগোলায় কয়েক মাস থেকে এটাই দস্তুর হয়ে উঠেছে।
তাঁর কীর্তির তালিকায় কী কী আছে? তার হিসেব দেওয়ার চেয়ে বরং বলা সোজা, কী কী নেই।
এলাকায় কান পাতলে নানা রকম নিন্দেমন্দ শোনা যায়। যেমন, স্থানীয় আবাসিক বাংলা মডেল স্কুলের জমি থেকে লক্ষাধিক টাকার শিমুল গাছ কাটতে হলে দুষ্কৃতীরা ছাড়পত্র নেয় মতির কাছ থেকেই। ফুটপাথে হোটেল চালাতে গেলেও মাসিক হাজার টাকা নজরানা তুলে দিতে দিতে হয় তাঁকে। রেশন ডিলারদের থেকে মাসোহারা তাঁর হকের পাওনা! ভগবানগালা এলাকায় ঠিকাদারি করতে হলেও শতকরা ৪ টাকা কমিশন তাঁর প্রাপ্য।
হবে না-ই বা কেন! এ মতি তো যে সে মতি নয়! খোদ তৃণমূলের ব্লক কংগ্রেস সভাপতি মতিয়ার হোসেন প্রামাণিক। তাই শনিবার তাঁর বিরুদ্ধে লোক জুটিয়ে বিএমওএইচ পেটানোর অভিযোগ ওঠের পরে তিনি সহজেই বলতে পারেন, ‘‘দলের অভ্যন্তরে আমার বিরুদ্ধ গোষ্ঠী রয়েছে। তারাই আমার রাজনৈতিক ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য ওই সব অপপ্রচার করে।’’
তারা নয় ঘরের শত্রু বিভীষণ। বহিঃশত্রুও যে রয়েছে বিস্তর! বিরোধী নেতারাও ছেড়ে কথা বলছেন?
ভগবানগোলা বাজারে বাড়ি জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামের। তাঁর দাবি, ‘‘এটা তো এখন ওপেন সিক্রেট! মতি তোলা আদায় করে না, এটা ভগবানগোলার একটা শিশুও বিশ্বাস করবে না!’’
সদ্য গড়ে ওঠা ভগবানগোলার একটি নার্সিংহোমের মালিকের সঙ্গে তাঁর বিরোধ তৈরি হয়েছিল কয়েক মাস আগে। স্থানীয় সিপিএম বিধায়ক মহসিন আলির অভিযোগ, মতিকে নজরানা না দিয়ে নার্সিংহোমে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছিল। মতি যায় বিগড়ে। অবশেষে নার্সিংহোম মালিক যথাস্থানে নৈবেদ্য চড়িয়ে সামাল দেন। বিদ্যুৎ সংযোগও তলে আসে। মতি অবশ্য ভাঙা রেকর্ড বাজাচ্ছেন, ‘‘এ সব বিরোধী দলের অপপ্রচার মাত্র!’’
কিন্তু ঘটনা হল, মতির দলের লোকেরাই যে তাঁর বিরুদ্ধে তোলা আদায়ের অভিযোগ করেছেন দলের লালবাগ মহকুমা সভাপতি রাজীব হোসেনের কাছে!
ভগবানগোলার মহিষাস্থলী গ্রাম পঞ্চায়েতের ক’জন তৃণমূল সদস্য সম্প্রতি রাজীবের কাছে গিয়ে মতির নামে মুখ খোলেন। তাঁদের অভিযোগ, প্রতি সদস্যের থেকে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের ২০ হাজার টাকা করে আদায় করেছেন মতি। সেই অভিযোগ পাওয়ার কথা মেনেও নিয়েছেন রাজীব। তবে তার পর কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তার কোনও সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি।
তার মানে এ বারও রেহাই পেয়ে যাবেন মতিয়ার গোসেন প্রামাণিক?
রাজীব বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার পাওয়া বিএমওএইচ মতিয়ার হককে পেটানোর ঘটনায় মতি সত্যি জড়িত থাকলে তাঁর রেহাই নেই। প্রশাসনিক ও দলীয়— দু’টো শাস্তিই মতিকে পেতে হবে। ’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy