Advertisement
০২ এপ্রিল ২০২৩

সিরিয়াল ফেলে গিন্নিরাও মজে ‘গোয়েন্দা’ সুফিয়ায়

ভোটের হাওয়াকে হারিয়ে এখন গোয়েন্দা গল্প থাবা বসিয়েছে রানিনগরের। চায়ের দোকান থেকে মাচা, অফিস কাছারি এমনকী রান্না ঘরেও তরুণী গোয়েন্দা নিয়ে ব্যস্ত মায়ে-ঝিয়ে।

সুফিয়ার সেই কার্ড। —নিজস্ব চিত্র।

সুফিয়ার সেই কার্ড। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ডোমকল শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৬ ০১:১৭
Share: Save:

ভোটের হাওয়াকে হারিয়ে এখন গোয়েন্দা গল্প থাবা বসিয়েছে রানিনগরের। চায়ের দোকান থেকে মাচা, অফিস কাছারি এমনকী রান্না ঘরেও তরুণী গোয়েন্দা নিয়ে ব্যস্ত মায়ে-ঝিয়ে। কেউ বলছেন সিরিয়ালের গোয়েন্দাকেও হার মানাবে সীমান্তের এই ধন্যি মেয়ে। কিন্তু মুর্শিদাবাদের সীমান্তের গঞ্জ থেকে কী ভাবে উত্থান হল এই গোয়েন্দা চরিত্রের?

Advertisement

সহপাঠী থেকে প্রতিবেশী সকলেই বলছেন, কম বয়স থেকেই ওর আচরণ নিয়ে নানা আপত্তি ছিল এলাকার মানুষ থেকে বন্ধুদের মধ্যে। এলাকার নবীপুর সরলাবালা স্কুল থেকে ২০১২ সালে উচ্চ মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হয়েই ডোমকল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে বিবিএ। পরে বারাসাতে একটি কোচিং সেন্টারে স্পোকেন ইংলিশ শিখে ভিন্‌ দেশে পাড়ি দেওয়া।

পরিবার ও সুফিয়া সুলতানার দাবি অনুযায়ী, সিঙ্গাপুরের একটি কলেজে এমবিএ পড়ছে সে। যদিও তার ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছে সিঙ্গাপুর যাওয়ার পর ২ মাস পরেই ফিরে আসে সুফিয়া। আর তারপর থেকে অপরাধ জগতে হাত পাকানো শুরু তার।

পুলিশ ওই তরুণীকে পাঁচদিনের হেফাজতে পেয়ে বিষয়টি নিয়ে আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছে। ইতিমধ্যে তার ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন নিজেদের হেফাজতে নিয়ে বিশেষজ্ঞদের দিয়ে তা পরীক্ষার ব্যবস্থাও করছে। পুলিশের দাবি, সেখান থেকে এই মহিলার সঙ্গে কারা জড়িয়ে সেটা বোঝা যাবে। যদিও জিজ্ঞাসাবাদে খুব বেশি কিছু এখনও উঠে আসেনি বলেই দাবি তাঁদের। এ ছাড়াও গাড়ির চালক এবং এলাকার এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্তাকেও ডাকা হচ্ছে তদন্তের স্বার্থে।

Advertisement

এলাকার মানুষের দাবি, ওই ব্যাঙ্ক কর্তার সঙ্গে ‘খুব ভাল সম্পর্ক’ সুফিয়ার। জেলা পুলিশের একাংশের দাবি, এই তরুণীর মাধ্যমে কোনও আন্তঃদেশীয় বা আর্ন্তজাতিক অপরাধ জগতের হদিশ মিলতে পারে। বছর খানেকে তার কয়েকবার বিদেশ ভ্রমণের বিষয়টিও ভাবাচ্ছে পুলিশকে। পুলিশ তার যাবতীয় নথি ঘেঁটে তার প্রত্যেকটি পদক্ষেপ নজরে আনতে চাইছে। অন্য দিকে, তার পরিবার ছাড়াও এলাকার মানুষ পড়শি মেয়ের এই গোয়েন্দাগিরি নিয়ে হতবাক।

রানিনগরের সাগরিকা মণ্ডল (নাম পরিবর্তিত) লেখাপড়া থেকে খেলাধুলা এক সঙ্গে করেছে সুফিয়ার সঙ্গে। ছোট বেলা থেকে এক সঙ্গে বড় হলেও তার দাবি, ‘‘কলকাতায় পাড়ি দেওয়ার পরেই বদলে যায় সে। কথায় কথায় ইংরেজি বলা আর মোবাইল, ল্যাপটপ নিয়েই ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আমরা ভাবতাম উচ্চশিক্ষা নিতে গিয়ে পড়ার চাপেই হয়ত বদলে গিয়েছে ও। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে পড়ার চাপে নয়, ভুল পথে পা রেখেই বদলে গিয়েছিল সোমা (সুফিয়া সুলতানার ডাক নাম)।’’ আর প্রতিবেশি মহিলারা বলছেন, ‘‘এতদিন সিরিয়ালে মেয়েদের গোয়েন্দাগিরি করতে দেখতাম। ভাবতাম টিভিতেই এমনটা হয়। কিন্তু আমাদের পাড়ার মেয়ে যে এমন গোয়েন্দা হয়ে উঠবে ভাবতেও পারিনি।’’ সব মিলিয়ে ভোটের হাওয়াকে তুড়ি মেরে এখন রানিনগর গোয়েন্দা গল্পে বিভোর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.