Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

মৃৎশিল্পীদের সংগ্রহশালা ‘মৃত্তিকা’ হয়েছে বিয়েবাড়ি

শহরের অনেকেরই আক্ষেপ, যাদের উন্নতির জন্য এত কোটি-কোটি টাকা খরচ করে এই ‘মৃত্তিকা’ তৈরি করা হল সেই ঘুর্ণীর মৃৎশিল্পীরা রয়ে গেলেন সেই তিমিরে। 

নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৪৪
Share: Save:

ঘূর্ণীর মৃৎশিল্পীদের জন্য তৈরি হয়েছিল সংগ্রহশালা। ঠিক হয়েছিল, পৃথিবী-বিখ্যাত এই মৃৎশিল্প মানুষের সামনে তুলে ধরা হবে সেখানে, যাতে বাইরের মানুষ আসেন দেখতে আর কিনে নিয়ে যান ঘূর্ণীর মাটির পুতুল। সংগ্রহশালার সঙ্গে তাই তৈরি করা হয়েছিল বেশ কয়েকটি স্টলও। নাম রাখা হয়েছিল ‘মৃত্তিকা’।

কিন্তু মিউজিয়াম তৈরি হওয়া তো দূরের কথা, এখন বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য ‘মৃত্তিকা’ ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। শহরের অনেকেরই আক্ষেপ, যাদের উন্নতির জন্য এত কোটি-কোটি টাকা খরচ করে এই ‘মৃত্তিকা’ তৈরি করা হল সেই ঘুর্ণীর মৃৎশিল্পীরা রয়ে গেলেন সেই তিমিরে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেরই দাবি, প্রথম থেকেই তাঁরা বলে আসছিলেন যে ঘূর্ণীর পুতুলপট্টি থেকে এতটা ভিতরে ‘মৃত্তিকা’ তৈরি করা ঠিক হবে না। কারণ পুতুলপট্টি থেকে এত দূরে এতটা ভিতরে মানুষ যাবেন না। এত টাকা দিয়ে তৈরি করলেও তা পড়ে থাকবে। কাজে আসবে না। বাস্তবে সেটাই হল বলে তাঁদের দাবি।

২০১৩ সালে ঢাকঢোল বাজিয়ে উদ্বোধন করা হলেও শেষ পর্যন্ত কিছুই দাঁড়ালো না। কয়েক জন মৃৎশিল্পী স্টল নিয়েছিলেন। খরিদ্দার না হওয়ায় এক সময়ে তাঁরা তা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন। শুধু তা-ই নয়, প্রশাসনের তরফে তেমন গুছিয়ে সংগ্রহশালা তৈরিও করা হল না বলে অভিযোগ।

ঘূর্ণীর রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী সুবীর পাল বলেন, “আমরা অনেকেই ভেবেছিলাম যে সংগ্রহশালা ঠিক মতো তৈরি হলে আমাদের হাল কিছুটা হলেও ফিরতে পারে। কিন্তু বাস্তবে সেটা হল না। সেটা বিয়েবাড়ি হিসাবে ব্যবহার হতে দেখলে কষ্ট তো হবেই।” জেলা পরিষদ থেকে তৈরি করা হয়েছিল ‘মৃত্তিকা’। সংগ্রহশালার পাশাপাশি পর্যটকদের থাকার জন্য তিনটি কটেজও তৈরি করা হয়। এর পাশাপাশি পর্যটন দফতরের টাকায় বেশ কিছু নির্মাণকাজও শুরু হয়েছে। জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের দাবি, ‘মৃত্তিকা’ চত্বরে পর্যটন কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে। বেড়াতে এসে লোকজন ঘূর্ণীর মাটির পুতুল কিনে নিয়ে যাবেন।

কিন্তু তা বলে বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া দেওয়া হবে? জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা সংগ্রশালার অংশ ভাড়া দেননি। ভাড়া দিয়েছেন পর্যটনের অংশ। রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যে টাকার প্রয়োজন তা সংগ্রহের জন্যই পর্যটকদের ভাড়া দেওয়ার পাশাপাশি নির্দিষ্ট শর্তসাপেক্ষে অনুষ্ঠান বাড়ি হিসাবে ভাড়া দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি রিক্তা কুন্ডু বলেন, ‘‘মৃত্তিকা নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা আছে। পদক্ষেপও করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Museum Clay Artist Marriage Hall
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE