Advertisement
E-Paper

বিষও দিইনি ছেলেমেয়েকে

তাঁর স্বামী মাকে খুন করেনি, তিনিও সন্তানদের বিষ দেননি — শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে শুয়ে বুধবার এমনটাই দাবি করলেন গীতা বিশ্বাস।

   সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:০০
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

তাঁর স্বামী মাকে খুন করেনি, তিনিও সন্তানদের বিষ দেননি — শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে শুয়ে বুধবার এমনটাই দাবি করলেন গীতা বিশ্বাস।

বিছানার এক কোণে গুটিসুটি মেরে শুয়ে ছিলেন গীতা। ডাক শুনে যখন চোখ মেলে তাকালেন, তখনও ঘোর স্পষ্ট। তাঁকে কোনও প্রশ্ন করার আগে তিনিই বলেন, “আমার ছেলেমেয়েরা কেমন আছে? আমি কিন্তু ওদের বিষ খাওয়াইনি।”

মাকে খুনের অভিযোগে সোমবার শান্তিপুরের বাগানেপাড়ার বাসিন্দা গীতার স্বামী সত্যেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার পরেই গীতা ও তাঁর তিন সন্তানকে অসুস্থ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন এলাকার মানুষ। শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই তাঁর বড় মেয়ে রীমাকে ‘মৃত’ ঘোষণা করা হয়। শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে মারা যায় বড় ছেলে সুদীপ। ছোট ছেলে শুভকে ভর্তি করানো হয় জেলা সদর হাসপাতালে। গীতাকে শক্তিনগরে। দু’জনেই এখন বিপন্মুক্ত। এ দিন সকালে শুভকে নিয়ে গিয়েছেন তার মামার বাড়ির লোকজন।

গীতাকে এখনও দুই সন্তানের মৃত্যুর খবর জানানো হয়নি। তবে তিনি জানেন, তাঁর স্বামী খুনের কথা কবুল করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। সেই প্রসঙ্গ তুলতেই গীতা দাবি করেন, “আমার স্বামী কিছুতেই খুন করতে পারে না। ওকে জোর করে ভয় দেখিয়ে বলিয়ে নেওয়া হয়েছে।” সেই দুঃখেই কি বিষ খেলেন? একটু চুপ করে থেকে গীতা বলেন, “সবাই বলছিল, আমি আর আমার মেয়েও এই খুনে জড়িত। নানা ভাবে অপমান করছিল। সহ্য করতে পারছিলাম না। তাই ভাবলাম, জীবন শেষ করে দেব।”

গীতা জানান, সকালেই তিনি পাড়ার দোকান থেকে ইঁদুর মারা বিষ এনে জলে গুলে খান। তার পরে বেরিয়ে পড়েন বাড়ি থেকে। তাঁর তিন সন্তানকে বিষ খাওয়াল কে? গীতার দাবি, “আমি খাওয়াইনি। ওরা নিজেরাই খেয়েছে। সবাই বাজে কথা বলছিল, অপমানিত হয়ে ওরাও বিষ খেয়ে নিয়েছে।”

তবে পাঁচ কাঠা জমি নিয়ে তাঁর স্বামীর সঙ্গে শ্বাশুড়ির যে গন্ডগোল হত, তা তিনি অস্বীকার করেননি। বছর কুড়ি আগে তাঁর ভাসুর মারা যেতে বড় জা শ্যামলী মেয়েকে নিয়ে চলে যান নৃসিংহপুরে বাপের বাড়িতে। গীতার দাবি, “মা বলেছিল, পাঁচ কাঠা জমি আমাদের দেবে। জায়ের মেয়ের বিয়ের জন্য তিরিশ হাজার টাকা আর গয়না দেবে। কিন্তু সে সব দেওয়ার পরেও তিন কাঠা জমি লিখে দেয়। তাতেই আমার স্বামী রেগে গিয়েছিল।’’ কিন্তু তার পরেও তাঁর দাবি, ‘‘এ জন্য মাকে ও খুন করতে পারে না।”

তাঁর বড় জা শ্যামলী বিশ্বাসের অভিযোগের ভিত্তিতেই সত্যেনকে ধরেছে পুলিশ। শ্যামলী বলেন, “ওই টাকা-গয়না তো মা অনেক আগেই আমাদের দিয়েছিলেন। আমাদের জমি দেওয়ার কারণে ওঁকে খুন হতে হল।”

Crime Death Murder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy