Advertisement
১৪ জুন ২০২৪

পার্লামেন্টে আয়, সেলফি তুলব

ডোমকলের সেই মণ্ডপ। —নিজস্ব চিত্র

ডোমকলের সেই মণ্ডপ। —নিজস্ব চিত্র

সুজাউদ্দিন়
ডোমকল শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৬ ০২:১৬
Share: Save:

ক’দিন ধরেই মোবাইল নেটওয়ার্কে বড্ড সমস্যা। কথা বলার মাঝেই বার বার কেটে যাচ্ছে ফোন। কখনও আবার, ও পাশ থেকে স্পষ্ট হ্যালোর জবাবে এ পারের উত্তর আবছা অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে!

ছেলেটি ফোনের এ প্রান্ত থেকে চিৎকার করে যাচ্ছেন—‘শুনতে পাচ্ছিস? হ্যাঁ, ডোমকলে। অ্যাঁ? হ্যাঁ, মোটরবাইক সঙ্গে আছে। পার্লামেন্টের সামনে চলে আয়।’

ওই ‘আবছা-অস্পষ্টদতা’র মাঝেই একটা শব্দ স্পষ্ট হয়ে উঠতেই বাকিটুকু দিনের আলোর মতো হয়ে উঠল— পার্লামেন্ট! হ্যাঁ, ডোমকলের পার্লামেন্ট ঠিক এতটাই পরিচিতি পেয়ে গিয়েছে।

তা দিল্লি থেকে সে উঠেই বা এল কবে? চোখ ধাঁধিয়ে দেওয়ার মতোই অবস্থা। দিল্লির পার্লামেন্টের আদলেই এ বারে দুর্গা পুজোর মণ্ডপ তৈরি করেছে ডোমকল স্পোর্টিং ক্লাব। ডোমকল জনকল্যাণ ময়দানে সেই মণ্ডপ দেখতে ভিড়ও উপচে পড়ছে দেদার। উদ্যোক্তাদের দাবি, পার্লামেন্ট ভবনের পাশাপাশি সেখানকার বাগান, আলো, রাস্তা সবই সাজানো নিখুঁত ভাবে। আর প্রান্তিক এই জনপদে ‘পার্লামেন্ট’ নিয়ে জল্পনারও অন্ত নেই। কেউ বলছেন, ‘‘ভিড় হওয়ার আগেই সেলফি তুলে নিতে হবে।’’ কেউ বলছেন, ‘‘দিল্লি তো আর যাওয়া হল না, ডোমকলে বসেই দিল্লি দেখব!’’ এই ক’দিনে জনকল্যাণ ময়দান আর কেউ বলছেন না। কেউ জানতে চাইলেই বলছেন, ‘‘এই তো পার্লামেন্টের সামনে আছি।’’ কেউ বলছেন, ‘‘পার্লামেন্টের পিছনের রাস্তা দিয়ে চলে আয়, আড্ডা দেব।’’ আদতে ডোমকলই যেন এখন পার্লামেন্ট। দূরের শহর থেকে ডোমকলে আসা মানেও পার্লামেন্টে যাওয়া!

একটা সময় সাবেক মণ্ডপ তৈরি করেই ডোমকলের প্রাণকেন্দ্রে শুরু হয়েছিল ২৪ পল্লির এই পুজো। এলাকার লোকজনের দাবি, ৩৩ বছর আগে এই পুজো শুরু হয়। তারপরে পুজোর দায়িত্ব নিয়েছেন অনেকেই। এখন যেমন পুজোর দায়িত্বে ডোমকল স্পোর্টিং ক্লাবের। তারা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই শুরু হয় থিমের পুজো। অতীতে টাইটানিক, সোনার কেল্লা, মনোরেল কিংবা ভিক্টোরিয়ার পরে এ বার পার্লামেন্ট।

তবে তার খরচও ঢের, পার্লামেন্টের আদলে মণ্ডপ তৈরি করতে খরচ হয়েছে ৬ লক্ষ টাকা।ক্লাবের সম্পাদক দেবাংশু সরকার বলেন, ‘‘বেশ কয়েক বছর থেকে আমরা থিমের পুজো করছি। তার পর থেকে আমাদের পুজো দেখতে ভিড়ও বেড়েছে। ফলে মানুষের চাহিদার কথা ভেবে আমরা চেষ্টা করি একটা চমক দিতে।’’ পুজো কমিটির অন্যতম সদস্য সঞ্জয় দাস বলেন, ‘‘এটা আমাদের সবার পুজো। এলাকার সব সম্প্রদায়ের মানুষ সাহায্য ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন।’’

ডোমকলের মনসুর আলি যেমন বলছেন, ‘‘এই সময়টার জন্য অপেক্ষায় থাকি। প্রতি বছরই পুজোতে নতুন কিছু থাকে। তাছাড়া এই পুজোকে ঘিরে মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও বড় পাওনা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

parliament
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE