বেহাল: বহরমপুরে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক
বহরমপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের গা ঘেঁষে বড়সড় নিকাশি নালা। কালভার্টের নিচে ব্রিটিশ আমলের সেই নালার দিকে তাকাতেই চক্ষু চড়কগাছ! নিকষ কালো নোংরা জল হু়ড়হুড় করে বয়ে চলেছে। এক দিকে কচুরি পানা, আর সঙ্গে দোসর অজস্র প্লাস্টিকের বোতল, প্যাকেট, বর্জ্য। দলা পাকিয়ে সেই কালো জলের উপরে ভেসে রয়েছে।
খানিক অপেক্ষা করলেই চোখে পড়ছে, নির্বিকার মুখে সেখানে বোতল প্যাকেট ফেলে হন হন করে চলে যাচ্ছেন মানুষজন।নালা বোঝাই হয়ে উঠছে ক্রমাগত। না, ভ্রূক্ষেপ নেই কারও। বহরমপুরের খাগড়া এলাকার নোংরা জল বিষ্ণুপুর বিলে গিয়ে পড়ে, সেই জল এই নর্দমা দিয়ে পঞ্চাননতলা হয়ে ভাণ্ডারদহ বিলের দিকে বয়ে চলেছে। হেলেদুলে সেই বর্জ্য-ধারা চলেছে জলঙ্গি নদীর দিকে।
বিস্তৃত সেই নালার উপরে অনেক খানি জায়গা জুড়ে বাঁশের মাচা করে মোটর সাইকেল গ্যারেজ। তার নষ্ট তেল, আবর্জনাও নিত্য পড়ছে নালায়। কিছু দিন আগেই বহরমপুর পুরসভা তার সংস্কার করেছিল। তবে, সাফাই কর্মীরা আবর্জনা তুলে নালার পাশেই এমন করে ফেলে রেখেছেন যে হাওয়ায় তা ফের গড়িয়ে পড়ছে সেই নালাতেই।
স্থানীয় বাসিন্দা মধু দাস বলছেন, ‘‘কী বলব বলুন, কাকে বারণ করব! বৃষ্টি হলে ওই আবর্জনা ফের গড়িয়ে যাবে নর্দমায়, দেকা ছাড়া উপায় কি!’’ প্লাস্টিক বোঝাই সেই নর্দমা হেলেদুলে ইন্দ্রপ্রস্থ, মধুপুর, বিষ্ণুপুর ছুঁয়ে এগিয়ে চলেছে, দিন কয়েক পরেই তা উপচে পড়বে রাস্তায়, পাড়ায়। তবে, সবই গা সওয়া হয়ে গিয়েছে বাসিন্দাদের। পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান জয়ন্ত প্রামাণিক আক্ষেপ করে বলছেন, ‘‘আসলে সবাই চায়, পরিষ্কার রাখতে, কিন্তু সে চাহিদায় নিজেরও যে কিছু অবদান থাকতে হয় তা কে বোঝাবে বলুন!’’
মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক জেলা সম্পাদক প্রদ্যোত সাহা জানাচ্ছেন, তাঁরা সংগঠনগত ভাবে সচেতনতা শিবির করেছেন, কিন্তু সে কথা শুনছে কে? ২৮ মাইক্রনের উপরে প্লাস্টিক দূষণ করে। পুরসভা যখন কড়াকড়ি করে, তখন বাজারগুলি দিন কয়েক সে নিয়ম মেনে চলার চেষ্টা করে। তার পর পুরনো অবস্থায় ফিরে য়ায়। তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘ভুলে যাবেন না, কেরলার ভয়ঙ্কর বন্যার মূল কারণ কিন্তু প্লাস্টিক দূষণ। যত্রতত্র প্লাস্টিক ফেলে নিকাশি নালা গুলি বুজে যাওয়ায় ফলেই জল এমন উপচে গিয়েছে। মানুষ ভুলে গিয়েছেন, ২০০০ সালের বিধ্বংসী বন্যার কথাও।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy