শিক্ষিত বেকারদের ব্যবসার পথ দেখাতে ‘মুক্তিধারা’র নয়া প্রকল্পে মাত্র দু’শতাংশ সুদে ঋণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন রাজ্য স্বনির্ভর ও স্বনিযুক্তি প্রকল্পের মন্ত্রী সাধন পান্ডে। তার মতে, কাজ করে রোজগারের সংস্থান না পেয়ে মাদক পাচারের মতো খারাপ পথে যাচ্ছে এ জেলার তরুণেরা। এটাকে রুখতেই ‘মুক্তিধারা’ প্রকল্পের সূচনা।
বৃহস্পতিবার প্রকল্পের উদ্বোধনে মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ রবীন্দ্রভবনে এক অনুষ্ঠানে এসে জেলা প্রশাসনকে সাধনবাবু নির্দেশ দেন, “কে কোন দল করে, তা দেখবেন না। শিক্ষিত বেকার কেউ যদি এই প্রকল্পের জন্য ব্লক অফিসে যায় বিডিওরা তার কাছ থেকে আবেদন গ্রহণ করে পাঠান। অতীতে বহু বেকার হয়রান হয়েছেন। মুক্তিধারা প্রকল্পে কোনও বিডিও কাউকে ফেরাতে পারবেন না। এমন যদি ঘটে আমি কিন্তু ব্যবস্থা নেব। ”
মুক্তিধারা প্রকল্পটি রাজ্যে প্রথম চালু করা হয়েছিল পুরুলিয়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরে। তাতে যে সব ভুলত্রুটি ছিল, সেগুলি দূর করে নতুন ভাবে ১১টি জেলার ৩৮টি মহকুমার সমস্ত ব্লকে এই প্রকল্প চালু করা হচ্ছে। প্রতিটি ব্লক থেকে পিছিয়ে পড়া ৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে বেছে নিয়ে পঞ্চায়েত পিছু ৫টি করে স্বনির্ভর গোষ্ঠী গড়ে ১০ জন করে এই প্রকল্পের সুবিধে পাবেন। এতে রাজ্যে ১৩০০ পঞ্চায়েতের শিক্ষিত বেকার রোজগারের পথ পাবেন বলে দাবি তাঁর। মন্ত্রীর কথায়, “গ্রাম বাংলায় বহু শিক্ষিত বেকার আছেন যারা মাটি কাটা, পুকুর পরিষ্কারের কাজ করতে পারেন না। তাদের কাজের সংস্থান করে দেবে এই প্রকল্প। এই প্রকল্পে টাকার কোনও অভাব হবে না।’’ প্রতিটি মহকুমায় একটি করে অফিস খুলে এক জন সুপারভাইজর নিয়োগ করে সব কিছু মনিটরিং করা হবে। ১১টি জেলার মধ্যে নদিয়া ও মুর্শিদাবাদের ৯টি মহকুমাকেই রাখা হয়েছে। সাধনবাবু জানান, ছাগল পোষা, পোলট্রি, টেলারিং, ধান ভাঙা কল, এমনকী মাছ চাষের জন্য কোনও মজে যাওয়া পুকুর থাকলেও সরকারি খরচে সে পুকুর কাটিয়ে দেওয়া হবে। খামার ও শেড করার জন্য খাস জমিরও ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। ব্যবসার জন্য ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিতে সুদ গুনতে হয় ১১ শতাংশ। কিন্তু যে কোনও পছন্দের ব্যবসার জন্য আড়াই লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে ২ শতাংশ সুদে। বাকি সুদের টাকা ভর্তুকি দেবে সরকার। এমনকী যে সব স্বনির্ভর গোষ্ঠী অন্য প্রকল্পে অতীতে ৪ শতাংশ সুদে টাকা নিয়েছেন তাদের এখন থেকে ২ শতাংশ সুদ মেটালেই চলবে। ব্যাঙ্কগুলিকে বলা হয়েছে বাকি ২ শতাংশ মিটিয়ে দেবে রাজ্য সরকার। মঞ্চে হাজির অতিরিক্ত জেলাশাসক, জঙ্গিপুরের মহকুমাশাসকের উদ্দেশে সাধনবাবুর কড়া নির্দেশ, “প্রকল্পভুক্ত এলাকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীই শুধু নয়, তাদের পরিবারের কেউ মুক্তিধারা প্রকল্পে আবেদন করলে তার আর্জি মঞ্জুর করবেন। প্রশাসনের কেউ ইচ্ছুক বেকারকে ফেরালে জানাবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy