Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

নাবালিকার বিয়ে আটকে দিল যোদ্ধারা

খবর পেয়ে শনিবার দুপুরে তাদের বাড়িতে হাজির হয় কন্যাশ্রীযোদ্ধারা। বাড়ির লোকেরা প্রথমে মানতেই চাননি যে নাবালিকা মেয়ের বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বরং মেয়েগুলো শুধু-শুধু তাঁদের হেনস্থা করতে এসেছে বলে দাবি করতে থাকেন তাঁরা।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
রেজিনগর শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৭ ০১:২৪
Share: Save:

গোপনে বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছিল বছর পনেরোর মেয়েটির। রেজিনগরের রামপাড়ার মেয়ে, পাত্র নবগ্রামের দফরপুরের বছর সাতাশের যুবক। আগামী ২৭ আষাঢ় বিয়ের দিন ঠিক হয়েছিল।

খবর পেয়ে শনিবার দুপুরে তাদের বাড়িতে হাজির হয় কন্যাশ্রীযোদ্ধারা। বাড়ির লোকেরা প্রথমে মানতেই চাননি যে নাবালিকা মেয়ের বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বরং মেয়েগুলো শুধু-শুধু তাঁদের হেনস্থা করতে এসেছে বলে দাবি করতে থাকেন তাঁরা।

বেলডাঙা ২ ব্লক প্রশাসন আর রেজিনগর থানাকে খবর দিয়েই গিয়েছিল মেয়েরা। নাবালিকার বাড়ির লোক মানছেন না শুনেই পুলিশ চলে আসে। সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যেরাও। তার পরেও বিয়ের প্রস্তুতির কথা গোপন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন মেয়ের বাবা-মা। পুলিশ বলে, তাঁদের কথা সত্যি ধরে নিয়ে তারা ফিরে যাচ্ছি। কিন্তু পরে যদি তারা খবর পায় যে নাবালিকা মেয়ের বিয়ে হচ্ছে, তখন আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর পরেই মেয়ের বাবা-মা পিছু হটেন। মেয়ের বিয়ে ঠিক করার কথা স্বীকার করে নেন তাঁরা। বলেন, গরিব সংসারে চার মেয়ে। এখনই এক-এক জন করে বিয়ে দিতে শুরু না করলে চোখ বোজার আগে সকলের বিয়ে দিতে পারবেন কি না, সেই দুশ্চিন্তায় ভোগেন। তাই বিনা পণে পাত্র পেয়ে বিয়ে ঠিক করেছিলেন। মেয়ের বাবা দিনমজুরি করেন। সকলে মিলে তাঁকে বোঝানোর পরে তিনি বলেন, ‘‘নাবালিকার বিয়ের খারাপ দিকের কথা না জেনেই আমরা বিয়ে দিচ্ছিলাম। কিন্তু এখন জেনেছি। আর ভুল হবে না।’’

যে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার লোকজন এ দিন মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে তার অভিভাবকদের বোঝান, সেটির তরফে তপন হাজরা বলেন, ‘‘প্রথমে কন্যাশ্রী যোদ্ধারা বোঝালেও ওঁরা তাতে কান দিচ্ছিলেন না। পরে পুলিশ এবং আমরা গিয়ে বোঝানোয় কাজ হয়। মেয়ের মা লিখিত ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, ১৮ বছর বয়স না হলে মেয়ের বিয়ে দেবেন না।’’

পনেরো বছরের মেয়েটি রামপাড়া মাঙ্গনপাড়া হাইস্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ে। সে বলে, ‘‘আমাদের সংসারে খুব টানাটানি। একা বাবার রোজগার। চার বোনের মধ্যে আমি বড়। তাই বিয়ের কথায় রাজি হয়ে গিয়েছিলাম। তবে তা যখন হচ্ছে না, আমি পড়তে চাই। সামনের বছর মাধ্যমিকে ভাল ফল করার চেষ্টা করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE