Advertisement
E-Paper

তৈরি হয়েও পড়ে নতুন ওয়ার্ড

এক) হৃদরোগে আক্রান্ত এক ব্যক্তি মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা অশঙ্কাজনক। জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ফোনে ওয়ার্ডের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে জানিয়েছেন। কিন্তু তাঁর আসতে দেরি হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৬ ০০:৩২
সেই ওয়ার্ড।— নিজস্ব চিত্

সেই ওয়ার্ড।— নিজস্ব চিত্

এক) হৃদরোগে আক্রান্ত এক ব্যক্তি মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা অশঙ্কাজনক। জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ফোনে ওয়ার্ডের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে জানিয়েছেন। কিন্তু তাঁর আসতে দেরি হচ্ছে। এ দিকে রোগীর অবস্থার অবনতি হতে‌ শুরু করেছে। রোগীর বাড়ির লোকজন জরুরি বিভাগের চিকিৎসকেরা একবার ওয়ার্ডে যাওয়ার জন্য তাড়া দিচ্ছেন। এ দিকে জরুরি বিভাগে দুর্ঘটনায় জখম রোগীদের ভিড় লেগেই রয়েছে। চিকিৎসক জরুরি বিভাগ না ছাড়ায় রোগীর বাড়ির লোকজন তাঁর উপর চড়াও হয়।

দুই) ওয়ার্ডে সর্পদষ্ট রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। সেখানে ছুটে গেলেন জরুরি বিভাগের চিকিৎসক। ‘অনকল ডিউটি’র চিকিৎসক আসার আগেই তিনি শুরু করলেন। এরই মধ্যে জরুরি বিভাগে দুর্ঘটনায় আহত দুই যুবক হাজির। জরুরি বিভাগ ফাঁকা। কোন চিকিৎসককে না পেয়ে জরুরি বিভাগে ভাঙচুর শুরু করে দিলেন রোগীর বাড়ির লোকজন।কয়েক মাস আগে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের ওই দু’টি চিত্র কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। নিত্যদিনই জেলা হাসপাতালে এই ঝামেলা লেগেই রয়েছে।

এই বিপত্তি আটকাতে স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে তৈরি হয় ‘এমারজেন্সি অবজারভেশন ওয়ার্ড।’ জরুরি বিভাগ সংলগ্ন ওই ওয়ার্ড তৈরি হয়েছে। শয্যা সংখ্যা বারো। আশঙ্কাজনক রোগীদের প্রাথমিক ভাবে ওই ওয়ার্ডে রাখা হবে। সেখানে অষ্টপ্রহর একজন চিকিৎসক থাকবেন। ফলে চিকিৎসার জন্য ‘অনকল’ চিকিৎসকের উপর ভরসা করতে হবে না। এতে করে হাসপাতালে ঝামেলাও কমবে।

তাছাড়া অপেক্ষাকৃত কম অসুস্থ রোগীদের ওই ওয়ার্ডে পর্যবেক্ষণে রেখে ছুটি দেওয়া যাবে।

কিন্তু পূর্ত দফতর ওয়ার্ডটি তৈরি করার পরও তা আজও চালু হল না। কেন? হাসপাতালের সুপার সুদীপ সরকার বলেন, ‘‘আসলে ওই ওয়ার্ড তৈরি করার পর পূর্ত দফতর এখনও আমাদের হস্তান্তর করেনি। সেই কারণে আমরা ওয়ার্ডটি চালু করতে পারিনি।’’ যদিও পূর্ত দফতরের সহকারি বাস্তুকার সুবোধ কুমার বিশ্বাস জানান, ওই ওয়ার্ড তৈরি হয়ে রয়েছে। এই ধরণের ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিক ভাবে হস্তান্তর করা হয় না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চাইলেই তাঁরা ওয়ার্ডটি ব্যবহার করতে পারেন।

সত্যিই কি হস্তান্তর সংক্রান্ত সমস্যার কারণে ওই ওয়ার্ডটি চালু করা গেল না? নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে? চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, চিকিৎসক সংখ্যা কম থাকায় নব নির্মিত ওই ওয়ার্ডটি চালু করা যাচ্ছে না। তাছাড়া নার্সের সংখ্যাও কম রয়েছে।

জেলা হাসপাতালের দু’টি ক্যাম্পাস— শক্তিনগর ও সদর হাসপাতাল। দুটি জরুরি বিভাগে প্রতিদিন আটজন করে চিকিৎসক প্রয়োজন। অথচ সেই পরিমান চিকিৎসক নেই। চিকিৎসকদের কথায়, ‘‘জরুরি বিভাগ সামলানোর দায়িত্ব জেনারেল ডিউটি মেডিক্যাল অফিসারদের। জেলা হাসপাতালে এই মুহুর্তে ওই পদে আছে মাত্র ছ’জন। তাই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরাও জরুরি বিভাগ সামলান। এই পরিস্থিতিতে এমারজেন্সি অবজারভেশন ওয়ার্ড চালু করলে প্রতিদিন আরও চার জন করে চিকিৎসক লাগবে। কিন্তু অত চিকিৎসক হাসপাতালে নেই। ফলে দু’টি ওয়ার্ড চালু হয়ে পড়ে রয়েছে।’’

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা অবশ্য বলছেন, ‘‘চিকিৎসকদের একাংশ ঠিক মতো ডিউটি করেন না। চিকিৎসকদের জন্য নয়া ডিউটিসূচী তৈরি করা হচ্ছে। খুব দ্রুত ওয়ার্ড দু’টি চালু করা হবে।’’

Hospital ward Construction
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy