Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

পার্থর ধমকে মিষ্টিমুখে ‘ঝাল’ লাগল নেতাদের

সোমবার, কল্যাণীর বিদ্যাসাগর মঞ্চে দীপাব‌লির শুভেচ্ছা শেষ হতেই তৃণমূলের নদিয়া জেলা পর্যবেক্ষক তথা দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, সামনে পঞ্চায়েত ভোট, আকচা-আকচি এ বার বন্ধ করা দরকার।

মনিরুল শেখ
কল্যাণী শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৭ ০০:১২
Share: Save:

বিজয়া সম্মিলনীর হাসিমুখ সৌজন্যটুকুই যা মিষ্টিমুখ, বাকিটা দলীয় দ্বন্দ্বের গনগনে আঁচে দোষারোপ আর প্লাটা কাদা ছোড়াছুড়ি ও মেজাজ হারানো দলের জেলা পর্যবেক্ষকের ধমকের ঝাল। সেই সঙ্গে দলত্যাগী মুকুল রায়ের নাম না করেও তিনি মনে করিয়ে দিলেন, ‘‘ছোবল মেরে দলকে দুর্বল করার চেষ্টা করলে ফল পেতে হবে হাতেনাতে‍!’’

সোমবার, কল্যাণীর বিদ্যাসাগর মঞ্চে দীপাব‌লির শুভেচ্ছা শেষ হতেই তৃণমূলের নদিয়া জেলা পর্যবেক্ষক তথা দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, সামনে পঞ্চায়েত ভোট, আকচা-আকচি এ বার বন্ধ করা দরকার। কিন্তু তাঁর কথা শেষ হওয়ার আগেই চাকদহ পুরসভার চেয়ারম্যান দীপক চক্রবতী উগরে দিলেন এলাকার বিধায়ক রত্না ঘোষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ। তিনি জানালেন, দলত্যাগী সিপিএমের লোকেরাই দলে বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে অথচ পুরনো তৃণমূলের কর্মীরা এত দিন লড়াই করেও প্রায় ব্রাত্য এমনকী বিপন্নও। ক্ষুব্ধ পার্থকে বলতে শোনা যায়, ‘‘এক সপ্তাহের মধ্যে দীপক এবং রত্না বিবাদটা, সাংসদ তাপস মণ্ডল ও উজ্জ্বল বিশ্বাস মিলে মিটিয়ে ফেলুন। কী সিদ্ধান্ত হল আমাকে জানান।”

দীপক পর্ব শেষ হতে এসে পড়ল, পলাশিপাড়ার বিধায়ক তাপস সাহা ও স্থানীয় নেতা বিশ্বনাথ ঘোষের ঝগড়া। পার্থকে ফের জানাতে হল, বিশ্বনাথের বিধায়ক হওয়ার ইচ্ছা ছিল। দল তাপস সাহাকে টিকিট দিয়েছিল। এ নিয়ে বিবাদ দল বরদাস্ত করবে না। নিজেই জানালেন, কল্যাণীর বিধায়ক রমেন্দ্রনাথ বিশ্বাসকে নিয়ে দল স্বস্তিতে নেই। বললেন, “গয়েশপুরে কী হচ্ছে, তা আমার জানা আছে। গয়েশপুরের সভাপতির বিরুদ্ধে এক সপ্তাহের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে হবে।” বড় সময় খরচ হল দলের নিচুত‌লার কর্মীদের ক্ষোভ সামা‌ল দিতে। দলের জে‌লা সভাপতি উজ্জল বিশ্বাস মাইক ধরে প্রথমেই উপস্থিত ব্লক ও টাউন সভাপতি ও পুর এবং পঞ্চায়েত স্তরের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কারও কিছু বলার আছে কিনা জানতে চান। কিন্তু তাঁদের উপস্থিতির হার দেখেও ক্ষোভ আড়াল করতে পারেননি মহাসচিব। চটে গিয়ে পার্থকে বলতে শোনা যায়, কত জন ব্লক সভাপতি ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিরা এসেছেন তা দেখতে হবে।

বর্ধিত কর্মী সম্মেলন ক্রমেই বকা-ঝকার সেশন-এর চেহারা নেওয়ায় ব্লক এবং জেলার নিচুতলার কর্মীদের অনেককেই বকুনি মাথায় নিয়েই শেষতক ফিরলেন। তাঁদেরই এক জন বলছেন, ‘‘ভেবেছিলাম, এই এলাকার নানা সমস্যার কথা আর বিজেপির আগ্রাসনের কথা বলব, কিন্তু সুযোগ হল কোথায়!’’ পরে এ দিন পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলা সভাপতি উজ্জ্বল বিশ্বাস শেষতক বলতে হল, ‘‘উনি (পার্থ) যা যা পরামর্শ দিয়ে গিয়েছেন, সেই পথেই আমাদের হাঁটতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Partha Chatterjee TMC TMC workers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE