Advertisement
E-Paper

প্লাস্টিকে পথ-হারা নিকাশি

আকাশে মাঝে মধ্যে কালো মেঘের আনাগোনা। ব্যস, ওই পর্যন্তই। বর্ষা কবে আসবে, তার নিশ্চয়তা নেই। সে সুদূর কথা। জল থই থই নতুন বাজারের রাস্তা দেখলে কে বলবে, বর্ষা আসেনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৬ ০১:১০
প্লাস্টিকে মজেছে নিকাশি নালা। — নিজস্ব চিত্র

প্লাস্টিকে মজেছে নিকাশি নালা। — নিজস্ব চিত্র

আকাশে মাঝে মধ্যে কালো মেঘের আনাগোনা। ব্যস, ওই পর্যন্তই। বর্ষা কবে আসবে, তার নিশ্চয়তা নেই।

সে সুদূর কথা। জল থই থই নতুন বাজারের রাস্তা দেখলে কে বলবে, বর্ষা আসেনি। বৃষ্টি হোক না হোক, নর্দমার জলের রাস্তায় উঠে আসা কৃষ্ণনগর শহরের বেশ কিছু এলাকার রোজনামচা।

কারণ আর কিছুই নয়, নিত্যদিনের চলার সঙ্গী হিসেবে আমরা যাকে আপন করে নিয়েছি, সেই প্লাস্টিক। চিপস-লজেন্সের প্যাকেট থেকে ক্যারি ব্যাগ—সবেই প্লাস্টিক।

সেই প্লাস্টিক সটান এসে হাজির বন্ধ করে দিচ্ছে নিকাশি নালা। আর এক বার জমা হলে তা আর নড়ার নাম করে না। নড়বেই বা কী করে? অভিযোগ, নিয়মিত পরিষ্কারই হয় না নালা। ফলে, নিকাশি নালাতেই ঠোক্কর খাচ্ছে শহরের স্বাভাবিক জনজীবন।

আম নাগরিক পুরসভার দিকে আঙুল তুললেও শহরের সচেতন মানুষদের একটি বিরাট অংশ তোপ দেগেছেন সাধারণ মানুষদের দিকেই— বিন্দুমাত্র সচেতনতা নেই তাঁদের। ডাস্টবিন থাকলেও পাইকারি হারে প্লাস্টিক ফেলা হচ্ছে নিকাশি নালায়। কৃষ্ণনগর শহরের রাজারোড থেকে শুরু করে বৌবাজার, মঙ্গলাপাড়া, পল্লিশ্রী, অরবিন্দ রোড, নগেন্দ্রনগর,শরৎ সরনী, বৈষ্ণবপাড়া, নতুন বাজার, রায়পাড়া, রায়পাড়া- মালোপাড়া— চেহারা সর্বত্রই এক।

কৃষ্ণনগর পুরসভার চেয়ারম্যান অসীমকুমার সাহা বলেন, “মানুষ যাতে নোংরা আবর্জনা নালায় নালায় না ফেলে নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলেন, সে বিষয়ে পুরসভার পক্ষ থেকে প্রচার কী কম হয়েছে, তা সত্ত্বেও শহরের বহু বাসিন্দা এখনও অভ্যাস বদলাতে পারেননি।’’ তিনি জানিয়েছেন, পাড়ার ছোট নিকাশিনালা রোজ পরিষ্কার করা হয়। কিন্তু, বড় নিকাশিনালা বর্ষার আগে একবার এবং বর্ষার পরে আর একবার পরিষ্কার করা হয়। নজরদারি চালানোর মত লোকবল পুরসভার নেই। তিনি মনে করেন, এ ভাবে মানুষকে সচেতন করা যায় না।

কৃষ্ণনগর শহরের হুগলিতলা থেকে বেলেডাঙ্গা মোড়, রাজারোডের দু’ধার, মঙ্গলাপাড়া শরৎসরণী, বৌবাজার, রায়পাড়া, নগেন্দ্রনগর, পল্লিশ্রী, চৌধুরিপাড়া সর্বত্রই নিকাশিনালায় প্লাস্টিকের সামগ্রী থেকে শুরু করে ক্যারিব্যাগ, নরম পানীয়ের বোতল, থার্মোকলের থালা নিকাশী নালায় পড়ে জলের গতি রোধ করেছে।

শুধু তাই নয়, শহরের নিকাশির ভার অনেকটাই দীর্ঘদিন ধরেই বহন করছে যে অঞ্জনা খাল, তাও এখন মজা খাল। ফলে অনেক এলাকায় ছোট ছোট নালায় নোংরা জল বেরনোর পথ নেই। বৈষ্ণবপাড়া এলাকার বাবন দাস বলেন, ‘‘নিকাশিনালা নিয়মিত পরিষ্কার হয় না। যার ফলে নর্দমা মজে গিয়ে দূর্গন্ধ ছড়ায়। ফলে, মশা-মাছির উপদ্রব হয়। নর্দমার জল উপচে রাস্তায় চলে আসে। যার ফলে নোংরা জল ঠেলে যাতয়াত করতে হয়।’’ কৃষ্ণনগর শহরের নতুন বাজারের ব্যবসায়ি সুদেব পাল, বলাই পাল বলেন, “শীতকালেই নর্দমার নোংরা জল উপচে বেরিয়ে আসে। বর্ষাকালে তো নিকাশিনালার জল বাজারের ভেতরে ঢুকে পড়ে।’’ তাঁরা জানিয়েছেন, বাজারে আসা সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়েন।

তবে এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন শহরের শরৎপল্লি ব্যবসায়ী অরূপ সরকার। তিনি মনে করেন, শুধু পুরসভার উপর দোষারোপ করলেই হবে না। অনেকেই বাড়ির নোংরা আবর্জনা ডাস্টবিনে না ফেলে নিকাশিনালায় ফেলে দিচ্ছে। যার ফলে নিকাশিনালা মজে যাচ্ছে।

ঘুর্নির এক মহিীলা জানান, শহরের অন্যান্য এলাকায় বাঁশি বাজিয়ে নোংরা নেওয়ার জন্য গাড়ি এলেও তাঁদের এলাকায় আসে না। ফলে, ফাঁকা জায়গায় নোংরা আবর্জনা ফেলতে হয়। সেই আবর্জনা অনেক সময় কুকুরে টেনে নিয়ে গিয়ে নিকাশী নালায় ফেলছে। এলাকায় একটি ডাস্টবিনের ব্যবস্থা করলে এ সমস্যা হত না।

Plastic Drainage system
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy