E-Paper

বিশ্ববিদ্যালয়ে নামেই তালাবন্ধ ঘর, দাপট চলছে টিএমসিপি-র

দীর্ঘদিন ছাত্র সংগঠনের নির্বাচন বন্ধ থাকলেও কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় ও বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দাপটের ছবি স্পষ্ট।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৫ ০৭:২০
কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনের ঘরে তালা।

কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠনের ঘরে তালা। ছবি:সুদেব দাস।

জেলার দক্ষিণে কল্যাণী ও হরিণঘাটায় রয়েছে পৃথক দুটি বিশ্ববিদ্যালয়। কলেজগুলির পাশাপাশি দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ছাত্র সংগঠনের নির্বাচন হয়নি। তবে দুই ক্যাম্পাসেই রয়েছে ছাত্র সংগঠনের ঘর। যদিও শুক্রবারের মতো শনিবারও ওই ঘর তালাবন্ধ ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নয়, বরং সংগঠনের যাঁরা মাথা তাঁরাই ওই ঘরে তালা ঝুলিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, হাইকোর্টের নির্দেশের পরেও কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্র সংগঠনের ঘর বন্ধ রাখার বিষয়ে শনিবারও কোনও নির্দেশিকা জারি করলেন না কেন?

দীর্ঘদিন ছাত্র সংগঠনের নির্বাচন বন্ধ থাকলেও কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় ও বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দাপটের ছবি স্পষ্ট। শুধু দাপট নয়, ক্যাম্পাসে থাকা ছাত্র সংগঠনের ঘর যে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দখলেই রয়েছে, তারও প্রমাণ মিলেছে। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৪ নম্বর ঘরটি ছাত্র সংগঠনের। ওই ঘরের বাইরে রয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যের ছবি। সঙ্গে রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি। আবার বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোহনপুর ক্যাম্পাসে ঢুকলেই চোখে পড়বে একুশে জুলাই সমাবেশ সফল করার ডাক দিয়ে একটি ফ্লেক্স। তার নীচে লেখা রয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ বিসিকেভি ইউনিট। যদিও সেখানকার গ্রন্থাগার ভবনের নীচের তলায় একটি ঘর ছাত্র সংগঠনের থাকলেও, দীর্ঘদিন ধরে সেটি বন্ধ রয়েছে।

প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে বছরের পর বছর ছাত্র সংগঠনের নির্বাচন হয়নি। সেখানে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এত বাড়বাড়ন্ত কী ভাবে? বছরের পর বছর নির্বাচন ছাড়াই নির্দিষ্ট একটি ছাত্র সংগঠনের দখলে কেন থাকবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে থাকা ছাত্র সংগঠনের ঘর? এসএফআইয়ের নদিয়া জেলা সম্পাদক শৌর্য‍্যবন্ত চৌধুরী বলেন, ‘‘অনৈতিক ও অগণতান্ত্রিক ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজগুলিতে ছাত্র সংগঠনের ঘর দখল করে রেখেছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি আগেও জানিয়েছিলাম। কিন্তু ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আদালতের এই রায়, আমাদের আন্দোলনের জয়।"

কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র পরিষদের সভাপতি আশিস ঘোষ বলেন, "বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা ছাত্র-ছাত্রীদের সাহায্য করার জন্যই একটি ঘরের প্রয়োজন। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ও ছাত্র সংসদ এক নয়। নির্বাচন না হলেও, সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে আমাদের ইউনিট রয়েছে।" বর্তমানে ওই ঘর বন্ধ কেন? আশিসের যুক্তি, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কোনও নির্দেশে নয়। আদালত একটি নির্দেশ দিয়েছে। তা ছাড়া এখন পরীক্ষা চলছে, তাই ওই ঘর বন্ধ রাখা হয়েছে।’’ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে ছাত্র সংগঠনের ঘর বন্ধ রাখার কথা বলা হলেও, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে শনিবার পর্যন্ত এমন নির্দেশিকা জারি হল না কেন?

রেজিস্ট্রার দেবাংশু রায় বলেন, "আমরা ছাত্র সংসদের ঘর বন্ধ করিনি। এ বিষয়ে আগামী সোমবার যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেব। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় মনে হয় অনেক আগেই ছাত্র সংসদের ঘর বন্ধ করেছিল।" আর বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অশোককুমার পাত্রকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন তোলেননি। মোবাইল বার্তারও জবাব মেলেনি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Kalyani

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy